ঢাকা ০৫:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতারা, ‘আমারে মারিস না কেন, আমারে মার’
২৪এর এই দিনে আবু সাঈদ সহ ৬, এবার ৯ জন নিহত

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:২৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
  • / 436
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি


আরিফ জেবতিক

আজকে গোপালগঞ্জে কমপক্ষে ৪ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছে, অসমর্থিত সূত্র বলছে প্রাণহানির ঘটনা ৯ জন পর্যন্ত হতে পারে। গতবছর একই দিনে আবু সাঈদ, ওয়াসিম সহ সহ ৬ জনের প্রাণ গিয়েছিল। ইতিহাসের কী ট্রাজেডি, গতবছর যাদের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল, এবছর তাদের কারনেই মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। নামে ক্রীড়া উপদেষ্টা, নামে আইন উপদেষ্টা কিন্তু তারা কন্ট্রোলরুম বানিয়ে ক্যামেরার সামনে বসে বসে নির্দেশনা দিয়ে মানুষ খুন করাচ্ছে, এবং সেটা গর্ব করে ফেসবুকে পোস্টও দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রের কন্ট্রোলরুমে ক্রীড়া উপদেষ্টার কাজ কী, এইটা নিয়ে এখন কোন সুশীল কোন প্রশ্ন করবে না। একেবারে ঘোষনা দিয়ে সেনাবাহিনী গতকাল ফেসবুকে গান পোস্ট করে এই অরাজকতার সমর্থন দিয়েছে।
পুরো বিষয়টি করাই হয়েছে দেশে আরো বেশি করে সংঘাত তৈরি করার জন্য। এনসিপি যদি সত্যিকারের রাজনীতিই করত, তাহলে তারা বাকি ৬৩ জেলার মতোই গোপালগঞ্জেও ”জুলাই পদযাত্রা” করত। তাদের জুলাই পদযাত্রা প্রশংসিতও হচ্ছিল। বিভিন্ন জেলায় তারা ভালো জনসমাবেশ করছিল। যদি বাকি ৬৩ জেলার মতোই গোপালগঞ্জেও তারা জুলাই পদযাত্রা করতে গিয়ে হামলার শিকার হতো, তাহলে সেটার নিন্দা সকলেই জানাত। গোপালগঞ্জের সব মানুষ আওয়ামী লীগ না, সেখানে বিএনপি আছে, জামাত আছে, জাতীয় পার্টি আছে, হয়তো এনসিপিও আছে। সুতরাং জেলাকে জেলা হিসেবেই ট্রিট করে কর্মসূচি হতে পারত। কিন্তু এনসিপি সেটাকে মার্চ টু গোপালগঞ্জ বানিয়ে প্রত্যেক নেতা ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়া শুরু করেছিল গত ২ দিন ধরে। ‘মার্চ টু’ প্রোগ্রাম হচ্ছে শত্রু এলাকায় ঘোষনা দিয়ে যাওয়া। যেমন গতবছর ‘মার্চ টু গণভবন’ করেছিল, কারন শেখ হাসিনার বাসভবনে শান্তির পদযাত্রা না, ‘মার্চ টু’ মানে দখলের ঘোষনাই ছিল। একটি পুরো জেলাকে শত্রু ঘোষনা করে সেখানে যাওয়াটা রাজনীতি না, সেটি উস্কানি।
তারপরও সেখানে জনশূন্য ‘জনসভা’টি তারা শান্তিপূর্ণভাবেই করছিল। কিন্তু এতে তাদের আরাম হলো না। তারা আধাঘন্টা লাগিয়ে ‘মুজিববাদ মূর্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিতে থাকল। মানে হলো, ‘আমারে মারিস না কেন, আমারে মার। আমারে না মারলে তো আমার গাড়িভাড়া উসুল হবে না।’
তারপর যা হওয়ার ভয় ছিল, তাই হলো। গোপালগঞ্জবাসীর সহ্য ক্ষমতার বাঁধ ভেঙে গেল। তারা এমন দৌঁড়ানি দিল, যে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ভেকুর ভিতরে ভরে এদেরকে রক্ষা করতে হলো।
এনসিপি ওয়াকারের পুত্র হওয়ার আহ্লাদে নিজেদের রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। জুলাই পদযাত্রার সাকসেসগুলোকে তারা ঢেকে দিচ্ছে ৪ থেকে ১৪ জন মানুষের লাশের আড়ালে। এই রাজনীতিতে তারা সফল হবে না। বাংলাদেশে ভালো রাজনীতির শূন্যতা আছে, এনসিপি সেদিকে যেতে পারত। তা না করে তারা প্রচলিত মাস্তানির রাজনীতিতে গেছে। ঐ রাজনীতিতে দেশের বড় দলগুলো তো ইতিমধ্যেই আছে, দারাজ থেকে সস্তা কপি পাবলিকে কিনবে কেন? এই দেশে ফ্রিডম পার্টি তাদের চেয়েও বড় কুতুব ছিল। ফ্রিডম পার্টির নেতারা আক্ষরিক অর্থেই অস্ত্র হাতে মুজিবকে সপরিবারে কবর দিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু ‘মুজিববাদ’কে কবর দিতে পারে নাই, নিজেদেরই কবর খুড়েছিল।
এনসিপির ভাড়াটিয়াদের রক্ষা করতে এই সুযোগে সেনাবাহিনী তার পরিকল্পনা মতো কিছু লাশ ফেলে দিল। ভিডিওতে আছে, প্রকাশ্যে বলছে ডাইরেক্ট গুলি কর, ডাইরেক্ট গুলি কর। আওয়ামী লীগের বোকাচোদা অংশ আবার এই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বলে না, কারন ওয়াকার তাদের ফুপাতো দুলাভাই এবং তারা আশা করে একদিন সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় আসবে, কারন তারা কোন একদিন সেনাবাহিনীকে দুইবেলা ভাত খাওয়ার অধিকার দিয়েছিল।
আগেই আশংকা প্রকাশ করে লিখেছিলাম যে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ইন্টেরিমের সময় দরকার। সরাসরি ক্ষমতা দখলে ওয়াকারের কিছু উসিলা দরকার। এই দরকারের কাজটাই ওয়াকার তার পালিত পুত্রদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। আমাদের বামাতি দালালগুলো ইতিমধ্যে ওম শান্তি বলে সেটাকে জাস্টিফাই করতেও নেমে গেছে।
এই দেশে সবসময়ই ক্ষমতার লড়াই চলমান। এখানে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই। গত জুলাইতেও ছিল না, এবারের জুলাইতেও নেই।

আরিফ জেবতিক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট।
ফেসবুক পোস্ট থেকে

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতারা, ‘আমারে মারিস না কেন, আমারে মার’
২৪এর এই দিনে আবু সাঈদ সহ ৬, এবার ৯ জন নিহত

আপডেট সময় : ১০:২৫:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫


আরিফ জেবতিক

আজকে গোপালগঞ্জে কমপক্ষে ৪ জন মানুষের প্রাণ গিয়েছে, অসমর্থিত সূত্র বলছে প্রাণহানির ঘটনা ৯ জন পর্যন্ত হতে পারে। গতবছর একই দিনে আবু সাঈদ, ওয়াসিম সহ সহ ৬ জনের প্রাণ গিয়েছিল। ইতিহাসের কী ট্রাজেডি, গতবছর যাদের জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল, এবছর তাদের কারনেই মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। নামে ক্রীড়া উপদেষ্টা, নামে আইন উপদেষ্টা কিন্তু তারা কন্ট্রোলরুম বানিয়ে ক্যামেরার সামনে বসে বসে নির্দেশনা দিয়ে মানুষ খুন করাচ্ছে, এবং সেটা গর্ব করে ফেসবুকে পোস্টও দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রের কন্ট্রোলরুমে ক্রীড়া উপদেষ্টার কাজ কী, এইটা নিয়ে এখন কোন সুশীল কোন প্রশ্ন করবে না। একেবারে ঘোষনা দিয়ে সেনাবাহিনী গতকাল ফেসবুকে গান পোস্ট করে এই অরাজকতার সমর্থন দিয়েছে।
পুরো বিষয়টি করাই হয়েছে দেশে আরো বেশি করে সংঘাত তৈরি করার জন্য। এনসিপি যদি সত্যিকারের রাজনীতিই করত, তাহলে তারা বাকি ৬৩ জেলার মতোই গোপালগঞ্জেও ”জুলাই পদযাত্রা” করত। তাদের জুলাই পদযাত্রা প্রশংসিতও হচ্ছিল। বিভিন্ন জেলায় তারা ভালো জনসমাবেশ করছিল। যদি বাকি ৬৩ জেলার মতোই গোপালগঞ্জেও তারা জুলাই পদযাত্রা করতে গিয়ে হামলার শিকার হতো, তাহলে সেটার নিন্দা সকলেই জানাত। গোপালগঞ্জের সব মানুষ আওয়ামী লীগ না, সেখানে বিএনপি আছে, জামাত আছে, জাতীয় পার্টি আছে, হয়তো এনসিপিও আছে। সুতরাং জেলাকে জেলা হিসেবেই ট্রিট করে কর্মসূচি হতে পারত। কিন্তু এনসিপি সেটাকে মার্চ টু গোপালগঞ্জ বানিয়ে প্রত্যেক নেতা ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়া শুরু করেছিল গত ২ দিন ধরে। ‘মার্চ টু’ প্রোগ্রাম হচ্ছে শত্রু এলাকায় ঘোষনা দিয়ে যাওয়া। যেমন গতবছর ‘মার্চ টু গণভবন’ করেছিল, কারন শেখ হাসিনার বাসভবনে শান্তির পদযাত্রা না, ‘মার্চ টু’ মানে দখলের ঘোষনাই ছিল। একটি পুরো জেলাকে শত্রু ঘোষনা করে সেখানে যাওয়াটা রাজনীতি না, সেটি উস্কানি।
তারপরও সেখানে জনশূন্য ‘জনসভা’টি তারা শান্তিপূর্ণভাবেই করছিল। কিন্তু এতে তাদের আরাম হলো না। তারা আধাঘন্টা লাগিয়ে ‘মুজিববাদ মূর্দাবাদ’ বলে স্লোগান দিতে থাকল। মানে হলো, ‘আমারে মারিস না কেন, আমারে মার। আমারে না মারলে তো আমার গাড়িভাড়া উসুল হবে না।’
তারপর যা হওয়ার ভয় ছিল, তাই হলো। গোপালগঞ্জবাসীর সহ্য ক্ষমতার বাঁধ ভেঙে গেল। তারা এমন দৌঁড়ানি দিল, যে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ভেকুর ভিতরে ভরে এদেরকে রক্ষা করতে হলো।
এনসিপি ওয়াকারের পুত্র হওয়ার আহ্লাদে নিজেদের রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। জুলাই পদযাত্রার সাকসেসগুলোকে তারা ঢেকে দিচ্ছে ৪ থেকে ১৪ জন মানুষের লাশের আড়ালে। এই রাজনীতিতে তারা সফল হবে না। বাংলাদেশে ভালো রাজনীতির শূন্যতা আছে, এনসিপি সেদিকে যেতে পারত। তা না করে তারা প্রচলিত মাস্তানির রাজনীতিতে গেছে। ঐ রাজনীতিতে দেশের বড় দলগুলো তো ইতিমধ্যেই আছে, দারাজ থেকে সস্তা কপি পাবলিকে কিনবে কেন? এই দেশে ফ্রিডম পার্টি তাদের চেয়েও বড় কুতুব ছিল। ফ্রিডম পার্টির নেতারা আক্ষরিক অর্থেই অস্ত্র হাতে মুজিবকে সপরিবারে কবর দিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু ‘মুজিববাদ’কে কবর দিতে পারে নাই, নিজেদেরই কবর খুড়েছিল।
এনসিপির ভাড়াটিয়াদের রক্ষা করতে এই সুযোগে সেনাবাহিনী তার পরিকল্পনা মতো কিছু লাশ ফেলে দিল। ভিডিওতে আছে, প্রকাশ্যে বলছে ডাইরেক্ট গুলি কর, ডাইরেক্ট গুলি কর। আওয়ামী লীগের বোকাচোদা অংশ আবার এই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বলে না, কারন ওয়াকার তাদের ফুপাতো দুলাভাই এবং তারা আশা করে একদিন সেনাবাহিনীর মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় আসবে, কারন তারা কোন একদিন সেনাবাহিনীকে দুইবেলা ভাত খাওয়ার অধিকার দিয়েছিল।
আগেই আশংকা প্রকাশ করে লিখেছিলাম যে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য ইন্টেরিমের সময় দরকার। সরাসরি ক্ষমতা দখলে ওয়াকারের কিছু উসিলা দরকার। এই দরকারের কাজটাই ওয়াকার তার পালিত পুত্রদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। আমাদের বামাতি দালালগুলো ইতিমধ্যে ওম শান্তি বলে সেটাকে জাস্টিফাই করতেও নেমে গেছে।
এই দেশে সবসময়ই ক্ষমতার লড়াই চলমান। এখানে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই। গত জুলাইতেও ছিল না, এবারের জুলাইতেও নেই।

আরিফ জেবতিক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট।
ফেসবুক পোস্ট থেকে