এবার তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের হাজারো কর্মীর মিছিল কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও পাঁচ দিনের ব্যবধানে রাজধানীতে আবার মিছিল করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টার দিকে তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী নাবিস্কো থেকে তিব্বত এলাকার দিকে অগ্রসর হয়।
মিছিল বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি মো. আসলাম হোসেন বলেন, “সকালে জিএমি মোড় থেকে কিছু লোকজন বের হয়েছিল, আমরা মিছিল করতে দিই নাই। তখন তেজগাঁও কলেজের ছাত্রলীগের নিয়ামুল হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। আর দুপুরে আওয়ামী লীগের লোকজন নাবিস্কো থেকে আবারও বের হয়েছে, আমরা তাদের ধরছি।”
তিব্বত মোড়ে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “হঠাৎ দেখি হাজার হাজার লোকজন শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা, জয়বাংলা স্লোগান দিতে দিতে তিব্বতের দিকে এগিয়ে আসছে। দুপুর ২টার দিকে আওয়ামী লীগ প্রায় দু’হাজার লোক নিয়ে মিছিল করেছে।”
তিনি জানান, বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন— ‘শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনা’; ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশে হাসবে’; ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’; ‘হটাও ইউনূস, বাঁচাও দেশ’।
পাঁচ দিনের ব্যবধানে রাজধানীতে ফের আওয়ামী লীগের মিছিল হলো।
মিছিলে অংশ নেওয়া এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “ঘরে বসে থাকলেও বাঁচার সুযোগ নাই, তাহলে আর বসে থেকে লাভ কী। তাই মিছিলের নির্দেশ পেয়ে লোকজন নিয়ে নেমেছি। আজ উত্তর আওয়ামী লীগের মিছিলে বহু মানুষ এসেছে। এই অবৈধ সরকার কাউকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এর প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছি।”
এর আগে ৩১ আগস্ট ধানমন্ডির ২৭ নম্বর সড়কে রাপা প্লাজা সংলগ্ন এলাকা থেকে শংকরের বাংলাদেশ আই হসপিটালের সামনে পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মীকে মিছিল করতে দেখা যায়। এর সপ্তাহখানেক আগে গুলিস্তানের বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটেও আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী বিক্ষোভে অংশ নেন।
গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। তিন দিন পর, ৮ আগস্ট, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়।
পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষস্থানীয় নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের একে একে গ্রেপ্তার করা হয়। আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত কয়েকজন নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বর্তমানে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অধিকাংশ আত্মগোপনে আছেন। ফলে নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তারা অংশ নিচ্ছেন না।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের সব ধরনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হয়েছে।
তবুও মাঝেমধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা আকস্মিক মিছিল করে। অনেক সময় এসব মিছিল থেকে আটকও করা হয়।

















