চালু হলো স্টারলিংক, বাংলাদেশের মতো এত দ্রুত বিশ্বের আর কোথাও হয়নি
- আপডেট সময় : ০১:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫
- / 271

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথসসহ আরও অনেকে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “স্টারলিংকের মাধ্যমে আমরা দেশের প্রতিটি প্রান্তে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে চাই। আর কোনো সরকার যেন মানুষের ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেওয়ার ক্ষমতা না পায়—এটাই আমাদের লক্ষ্য।” তিনি জানান, এই উদ্যোগের পেছনে ছিল প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি দিকনির্দেশনা। স্টারলিংক এরইমধ্যে বিটিআরসি থেকে ১০ বছরের জন্য স্যাটেলাইট অপারেটর ও রেডিও কমিউনিকেশন লাইসেন্স পেয়েছে।
স্টারলিংকের সেবা নিতে গ্রাহকদের শুরুতে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেটআপ কিট কিনতে হবে। এতে থাকবে স্যাটেলাইট ডিস, রাউটার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। এরপর মাসিক ভিত্তিতে দুটি প্যাকেজের মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নেওয়া যাবে। রেসিডেন্সিয়াল প্যাকেজে মাসিক ৬ হাজার টাকা, ৩০০ এমবিপিএস পর্যন্ত গতি, আনলিমিটেড ডেটা। আর লাইট প্যাকেজে মাসিক ৪ হাজার ২০০ টাকা, একটু কম গতি হলেও নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ তৈয়ব বলেন,“ স্টারলিংকের এই সংযোগ দেশের ব্রডব্যান্ড-বঞ্চিত অঞ্চলে ইন্টারনেটের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, চিকিৎসক, কৃষক—সবাই উপকৃত হবেন এই সংযোগ পেয়ে। আজ বাংলাদেশ সংযুক্ত হয়েছে। আর কখনও এই দেশকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।”বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ড. ইউনূসের প্রশংসায় স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশে স্টারলিংক সফলভাবে চালু করার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন স্পেসএক্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার। শুক্রবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে বাসস।
লরেন ড্রেয়ার বলেন, “আমরা ১৫০টি দেশ ও অঞ্চলে কাজ করি। এত দক্ষতা ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগে কখনও দেখিনি। স্পেসএক্সের সব সহকর্মীর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার লোকজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের পার্বত্য অঞ্চলের দূরবর্তী এলাকাগুলোতে উন্নত কানেক্টিভিটির বিশেষ প্রয়োজন। এসব অঞ্চলে ভালো স্কুল শিক্ষক ও ডাক্তার নেই। আমরা ১০০টি স্কুলে অনলাইন শিক্ষা চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি, যা বিচ্ছিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের উপকারে আসবে।”
অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি, যাতে দূরবর্তী এলাকার মানুষ অনলাইনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারে। তাদের চিকিৎসার ইতিহাস ডিজিটালি সংরক্ষিত থাকবে, এর ফলে ভবিষ্যতে পরামর্শ দেওয়া সহজ হবে।”
তিনি বলেন, “এটি প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে খুব কার্যকর ভূমিকা রাখে। নারীদের এ সময় ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য আরেকজন সহযোগীর প্রয়োজন হয়। ডিজিটাল হেলথ সেবা হলে তারা ঘরে বসেই ডাক্তার দেখাতে পারবেন।”
প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ডিজিটাল হেলথ সেবা থেকে উপকৃত হবেন উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “প্রবাসীরা ভাষার কারণে অনেক সময় ডাক্তারের কাছে যেতে অস্বস্তিতে ভোগেন। কী বলবেন-এটা নিয়ে ভাবেন। তবে ডিজিটাল হেলথ সেবা হয়ে গেলে বিদেশ থেকেই বাংলাদেশের ডাক্তারের সঙ্গে তারা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শের জন্য কথা বলতে পারবেন।”


















