যেসব কারণে ইরানের পাশে নেই আরব বিশ্ব
- আপডেট সময় : ১১:৩৩:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / 335

ইসরায়েলি হামলার নিন্দা করলেও ইরানের পক্ষ নিতে রাজি হয়নি কোনো আরব রাষ্ট্র। বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর লক্ষ্য তেহরানকে দুর্বল অবস্থায় দেখতে চাওয়া। এসব দেশের ভূখণ্ডে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি থাকায় তারা যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষেপাতে চায় না।
চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশ্লেষক সানাম ভাকিল বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “উপসাগরীয় দেশগুলো প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সমালোচনা করলেও অনেকেই মনে মনে ইরানকে দুর্বল হতে দেখলে খুশি হবে। কূটনৈতিক চাপে তারা দ্বিমুখী আচরণ করছে। কেউ-ই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না। আবার ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এর পরিণতি নিয়েও তারা চিন্তিত।”
প্যারিসের সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক করিম বিতার বলেন, “উপসাগরীয় দেশগুলো বুঝতে পারছে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসন তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ ও সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।”
এক দশক আগেও সৌদি আরব ছিল ইরানবিরোধী অবস্থানের অন্যতম কণ্ঠস্বর। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই রয়েছে তাদের উদ্বেগ। ২০১৬ সালে রিয়াদ তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তবে চীনের মধ্যস্থতায় গত বছর সেই সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
গত শুক্রবার ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর প্রথম যে দেশটি নিন্দা জানায়, তা হলো সৌদি আরব। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, কুয়েত ও বাহরাইনসহ অন্যান্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রও একই পথে হাঁটে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এসব নিন্দা মূলত আনুষ্ঠানিকতা—বাস্তবে তেহরানের পাশে দাঁড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেই।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ একসময় ছিলেন ইরানের আঞ্চলিক মিত্র। কিন্তু গত ডিসেম্বরে তার সরকার পতনের পর সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করে ইরান। ফলে এখন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্ভাব্য সরাসরি সংঘর্ষে সিরিয়ার সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে গেছে।
অন্যদিকে, হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের কার্যত নিষ্ক্রিয় করে তুলেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনে পরিচালিত একাধিক হামলায় বহু যোদ্ধা নিহত এবং অস্ত্রভাণ্ডার ধ্বংস হয়েছে। এতে একরকম একা হয়ে পড়েছে তেহরান।
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণেই সরাসরি সংঘাতে জড়াতে চাইছে না জর্ডান ও মিশর। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় এই দুই দেশও যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চাইছে।























