ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

ডলার খোলাবাজারে : দাম অস্বাভাবিক বাড়লে কী হবে?

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / 351
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টাকা-ডলারের বিনিময় হার বাজারনির্ভর করার সিদ্ধান্তের প্রথম দিনে—বৃহস্পতিবার—ব্যাংকে ডলারের দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি, তবে খোলাবাজারে বা কার্ব মার্কেটে মূল্য কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে গত বুধবার (১৪ মে ২০২৫) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডলারের হার বাজার নির্ধারণ করবে বলে ঘোষণা দেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক রেফারেন্স রেট নির্ধারণ করে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়সা কম। তবে দিন শেষে (বিকাল ৫টা) তা বাড়ে ১২১ টাকা ৯৯ পয়সায়, যা আগের দিনের শেষ রেটের তুলনায় ৭ পয়সা বেশি।

ব্যাংকগুলো মূলত ১২১ থেকে ১২২ টাকার মধ্যে ডলার বেচাকেনা করেছে আমদানি, রপ্তানি এবং রেমিটেন্স লেনদেনে। অপরদিকে, খোলাবাজারে বৃহস্পতিবার ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকায়, যেখানে বুধবার তা ছিল ১২৫ টাকা ৫০ পয়সা।

রাজধানীর মতিঝিলের এক খোলাবাজার ডলার ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “বাজার গত দুই দিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। বুধবার আমরা ডলার কিনেছি ১২৫ টাকা ২০ থেকে ৩০ পয়সায় এবং বিক্রি করেছি ১২৫ টাকা ৫০ পয়সায়। বৃহস্পতিবার কিনেছি ১২৫ টাকা ৭০ থেকে ৮০ পয়সায়, বিক্রি করেছি ১২৬ টাকায়।” তার ভাষ্যমতে, এর আগেও কিছুদিন ডলার কেনাবেচা হয়েছে ১২৩–১২৪ টাকার মধ্যে।

তিনি আরও বলেন, “বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হওয়ার পর থেকেই কিছুটা নড়াচড়া শুরু হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রভাব বুধবার থেকেই বাজারে পড়তে শুরু করে এবং বৃহস্পতিবার তা আরও প্রকট হয়।”

বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংক নগদ ডলার এবং আমদানি ঋণপত্র (এলসি)-এর জন্য ১২২ টাকা দরে বিক্রি করেছে। জনতা ব্যাংকও একই দরে লেনদেন করেছে। বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক নগদ, এলসি এবং রেমিটেন্স সব ক্ষেত্রেই ডলার বিক্রি করেছে ১২৩ টাকায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৭ মে আন্তঃব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলার কেনাবেচায় আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসায়ী ও সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ডলার নিয়ে আগ্রহ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। অনেকেই ডলার কিনতে ব্যাংকে আসেন, পাশাপাশি খোলাবাজারেও চাপ লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোতে এখনও পাঁচ কোটি ডলারের মতো নগদ মজুদ রয়েছে। তাই প্রয়োজন হলে ব্যাংকগুলো সহজেই বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন গ্রাহকরা অতিরিক্ত দামে বাজার থেকে ডলার না কেনেন।

ব্যাংকারদের ভাষ্যমতে, বিনিময় হার অযথা যেন বাড়তে না পারে, সে লক্ষ্যে বুধবার থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাজারভিত্তিক হার চালুর পরও ব্যাংক পর্যায়ে তেমন অস্থিরতা দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোও অতিরিক্ত দাম হাঁকায়নি। যেসব প্রতিষ্ঠান বেশি দাম চাইছে, সেখান থেকে ডলার না কেনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত কম বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ এবং নগদ ডলার সরবরাহ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটেও ডলারের বাজার অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডলারের বিনিময় হার বাজারনির্ভর করার ঘোষণা দেন। মূলত আইএমএফের ঋণের কিস্তি ছাড়ের শর্ত হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহকের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ডলারের দাম নির্ধারিত হবে; তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি থাকবে।

গভর্নর বলেন, “বাজারভিত্তিক মানে এই নয় যে ডলার যেকোনো দামে কেনাবেচা হবে। সরবরাহ ও চাহিদা বিবেচনায় যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা করবে।”

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের শর্ত হিসেবে ডলারের বাজারভিত্তিক মূল্যায়ন চাওয়া হয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে আলোচনা চলছিল। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকার জানায়, বিনিময় হার আরও নমনীয় করতে তারা প্রস্তুত। এর পরপরই আইএমএফ ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ে সম্মতি দেয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন ২৩ মে আইএমএফ বোর্ড সভায় হবে।

এই দুই কিস্তি পাওয়ার পথ পরিস্কার হলেও আলোচনার মূল বিষয় ছিল বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া। যদিও এখনো তা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া হয়নি, কিছুটা নমনীয়তা আনা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। বাকি ২.৩৯ বিলিয়ন ডলার পেতে আরও চার কিস্তিতে ছাড় হবে। এর মধ্যে দুই কিস্তির ১.৩০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, যা এখন অনেকটাই কেটে গেছে।

ডলার দর অস্বাভাবিক বাড়লে হস্তক্ষেপ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগের বার্তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিতে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তবে যদি অতিরিক্ত দরবৃদ্ধি ঘটে, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে।”

রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ (এমএমআই)’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, “বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা সংস্কারের অংশ। এতে বৈদেশিক খাতের শক্ত অবস্থান ও সংস্কারপ্রয়াসী মনোভাবের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। বিনিময় হারে কিছুটা ওঠানামা হলেও এখনও বড় ধরনের অবমূল্যায়নের চাপ দেখা যায়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, যাতে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ডলার খোলাবাজারে : দাম অস্বাভাবিক বাড়লে কী হবে?

আপডেট সময় : ১২:৪২:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

টাকা-ডলারের বিনিময় হার বাজারনির্ভর করার সিদ্ধান্তের প্রথম দিনে—বৃহস্পতিবার—ব্যাংকে ডলারের দামে তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি, তবে খোলাবাজারে বা কার্ব মার্কেটে মূল্য কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে গত বুধবার (১৪ মে ২০২৫) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ডলারের হার বাজার নির্ধারণ করবে বলে ঘোষণা দেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক রেফারেন্স রেট নির্ধারণ করে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা, যা আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়সা কম। তবে দিন শেষে (বিকাল ৫টা) তা বাড়ে ১২১ টাকা ৯৯ পয়সায়, যা আগের দিনের শেষ রেটের তুলনায় ৭ পয়সা বেশি।

ব্যাংকগুলো মূলত ১২১ থেকে ১২২ টাকার মধ্যে ডলার বেচাকেনা করেছে আমদানি, রপ্তানি এবং রেমিটেন্স লেনদেনে। অপরদিকে, খোলাবাজারে বৃহস্পতিবার ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকায়, যেখানে বুধবার তা ছিল ১২৫ টাকা ৫০ পয়সা।

রাজধানীর মতিঝিলের এক খোলাবাজার ডলার ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “বাজার গত দুই দিন ধরেই ঊর্ধ্বমুখী। বুধবার আমরা ডলার কিনেছি ১২৫ টাকা ২০ থেকে ৩০ পয়সায় এবং বিক্রি করেছি ১২৫ টাকা ৫০ পয়সায়। বৃহস্পতিবার কিনেছি ১২৫ টাকা ৭০ থেকে ৮০ পয়সায়, বিক্রি করেছি ১২৬ টাকায়।” তার ভাষ্যমতে, এর আগেও কিছুদিন ডলার কেনাবেচা হয়েছে ১২৩–১২৪ টাকার মধ্যে।

তিনি আরও বলেন, “বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু হওয়ার পর থেকেই কিছুটা নড়াচড়া শুরু হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রভাব বুধবার থেকেই বাজারে পড়তে শুরু করে এবং বৃহস্পতিবার তা আরও প্রকট হয়।”

বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংক নগদ ডলার এবং আমদানি ঋণপত্র (এলসি)-এর জন্য ১২২ টাকা দরে বিক্রি করেছে। জনতা ব্যাংকও একই দরে লেনদেন করেছে। বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক নগদ, এলসি এবং রেমিটেন্স সব ক্ষেত্রেই ডলার বিক্রি করেছে ১২৩ টাকায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ৭ মে আন্তঃব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ছিল ১১০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ডলারের দর বেড়েছে প্রায় ১০ দশমিক ৯০ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলার কেনাবেচায় আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো। বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসায়ী ও সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ডলার নিয়ে আগ্রহ অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি ছিল। অনেকেই ডলার কিনতে ব্যাংকে আসেন, পাশাপাশি খোলাবাজারেও চাপ লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকগুলোতে এখনও পাঁচ কোটি ডলারের মতো নগদ মজুদ রয়েছে। তাই প্রয়োজন হলে ব্যাংকগুলো সহজেই বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যেন গ্রাহকরা অতিরিক্ত দামে বাজার থেকে ডলার না কেনেন।

ব্যাংকারদের ভাষ্যমতে, বিনিময় হার অযথা যেন বাড়তে না পারে, সে লক্ষ্যে বুধবার থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাজারভিত্তিক হার চালুর পরও ব্যাংক পর্যায়ে তেমন অস্থিরতা দেখা যায়নি।

বৃহস্পতিবার বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোও অতিরিক্ত দাম হাঁকায়নি। যেসব প্রতিষ্ঠান বেশি দাম চাইছে, সেখান থেকে ডলার না কেনার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা আপাতত কম বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এদিকে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহ এবং নগদ ডলার সরবরাহ বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটেও ডলারের বাজার অস্থির হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ডলারের বিনিময় হার বাজারনির্ভর করার ঘোষণা দেন। মূলত আইএমএফের ঋণের কিস্তি ছাড়ের শর্ত হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহকের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ডলারের দাম নির্ধারিত হবে; তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি থাকবে।

গভর্নর বলেন, “বাজারভিত্তিক মানে এই নয় যে ডলার যেকোনো দামে কেনাবেচা হবে। সরবরাহ ও চাহিদা বিবেচনায় যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা করবে।”

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের শর্ত হিসেবে ডলারের বাজারভিত্তিক মূল্যায়ন চাওয়া হয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে আলোচনা চলছিল। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সরকার জানায়, বিনিময় হার আরও নমনীয় করতে তারা প্রস্তুত। এর পরপরই আইএমএফ ১ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ে সম্মতি দেয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন ২৩ মে আইএমএফ বোর্ড সভায় হবে।

এই দুই কিস্তি পাওয়ার পথ পরিস্কার হলেও আলোচনার মূল বিষয় ছিল বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া। যদিও এখনো তা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া হয়নি, কিছুটা নমনীয়তা আনা হয়েছে।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২.৩১ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে। বাকি ২.৩৯ বিলিয়ন ডলার পেতে আরও চার কিস্তিতে ছাড় হবে। এর মধ্যে দুই কিস্তির ১.৩০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, যা এখন অনেকটাই কেটে গেছে।

ডলার দর অস্বাভাবিক বাড়লে হস্তক্ষেপ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগের বার্তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দিতে ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তবে যদি অতিরিক্ত দরবৃদ্ধি ঘটে, তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক হস্তক্ষেপ করবে।”

রাজধানীর বনানীতে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতি নিয়ে মাসিক বিশ্লেষণ (এমএমআই)’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদি সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী।

ডেপুটি গভর্নর বলেন, “বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা সংস্কারের অংশ। এতে বৈদেশিক খাতের শক্ত অবস্থান ও সংস্কারপ্রয়াসী মনোভাবের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। বিনিময় হারে কিছুটা ওঠানামা হলেও এখনও বড় ধরনের অবমূল্যায়নের চাপ দেখা যায়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, যাতে প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারে।”