লন্ডনে ড. ইউনূসকে স্বাগত ও প্রতিবাদ বিক্ষোভে সরব প্রবাসী বাংলাদেশিরা
- আপডেট সময় : ১২:১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 278

ডরচেস্টার হোটেলের সামনে ড. ইউনূসকে লন্ডনে স্বাগত জানিয়ে জমায়েত
চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বরাবরই বাংলাদেশের সরকারপ্রধানরা লন্ডনে এলে এক পক্ষ বিক্ষোভ করে, অন্য পক্ষ স্বাগত জানায়। এ ধারা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। গত বিশ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছিল এরকম কর্মসূচিতে। এবারে ড. ইউনূসের সফরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিমানবন্দর থেকে অধ্যাপক ইউনূস সেন্ট্রাল লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে ওঠেন। সে হোটেলের সামনে দুটি পক্ষ সকাল থেকে অবস্থান নেয়। তবে স্থানীয় পুলিশ ছিল সতর্ক অবস্থানে।
লন্ডনে ড. ইউনূস যে হোটেলে অবস্থান করছেন তার সামনে সকাল থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী। তাদের হাতে ছিল ড. ইউনূসের ছবি সংবলিত বিভিন্ন প্রতিবাদী ফেস্টুন ও ব্যানার। সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে অংশ নেন। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক জানান, ড. ইউনূস যেসব জায়গায় মিটিং করবেন, সেখানে বিক্ষোভ করবেন তারা।

লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলের সামনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত সরকার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সরকার (বাঁ থেকে পঞ্চম)
লন্ডনের এবারের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্যকে প্রকাশ্যে দেখা গেছে। মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন তাঁরা। লন্ডনে প্রকাশ্যে আসা আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা হলেন সুনামগঞ্জ–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রণজিত সরকার এবং হবিগঞ্জ–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবু জাহির। এ সময় তাঁদের সঙ্গে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিধান কুমার সরকারকেও প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে দেখা যায়। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এর পর গত বছর এবং চলতি বছরের শুরুতে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও মেয়রকে লন্ডনে প্রকাশ্যে দেখা যায়। আওয়ামী লীগের ওই নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং সিলেট–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান।
অপরদিকে, ড. ইউনূসকে স্বাগত জানাতে হোটেলের সামনে সকাল থেকে অবস্থান নেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের কারও কারও হাতে ছিল ব্যানার, ড. ইউনূসের ছবি। তাদের অনেকেই জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিসসহ সমমনা দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ব্যানারেও কিছু ব্যক্তিকে দেখা যায়। এই সমাবেশে ব্যবসায়ী সিরাজ হক, জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা, ব্যারিস্টার সাইফুদ্দিন খালেদ, খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা সালেহ আহমদ উপস্থিত ছিলেন। তবে এখানে যুক্তরাজ্য বিএনপির কাউকে দেখা যায়নি।
এদিকে, স্থানীয় সময় বিকালে পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে ‘রিফর্ম বাংলাদেশ’র ব্যানারে অধ্যাপক ইউনূসের সমর্থনে একটি সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে।
ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন ব্রিটিশ এমপিরা
লন্ডনে বাংলাদেশ বিষয়ক অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের (এপিপিজি) ব্যানারে যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের একটি দল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান। লন্ডনের যে হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা অবস্থান করছেন—সেখানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে জানান তিনি।
এসময় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আপসানা বেগম, ব্রিটিশ এমপি রুপা হক, ব্যারোনেস পলা মঞ্জিলা উদ্দীনসহ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তবে ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী ও যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।


















