এনসিপির ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ আসলে কী, কতটা সম্ভব হবে?
নতুন দলের আত্মপ্রকাশ কেমন হলো?
- আপডেট সময় : ১১:৪৮:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
- / 268

জুলাই অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠন করে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার সংকল্প তুলে ধরেছে অভ্যুত্থানের সংগঠকদের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের মঞ্চ থেকে উপস্থাপন করা ঘোষণাপত্রে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে যা যা করতে চান তার ধারণা দিয়েছেন এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এনসিপির এমন ঘোষণার প্রেক্ষাপটে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বলতে আসলে কী বোঝায় এবং এটা কীভাবে কাজ করবে- তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। নতুন দল এনসিপি’র আত্মপ্রকাশ কেমন হলো? প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিবিসি নিউজ বাংলা, ঢাকা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাহিদ বলেন, “আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব।”
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, “হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি। জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল, যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের সূচনা হিসেবে তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, “একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদেরকে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য।”
‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ তারা কীভাবে গড়ে তুলতে চান, নতুন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব মো. মইনুল ইসলাম তুহিনের সঙ্গে কথা বলে তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।
‘তুহিন খান’ নামে লেখালেখি করা এই তরুণ নেতা যুক্ত আছেন নতুন দলের তাত্ত্বিক কাঠামো তৈরির সঙ্গে। জুলাই অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া এনসিপির ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বিষয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, বিপ্লবের পর আগের ব্যবস্থাকে বিলোপ করে নতুন রাষ্ট্র কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে ফ্রান্স, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ ঘোষণা করা হয়েছিল। যার ফলে রাষ্ট্র কাঠামোতে নতুন ‘বন্দোবস্ত’ তৈরি হয়। ফ্রান্সের সেকেন্ড রিপাবলিক ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগের রাজতন্ত্র বিলোপ করে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আমরাও সেভাবে বলছি, অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রকাঠামোতে নতুন বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে। আমরা সেটাই করতে চাই।”
পূর্বতন সংবিধান এবং রাষ্ট্রকাঠামোকে পুরোপুরি বদলে দেওয়ার মাধ্যমে ফ্রান্সের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠা হলেও এনসিপির ঘোষণাপত্রে এটাকে ‘ধারণাগত’ বিষয় হিসেবে রাখার কথা বলেন তুহিন খান। যা পরবর্তী সময় নানান রাজনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে দলটি।
তুহিন খান বলেন, “আমরা ফ্রান্স বা অন্যান্য দেশের মত সরাসরি সেকেন্ড রিপাবলিকে যাচ্ছি না হয়ত, কিন্তু আমাদের ঘোষণাপত্রে সেকেন্ড রিপাবলিকে যাওয়ার মত উপাদান আছে।” এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটির সুপারিশগুলোকে ভিত্তি ধরে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রচেষ্টা চালানোর কথা বলেন তিনি।
গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান রচনার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “বিদ্যমান সংবিধান যে মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি, তা জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। আবার বাহাত্তর সালে যাদের নিয়ে গণপরিষদ গঠন করা হয়েছিল, তারা কিন্তু গণপরিষদের জন্য নির্বাচিত ছিলেন না।”
‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ হলে নানা খাতে কেমন উদ্যোগ নেওয়া হবে, তার ধারণা ঘোষণাপত্রে দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব।”

গত বছর অক্টোবরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভের সময় পাঁচ দফা দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যেখানে প্রথম ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সামনে আনে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটি। আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার অভিজ্ঞতার পর ভোটের রাজনীতিতে নামা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন দল এনসিপি এবার তাদের ঘোষণাপত্রে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার জানাল।
‘চেনা অচেনা ইউরোপ’ বইয়ে ফ্রান্সে মোট পাঁচবার রিপাবলিক ঘোষণার বিষয়ে বিস্তারিত লিখেছেন সাবেক সচিব ও লেখক এ কে আবদুল আউয়াল মজুমদার। ফ্রান্সে প্রথম থেকে দ্বিতীয় রিপাবলিকের যাত্রাপথ তুলে ধরে তিনি লিখেছেন, “১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ফ্রান্স ছিল রাজ শাসনের রাষ্ট্র। ১৭৮৯ থেকে ১৭৯৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সংঘটিত হয় ফরাসি বিপ্লব। বিপ্লবে আম জনতা বিজয় লাভ করে। ফলে রাজশাসন নির্বাসিত হয়। বিপ্লব চলমান থাকা অবস্থায় ১৭৯২ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সকে প্রথম রিপাবলিক বা জনতার শাসনের রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে এ পর্ব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। প্রথম রিপাবলিকের মেয়াদ ছিল ১৭৯২ থেকে ১৮০৪ খ্রিষ্টাব্দ।”
১৮০৪ সালে দেশটি আবার স্বৈরতান্ত্রিক রাজশাসনের কবলে পড়ার কথা তুলে ধরে ধরে তিনি লেখেন, “দেশটিতে ১৮০৪ থেকে ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এক অস্থিতিশীল রাজতন্ত্র ঘুরপাক খেতে থাকে। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে দেশটি স্বৈরশাসনের রাহুমুক্ত হয়। ১৮৪৮ খ্রিষ্টাব্দে দেশটিকে দ্বিতীয় রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ পর্ব স্থায়ী হয় ১৮৪৮ থেকে ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত।”
সেকেন্ড রিপাবলিকের ধারণার বিষয়ে আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, সেকেন্ড রিপাবলিকের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল ফ্রান্স। স্পেন, অস্ট্রিয়া আছে। আফ্রিকাতেও আরও দেশ আছে। এখন যেটা ফ্রান্স আছে, সেটা পঞ্চম রিপাবলিক। আগে আরও চারটা ছিল। একটা রিপাবলিক যখন এসেছে, তখন আগের সবকিছু বাতিল করে দিয়েছে। আগের সংবিধান বাতিল করে দিয়ে নতুন সংবিধান রচনা করেছে, সবকিছু নতুনভাবে শুরু করেছে।”
আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, “আমাদের এখানেও সেকেন্ড রিপাবলিক মানে হল, গত ৫৩ বছরের যা আছে, সেটাকে মুছে ফেলে নতুন শপথ নিয়ে নতুন অঙ্গীকারে যাত্রা শুরু করা। এটাতে সংবিধান আসবে, রাষ্ট্রকাঠামো আসবে- অর্থাৎ, নবযাত্রা। আগেরটা বাদ, আমরা নতুন করে শুরু করলাম, এটার নাম হল সেকেন্ড রিপাবলিক।”
বাংলাদেশে সেকেন্ড রিপাবলিকের প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আসলে এটা জাতীয় নির্বাচনের আগে বলা মুশকিল। এখন জাতীয় নির্বাচন হলে কী দাঁড়ায়, কোথায় দাঁড়ায়…। ক্ষমতায় এলেও যে আপনি করতে পারবেন, তাও না। কারণ, অন্যরাতো চ্যালেঞ্জ করবে। অন্যরাতো এই তত্ত্বে বিশ্বাস করে না। যেমন- বিএনপি এই তত্ত্বে বিশ্বাস করে না। সুতরাং প্রধান দল বিএনপিও মানতে চাইবে না। আবার এমন বিষয় আছে, অন্য অনেক দেশে সম্ভব হলেও বাংলাদেশে সম্ভব না।”
তরুণদের দল ক্ষমতায় গেলেও ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি-না, সে নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, “ক্ষমতা যাওয়ার আগে করবে বলা, আর ক্ষমতায় গিয়ে করতে পারা কিন্তু দুই জিনিস। সুতরাং আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।”

নতুন দল এনসিপি’র আত্মপ্রকাশ কেমন হলো?
বেশ কিছুদিন ধরে চলা নানা জল্পনা ও রাজনৈতিক বিতর্ক পার করে অবশেষে প্রকাশ্যে এলো অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের দল। নাম জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইংরেজিতে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি, সংক্ষেপে এনসিপি। কয়েকদিন আগে থেকেই নতুন দলের নাম ও শীর্ষ পদগুলোতে কারা আসছেন, সেই খবর প্রকাশ হতে থাকে গণমাধ্যমে। আত্মপ্রকাশের সময় সেই তালিকা প্রায় অপরিবর্তিতই থাকে। আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়।
তিনটায় সময় নির্ধারিত থাকলেও অনুষ্ঠান শুরু হতে সাড়ে চারটায় গড়ায়। চার ধর্মের ধর্মগ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। নতুন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আসেন পাঁচটা নাগাদ। তার আগে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আসেন অনুষ্ঠানস্থলে। তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তারা নতুন দলকে স্বাগত জানানোর কথা বলেন।
দুইদিন আগে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক (সাবেক) সারজিস আলম বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, অন্তত দুই লাখ লোকের সমাগম ঘটিয়ে নতুন দল ও নেতাদের নাম ঘোষণা করতে চান তারা। কিন্তু, অনুষ্ঠানের জনসমাগম ততটা হয়নি বলে বিবিসি বাংলাকে ধারণা দেন একাধিক সংগঠক ও অনুষ্ঠান কাভার করতে আসা কয়েকজন সাংবাদিক। তারপরও, নতুন দলের যাত্রা শুরুর দিনে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউতে।
দুপুর থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হতে থাকেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকেও অনেক নেতাকর্মী আসেন। চট্টগ্রাম থেকে আসা দুই কর্মী জানালেন, তারা প্রায় ৫০ টি বাস ভর্তি করে এসেছেন কর্মসূচিতে যোগ দিতে। জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে নিহতদের পরিবার এবং আহতরাও সমবেত হন সেখানে।
সাধারণত বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সভার মঞ্চে চেয়ার টেবিলের ব্যবস্থা থাকে। তবে, নাগরিক পার্টির মঞ্চে সেসব রাখা হয়নি। নেতারা সবাই মঞ্চের মেঝেতেই বসেন। এটিকেও একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন কেউ কেউ।
সাদিয়া সুমি নামে এক নারী বিবিসি বাংলাকে বলেন, পুরনো রাজনৈতিক চর্চা দেখে ক্লান্ত তারা। নতুনদের কাছ থেকে নতুন চর্চার প্রত্যাশা তাদের।
সিয়াম মাহমুদ নামে অপর এক তরুণের মন্তব্য, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটানোর মধ্য দিয়েই তাদের রাজনৈতিক যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। “তারা নতুন কিছু করতে পারবেন, এ ব্যাপারে আশ্বস্ত হওয়া যায়,” যোগ করেন মি. মাহমুদ।
এনসিপি ক্ষমতায় যেতে না পারলেও সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানান, পিরোজপুর থেকে আসা বাবুল হাওলাদার।
বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের প্রতিক্রিয়া : ‘ছাত্রদের দল’ গঠন নিয়ে বিএনপি বেশ কিছুদিন ধরেই সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করলেও আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের কাছে নতুন দলটির সাফল্য কামনা করার কথা বলেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। “একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে আমি গৌরববোধ করছি, ছাত্ররা একটি জাতীয় পর্যায়ের সংগঠন করছে,” যোগ করেন তিনি। তরুণদের ভাষা ও বোঝাপড়াকে ব্যতিক্রম বলে রুহুল কবির রিজভী উল্লেখ করেন।
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সঙ্গে যে কোনো বিষয়ে আলাপ আলোচনার সুযোগ খোলা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করছে নতুন এই দল। তাদের আমন্ত্রণে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেলসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সম্প্রতি বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে জামায়াতে ইসলামী। নতুন দলের সঙ্গেও তারা আলাপ করবে কি না বা কোনো ধরনের জোটে যাবে কি না- এই প্রশ্নের জবাবে মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, আলাপ-আলোচনার পথ সবসময়ই খোলা থাকে। নতুন দলের ক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা থাকবে।


















