ঢাকা ০৯:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু

আলোচনায় হেফাজতের মামুনুল হকের আফগানিস্তান সফর

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 223

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মামুনুল হক।

অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই কিংবা কিছু এলাকায় ইন্টারনেট নিষিদ্ধের খবর যখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম, তখন বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক—তার কাবুল সফর ঘিরে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বুধবার আফগানিস্তানে পৌঁছেছেন বলে দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তালেবান সরকারের আমন্ত্রণে এ সফর হচ্ছে। মামুনুল হকরা তালেবান সরকারের প্রধান বিচারপতি, একাধিক মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করবেন। বিশেষভাবে মানবাধিকার ও নারী অধিকার নিয়ে পশ্চিমা মহলে যে সমালোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে বাস্তব অবস্থা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করাই সফরের উদ্দেশ্য।

এই সফরের কারণ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “সেখানে আসলে নারী অধিকার লুণ্ঠন বা হরণ হচ্ছে কি না, এটা বাস্তবে দেখলো তারা। অনেক সময় হয় না যে একটা বিষয়ে বিভ্রাট ধারণা থাকে, একটা শ্রেণির লোক তো এই বিষয়টা প্রচার করে যে নারীর অধিকার নারীকে ঘরে আটকায়া রাখে, এই বিষয়টা তারা জানলো আসলে বিষয়টা সত্য কি না?”

ইসলামী ঐক্যজোট গঠনের উদ্যোক্তা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের (প্রয়াত) ছেলে মামুনুল হক খেলাফত মজলিসের আমিরের পাশাপাশি হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

তার কাবুল সফরের দুদিন পরই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আসে খবর—আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করেছে তালেবান।

চার বছর আগে ক্ষমতায় ফেরার পর কট্টর ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত করেছে, যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নারী অধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

এর মধ্যে মামুনুল হকের সফরকে ঘিরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কারণ তালেবান আমলে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার আফগানিস্তান সফরের নজির নেই।

বিশ্বের প্রায় সব দেশ তালেবান সরকারকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি, শুধু রাশিয়া ব্যতিক্রম। তবে অর্থনৈতিক লেনদেন করছে বেশ কিছু দেশ।

আফগানিস্তানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই; উজবেকিস্তানের দূতাবাস থেকেই দায়িত্ব পালন করা হয়। তবে ঢাকায় আফগান দূতাবাস রয়েছে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন বলেন, মামুনুল হক এই সফরে গেছেন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, বরং আলেম সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ওনার তো দুইটা পরিচয়। একদিকে তিনি আলেম, ইসলামিক স্কলার, আরেকদিকে উনি দলের প্রধান। এই হিসেবেই আমাদের অফিস থেকে ওনার এই মেসেজটা সবাইকে জানানো হয়েছে। সফরটা কোনও দলীয় উদ্যোগে নয়। রাজনীতি করেন না, এমন লোকও আছেন। বাংলাদেশের আলেম সমাজের পক্ষ থেকে একটা প্রতিনিধি দল সম্পর্কোন্নয়নের জন্য গেছেন।”

মামুনুল হকের সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন হেফাজতের নায়েবে আমির আব্দুল হামিদ (মধুপুরের পীর), নায়েবে আমির আব্দুল আউয়াল, ময়মনসিংহ বড় মসজিদের খতিব আব্দুল হক, বারিধারা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, জমিয়তের নেতা মনির হোসাইন কাসেমী এবং ময়মনসিংহের আলেম মাহবুবুর রহমান।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিনিধি দলটি ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব যান। পরে ওমরাহ শেষে দুবাই হয়ে তারা কাবুলে পৌঁছান বলে জানিয়েছে খেলাফত মজলিস।

জালালুদ্দীন জানান, ২০০১ সালেও বাংলাদেশের আলেম সমাজের একটি প্রতিনিধি দল আফগানিস্তান সফর করেছিল। তবে তখনকার সেই দলের কেউ আজ আর বেঁচে নেই।

তখন আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ছিলেন মোল্লা ওমর। ১৯৯৬ সালে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখল করে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর অভিযানে তারা ক্ষমতা হারায়। এরপর ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ফের কাবুল দখল করে সরকার গঠন করে তালেবান।

১৯৯৭ সালে বিচিত্রাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মামুনুল হকের বাবা আজিজুল হক বলেছিলেন, আফগান তালেবানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে এবং চাইলে তিনি বাংলাদেশ থেকে যোদ্ধা পাঠাতেও রাজি।

সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। অথচ আজিজুল হক সে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

তালেবানের সঙ্গে খেলাফত মজলিসের কোনো সম্পর্ক আছে কি না—এই প্রশ্নে জালালুদ্দীন বলেন, “এই পর্যন্ত কারও সাথে কোনোদিন দেখাও হয় নাই, যোগাযোগও হয় নাই, কথাও হয় নাই।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ইসলামি শাসনের ধরণ বোঝার জন্যই মামুনুল হকরা এ সফরে গেছেন।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তারা হয়তে একটা ওয়ে আউট দেখতে চাচ্ছে যে ইসলামি শাসনের মডেলটা কী? সেই মডেলটা হয়তে তারা বাংলাদেশে কাজে লাগাইতে চাইতে পারে … আমি যতদূর বুঝি।”

তবে এ ধারণা নাকচ করে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন বলেন, যদি কোনো দেশে কুরআন ও সুন্নাহ বা শরিয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র থাকে, তখন সেখানে শরিয়াহ আইন কার্যকর হয়। বাংলাদেশে যেহেতু ইসলামি সরকার নেই, সেহেতু এর বাস্তবায়নের সুযোগও নেই।

আল্লামা আজিজুল হকের পাঁচ ছেলে ও আট মেয়ের মধ্যে মামুনুল হকই রাজনীতিতে সক্রিয়।

নারী শিক্ষার ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায় দ্বিতীয় মেয়ে লুৎফুন্নেছা বিনতে শায়খুল হাদিসের এক সাক্ষাৎকার থেকে।

২০১৯ সালে আল্লামা আজিজুল হক প্রতিষ্ঠিত মাসিক রাহমানি পায়গাম-এ প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে লুৎফুন্নেছা বলেছিলেন, পাকিস্তান আমলে তারা দুই বোন স্কুলে পড়েছিলেন, তবে ছোট বোনদের কেউ আর স্কুলে যেতে পারেননি।

“আমরা বড় দুই বোন শুধু স্কুলে পড়েছি। আমাদের পরে আর কাউকে আব্বা স্কুলে দেন নাই। আব্বা তখন আমাদের স্কুলে দিলেও দিনের শুরুতেই স্কুলে পড়তে যাওয়া আব্বা পছন্দ করতেন না। আব্বা চাইতেন দিন শুরু হবে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। এজন্য ফজরের সময় আমাদের উঠিয়ে লালবাগ মাদরাসায় নিয়ে যেতেন।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আলোচনায় হেফাজতের মামুনুল হকের আফগানিস্তান সফর

আপডেট সময় : ০৬:৩৬:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই কিংবা কিছু এলাকায় ইন্টারনেট নিষিদ্ধের খবর যখন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম, তখন বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক—তার কাবুল সফর ঘিরে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে বুধবার আফগানিস্তানে পৌঁছেছেন বলে দলটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তালেবান সরকারের আমন্ত্রণে এ সফর হচ্ছে। মামুনুল হকরা তালেবান সরকারের প্রধান বিচারপতি, একাধিক মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করবেন। বিশেষভাবে মানবাধিকার ও নারী অধিকার নিয়ে পশ্চিমা মহলে যে সমালোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে বাস্তব অবস্থা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করাই সফরের উদ্দেশ্য।

এই সফরের কারণ নিয়ে বিবিসি বাংলাকে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, “সেখানে আসলে নারী অধিকার লুণ্ঠন বা হরণ হচ্ছে কি না, এটা বাস্তবে দেখলো তারা। অনেক সময় হয় না যে একটা বিষয়ে বিভ্রাট ধারণা থাকে, একটা শ্রেণির লোক তো এই বিষয়টা প্রচার করে যে নারীর অধিকার নারীকে ঘরে আটকায়া রাখে, এই বিষয়টা তারা জানলো আসলে বিষয়টা সত্য কি না?”

ইসলামী ঐক্যজোট গঠনের উদ্যোক্তা শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের (প্রয়াত) ছেলে মামুনুল হক খেলাফত মজলিসের আমিরের পাশাপাশি হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

তার কাবুল সফরের দুদিন পরই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আসে খবর—আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের লেখা বই নিষিদ্ধ করেছে তালেবান।

চার বছর আগে ক্ষমতায় ফেরার পর কট্টর ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ ক্রমেই সংকুচিত করেছে, যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নারী অধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

এর মধ্যে মামুনুল হকের সফরকে ঘিরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। কারণ তালেবান আমলে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার আফগানিস্তান সফরের নজির নেই।

বিশ্বের প্রায় সব দেশ তালেবান সরকারকে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি, শুধু রাশিয়া ব্যতিক্রম। তবে অর্থনৈতিক লেনদেন করছে বেশ কিছু দেশ।

আফগানিস্তানে বাংলাদেশের কোনো দূতাবাস নেই; উজবেকিস্তানের দূতাবাস থেকেই দায়িত্ব পালন করা হয়। তবে ঢাকায় আফগান দূতাবাস রয়েছে।

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন বলেন, মামুনুল হক এই সফরে গেছেন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে নয়, বরং আলেম সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ওনার তো দুইটা পরিচয়। একদিকে তিনি আলেম, ইসলামিক স্কলার, আরেকদিকে উনি দলের প্রধান। এই হিসেবেই আমাদের অফিস থেকে ওনার এই মেসেজটা সবাইকে জানানো হয়েছে। সফরটা কোনও দলীয় উদ্যোগে নয়। রাজনীতি করেন না, এমন লোকও আছেন। বাংলাদেশের আলেম সমাজের পক্ষ থেকে একটা প্রতিনিধি দল সম্পর্কোন্নয়নের জন্য গেছেন।”

মামুনুল হকের সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন হেফাজতের নায়েবে আমির আব্দুল হামিদ (মধুপুরের পীর), নায়েবে আমির আব্দুল আউয়াল, ময়মনসিংহ বড় মসজিদের খতিব আব্দুল হক, বারিধারা মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, জমিয়তের নেতা মনির হোসাইন কাসেমী এবং ময়মনসিংহের আলেম মাহবুবুর রহমান।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রতিনিধি দলটি ওমরাহ পালনের উদ্দেশে সৌদি আরব যান। পরে ওমরাহ শেষে দুবাই হয়ে তারা কাবুলে পৌঁছান বলে জানিয়েছে খেলাফত মজলিস।

জালালুদ্দীন জানান, ২০০১ সালেও বাংলাদেশের আলেম সমাজের একটি প্রতিনিধি দল আফগানিস্তান সফর করেছিল। তবে তখনকার সেই দলের কেউ আজ আর বেঁচে নেই।

তখন আফগানিস্তানে ক্ষমতায় ছিলেন মোল্লা ওমর। ১৯৯৬ সালে তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখল করে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনীর অভিযানে তারা ক্ষমতা হারায়। এরপর ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর ফের কাবুল দখল করে সরকার গঠন করে তালেবান।

১৯৯৭ সালে বিচিত্রাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মামুনুল হকের বাবা আজিজুল হক বলেছিলেন, আফগান তালেবানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে এবং চাইলে তিনি বাংলাদেশ থেকে যোদ্ধা পাঠাতেও রাজি।

সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। অথচ আজিজুল হক সে আহ্বান জানিয়েছিলেন।

তালেবানের সঙ্গে খেলাফত মজলিসের কোনো সম্পর্ক আছে কি না—এই প্রশ্নে জালালুদ্দীন বলেন, “এই পর্যন্ত কারও সাথে কোনোদিন দেখাও হয় নাই, যোগাযোগও হয় নাই, কথাও হয় নাই।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ মনে করেন, ইসলামি শাসনের ধরণ বোঝার জন্যই মামুনুল হকরা এ সফরে গেছেন।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তারা হয়তে একটা ওয়ে আউট দেখতে চাচ্ছে যে ইসলামি শাসনের মডেলটা কী? সেই মডেলটা হয়তে তারা বাংলাদেশে কাজে লাগাইতে চাইতে পারে … আমি যতদূর বুঝি।”

তবে এ ধারণা নাকচ করে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন বলেন, যদি কোনো দেশে কুরআন ও সুন্নাহ বা শরিয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র থাকে, তখন সেখানে শরিয়াহ আইন কার্যকর হয়। বাংলাদেশে যেহেতু ইসলামি সরকার নেই, সেহেতু এর বাস্তবায়নের সুযোগও নেই।

আল্লামা আজিজুল হকের পাঁচ ছেলে ও আট মেয়ের মধ্যে মামুনুল হকই রাজনীতিতে সক্রিয়।

নারী শিক্ষার ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায় দ্বিতীয় মেয়ে লুৎফুন্নেছা বিনতে শায়খুল হাদিসের এক সাক্ষাৎকার থেকে।

২০১৯ সালে আল্লামা আজিজুল হক প্রতিষ্ঠিত মাসিক রাহমানি পায়গাম-এ প্রকাশিত সেই সাক্ষাৎকারে লুৎফুন্নেছা বলেছিলেন, পাকিস্তান আমলে তারা দুই বোন স্কুলে পড়েছিলেন, তবে ছোট বোনদের কেউ আর স্কুলে যেতে পারেননি।

“আমরা বড় দুই বোন শুধু স্কুলে পড়েছি। আমাদের পরে আর কাউকে আব্বা স্কুলে দেন নাই। আব্বা তখন আমাদের স্কুলে দিলেও দিনের শুরুতেই স্কুলে পড়তে যাওয়া আব্বা পছন্দ করতেন না। আব্বা চাইতেন দিন শুরু হবে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে। এজন্য ফজরের সময় আমাদের উঠিয়ে লালবাগ মাদরাসায় নিয়ে যেতেন।”