ঢাকা ০৫:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আরও পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা ইসলামে পারিবারিক নির্যাতনের কোনো স্থান নেই-শায়খ আব্দুল কাইয়ুম লিবিয়া থেকে ৩১০ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না

অন্তর্বর্তী সরকারের মাঝে শেখ হাসিনার ছায়া দেখা যাচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৯:১০:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫
  • / 278
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাঝে শেখ হাসিনার ছায়া দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা ছিল, সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এখনও দেশে মব, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি চলছে। সরকার এভাবে উল্টো যাত্রা চালু রাখলে, জনগণের দ্রোহযাত্রা অব্যাহ থাকবে।

শনিবার (২ আগস্ট) বিকালে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘শিক্ষার্থী-শ্রমিক ও জনতার দ্রোহযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘জনবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ জুলাই বিক্রির জন্য নহে’— এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশগ্রহণ করেন বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন যাত্রাবাড়ীর শহীদ সিরাজের বাবা আব্দুর রউফ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশের মানুষের প্রতি বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টির কারণে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী ছিল। তার বিরুদ্ধে দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ জীবনবাজি রেখে মাঠে নেমে এসেছিল। এমন বিজয় আমরা বহুবার পেয়েছি। কিন্তু বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে বারবার বিজয় ধরে রাখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, কোনও অসঙ্গতি নিয়ে কথা বললেই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়— রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমরা তা জানি। তবে আমরা একটি পরিবর্তনের সূচনা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সবকিছু আগের মতোই চালাচ্ছে। পাহাড় ও সমতলে মানুষ সমানভাবে আক্রান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল কাজের বৈষম্য দূর করতে। অথচ এ সরকারের সময়ে একইভাবে প্রতিবাদী মানুষের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। মব সন্ত্রাস চলছে। সরকারের কেউ কেউ মব সন্ত্রাসের পক্ষে সাফাই গাইছে।

আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে শেখ হাসিনার নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি প্রশ্ন রাখেন, মার্কিন স্বার্থ কেন সরকার বাস্তবায়ন করতে চায়।

এই সরকার সব সময় ভারতের আধিপত্যের বিরোধী কথা বললেও বিগত সরকারের সময়ে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তুগুলো প্রকাশ করছে না। তাই তাদের ভারতবিরোধী বক্তব্য বাগারম্ভর ছাড়া কিছুই নয়।

তিনি বলেন, চব্বাশের শহীদদের স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পাইকারি মামলা বন্ধ করতে হবে। বিদেশিদের সঙ্গে কোনও ধরনের চুক্তি গোপন করা যাবে না।

নারী নিপীড়ন ও সাইবার বুলিং বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিটি সংগ্রামকে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে সবার ওপরে স্থান দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধকে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের সম্পত্তি মনে করা ঠিক নয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— শ্রমিক নেতা ক্বাফী রতন, সীমা দত্ত ও ড. সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। শহীদ মিনারে সমাবেশ শেষে দ্রোহযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে এই দিনে দ্রোহযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অন্তর্বর্তী সরকারের মাঝে শেখ হাসিনার ছায়া দেখা যাচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

আপডেট সময় : ০৯:১০:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাঝে শেখ হাসিনার ছায়া দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা ছিল, সরকার তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এখনও দেশে মব, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি চলছে। সরকার এভাবে উল্টো যাত্রা চালু রাখলে, জনগণের দ্রোহযাত্রা অব্যাহ থাকবে।

শনিবার (২ আগস্ট) বিকালে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘শিক্ষার্থী-শ্রমিক ও জনতার দ্রোহযাত্রা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘জনবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ জুলাই বিক্রির জন্য নহে’— এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশগ্রহণ করেন বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন যাত্রাবাড়ীর শহীদ সিরাজের বাবা আব্দুর রউফ।

আনু মুহাম্মদ বলেন, দেশের মানুষের প্রতি বিভাজন ও বৈষম্য সৃষ্টির কারণে শেখ হাসিনার পতন অবশ্যম্ভাবী ছিল। তার বিরুদ্ধে দেশের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষ জীবনবাজি রেখে মাঠে নেমে এসেছিল। এমন বিজয় আমরা বহুবার পেয়েছি। কিন্তু বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে বারবার বিজয় ধরে রাখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, কোনও অসঙ্গতি নিয়ে কথা বললেই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়— রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমরা তা জানি। তবে আমরা একটি পরিবর্তনের সূচনা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকার সবকিছু আগের মতোই চালাচ্ছে। পাহাড় ও সমতলে মানুষ সমানভাবে আক্রান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল কাজের বৈষম্য দূর করতে। অথচ এ সরকারের সময়ে একইভাবে প্রতিবাদী মানুষের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে। মব সন্ত্রাস চলছে। সরকারের কেউ কেউ মব সন্ত্রাসের পক্ষে সাফাই গাইছে।

আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে শেখ হাসিনার নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি প্রশ্ন রাখেন, মার্কিন স্বার্থ কেন সরকার বাস্তবায়ন করতে চায়।

এই সরকার সব সময় ভারতের আধিপত্যের বিরোধী কথা বললেও বিগত সরকারের সময়ে ভারতের সঙ্গে করা চুক্তুগুলো প্রকাশ করছে না। তাই তাদের ভারতবিরোধী বক্তব্য বাগারম্ভর ছাড়া কিছুই নয়।

তিনি বলেন, চব্বাশের শহীদদের স্বীকৃতি দিতে হবে। তাদের পরিবারের দায়িত্ব নিতে হবে রাষ্ট্রকে। আহতদের পুনর্বাসন করতে হবে। মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পাইকারি মামলা বন্ধ করতে হবে। বিদেশিদের সঙ্গে কোনও ধরনের চুক্তি গোপন করা যাবে না।

নারী নিপীড়ন ও সাইবার বুলিং বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতিটি সংগ্রামকে মূল্যায়ন করতে হবে। তবে সবার ওপরে স্থান দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধকে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের সম্পত্তি মনে করা ঠিক নয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— শ্রমিক নেতা ক্বাফী রতন, সীমা দত্ত ও ড. সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। শহীদ মিনারে সমাবেশ শেষে দ্রোহযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে এই দিনে দ্রোহযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ।