ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেন বন্ধ করলো অন্তর্বর্তী সরকার? সাংবাদিক আনিস আলমগীর ও অভিনেত্রী শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে সরকার সমালোচক সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আটক ‘পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা করেনি’  চবি উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঢাবিতে ‘রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভ’, জুতা নিক্ষেপ লন্ডনে তারেক রহমানের শেষ কর্মসূচি ১৬ ডিসেম্বর গোলাম আজম ও নিজামীকে দেশপ্রেমিক বলায় পাবনায় প্রতিবাদ মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, ঘাতকদের বিচারের দাবি জগন্নাথ হলের সড়কে ছাত্রদের আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন

বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে বাবার নাম ‘চান না’ সিলেটের আতাউর

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ১০:০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • / 341
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এরশাদ আলীর ছেলে আতাউর রহমান (বাঁয়ে) ও নাতি সুহেল রানা। ছবি: ডেইলি মেইল।

লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ টাওয়ার হিল মেমোরিয়াল থেকে নিজের বাবার নাম বাদ দেওয়ার ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন সিলেটের বাসিন্দা আতাউর রহমান। সৌধে গিয়ে বাবার প্রতি সম্মান জানাতে গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের ভিসার আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দেয় ব্রিটিশ সরকার।
মূলত এ অভিমান থেকেই ৮৬ বছর বয়সী আতাউর বলছেন, “যেহেতু আমাদের সম্মান জানানোর অধিকার নেই, তাই সেখানে আমার বাবার নাম থাকার কোনো যুক্তি নেই। ব্রিটিশ সরকারকে বলব, স্মৃতিসৌধের পাশাপাশি যুদ্ধের কমনওয়েলথ সংক্রান্ত রেকর্ড থেকে আমার বাবার নাম স্থায়ীভাবে মুছে ফেলা হোক।”
আতাউরের বাবার নাম এরশাদ আলী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি মিত্রবাহিনীর হয়ে মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত ছিলেন।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, ১৯৪৪ সালের ১৯ জুন মৃত্যু হয় এরশাদ আলীর। ওই দিন নেদারল্যান্ডসের কার্গো জাহাজে ছিলেন তিনি। একটি টর্পেডোর আঘাতে জাহাজটি ধ্বংস হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অবদানের জন্য এরশাদ আলী পাঁচটি পদক পেয়েছেন। এগুলো হলো- বার্মা স্টার, আটলান্টিক স্টার, ১৯৩৯-৪৫ স্টার, ১৯৩৯-৪৫ ওয়ার মেডাল ও ডাচ মোবিলাইজেশন ওয়ার ক্রস। টাওয়ার হিল মেমোরিয়ালে আরো অনেকের সঙ্গে এরশাদ আলীর নামও খোদাই করা আছে।

লন্ডনের টাওয়ার হিল মেমোরিয়াল। ছবি: কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেইভস।

আতাউর রহমান বলেন, “আমার বয়স যখন ছয় মাস, তখন বাবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল, আমি বাবাকে কখনো দেখিনি।”
তিনি বলেন, “আমার ছেলে সুহেল, সে তার দাদার মৃত্যুর ৭৫ বছর পর সব নথি সংগ্রহ করে। তিন বছর ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর সে তার দাদার স্বীকৃতি পায়। আমি মনে করি, ভিসা কর্মকর্তা ইচ্ছা করে ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমি মনে করি, এটা মানবতাবিরোধী একটা অপরাধ।”
আতাউর রহমান মনে করেন, ‘ভিসা আবেদন নাকচ করার মাধ্যমে কেবল তার বাবাকে অপমান করা হয়নি; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সবাইকে অপমান করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে বাবার নাম ‘চান না’ সিলেটের আতাউর

আপডেট সময় : ১০:০৯:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

এরশাদ আলীর ছেলে আতাউর রহমান (বাঁয়ে) ও নাতি সুহেল রানা। ছবি: ডেইলি মেইল।

লন্ডনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ টাওয়ার হিল মেমোরিয়াল থেকে নিজের বাবার নাম বাদ দেওয়ার ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন সিলেটের বাসিন্দা আতাউর রহমান। সৌধে গিয়ে বাবার প্রতি সম্মান জানাতে গত ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্যের ভিসার আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দেয় ব্রিটিশ সরকার।
মূলত এ অভিমান থেকেই ৮৬ বছর বয়সী আতাউর বলছেন, “যেহেতু আমাদের সম্মান জানানোর অধিকার নেই, তাই সেখানে আমার বাবার নাম থাকার কোনো যুক্তি নেই। ব্রিটিশ সরকারকে বলব, স্মৃতিসৌধের পাশাপাশি যুদ্ধের কমনওয়েলথ সংক্রান্ত রেকর্ড থেকে আমার বাবার নাম স্থায়ীভাবে মুছে ফেলা হোক।”
আতাউরের বাবার নাম এরশাদ আলী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি মিত্রবাহিনীর হয়ে মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত ছিলেন।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়, ১৯৪৪ সালের ১৯ জুন মৃত্যু হয় এরশাদ আলীর। ওই দিন নেদারল্যান্ডসের কার্গো জাহাজে ছিলেন তিনি। একটি টর্পেডোর আঘাতে জাহাজটি ধ্বংস হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অবদানের জন্য এরশাদ আলী পাঁচটি পদক পেয়েছেন। এগুলো হলো- বার্মা স্টার, আটলান্টিক স্টার, ১৯৩৯-৪৫ স্টার, ১৯৩৯-৪৫ ওয়ার মেডাল ও ডাচ মোবিলাইজেশন ওয়ার ক্রস। টাওয়ার হিল মেমোরিয়ালে আরো অনেকের সঙ্গে এরশাদ আলীর নামও খোদাই করা আছে।

লন্ডনের টাওয়ার হিল মেমোরিয়াল। ছবি: কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেইভস।

আতাউর রহমান বলেন, “আমার বয়স যখন ছয় মাস, তখন বাবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল, আমি বাবাকে কখনো দেখিনি।”
তিনি বলেন, “আমার ছেলে সুহেল, সে তার দাদার মৃত্যুর ৭৫ বছর পর সব নথি সংগ্রহ করে। তিন বছর ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে লড়াইয়ের পর সে তার দাদার স্বীকৃতি পায়। আমি মনে করি, ভিসা কর্মকর্তা ইচ্ছা করে ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমি মনে করি, এটা মানবতাবিরোধী একটা অপরাধ।”
আতাউর রহমান মনে করেন, ‘ভিসা আবেদন নাকচ করার মাধ্যমে কেবল তার বাবাকে অপমান করা হয়নি; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সবাইকে অপমান করা হয়েছে।