ঢাকা ০৮:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী! কাতারের রাজপরিবারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব অত্যাধুনিক সুবিধা রয়েছে কাকরদিয়া–তেরাদল–আলিপুর এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের আত্নপ্রকাশ

১৭ বছর আগে বিসিএসে বঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরতের নির্দেশ

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 206
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

১৭ বছর আগে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে আপিল শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। পরে আইনজীবীরা বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সর্বোচ্চ আদালত আপিল মঞ্জুর করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনকে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।

এর আগে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরত চেয়ে আপিল শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

গত বছরের ৭ নভেম্বর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে করা আপিল শুনবেন বলে আদেশে বলা হয়। এ সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

ওই বিসিএসে প্রথমবারের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন পৃথক আবেদন করেন।

সেদিন আদেশের পর আবেদনকারীদের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেছিলেন, এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১ হাজার ১৩৭ জন চূড়ান্ত সুপারিশের পর চাকরিতে প্রবেশ করবেন-এ পর্যায়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়। পরে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা হয়। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। অপর একটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া বৈধ বলেন। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে ২০১০ সাল আপিল বিভাগ রায় দেন। এই রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া সঠিক বলা হয়।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন পৃথক তিনটি আবেদন করেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ছিল না। এমনকি দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পিএসসি আইন ও বিধিতে নেই।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। প্রথম রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন। দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে। এক্ষেত্রে ২০৫ জন হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালের ১১ জুলাই রায় দেন।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে। ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

১৭ বছর আগে বিসিএসে বঞ্চিত ১১৩৭ জনের চাকরি ফেরতের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৩:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

১৭ বছর আগে ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ বিষয়ে আপিল শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। পরে আইনজীবীরা বলেন, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সর্বোচ্চ আদালত আপিল মঞ্জুর করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন। হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনকে ৯০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে।

এর আগে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ২৭তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরত চেয়ে আপিল শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

গত বছরের ৭ নভেম্বর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে করা আপিল শুনবেন বলে আদেশে বলা হয়। এ সংক্রান্ত রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

ওই বিসিএসে প্রথমবারের মৌখিক পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে ২০১০ সালের ১১ জুলাই আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন পৃথক আবেদন করেন।

সেদিন আদেশের পর আবেদনকারীদের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেছিলেন, এক-এগারোর সরকারের সময় ২৭তম বিসিএসে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১ হাজার ১৩৭ জন চূড়ান্ত সুপারিশের পর চাকরিতে প্রবেশ করবেন-এ পর্যায়ে ওই সিদ্ধান্ত হয়। পরে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে মামলা হয়। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। অপর একটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া বৈধ বলেন। দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণার হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে ২০১০ সাল আপিল বিভাগ রায় দেন। এই রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া সঠিক বলা হয়।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের পক্ষে ১৪০ জন পৃথক তিনটি আবেদন করেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। তিনি বলেন, দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ছিল না। এমনকি দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পিএসসি আইন ও বিধিতে নেই।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ জুলাই হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ২৭তম বিসিএস পরীক্ষার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের অপর একটি বেঞ্চ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করেন। প্রথম রায়ের বিরুদ্ধে নিয়োগবঞ্চিত ২৫ জন আপিল বিভাগে দুটি লিভ টু আপিল করেন। দ্বিতীয় রায়ের বিরুদ্ধে সরকার তিনটি লিভ টু আপিল করে। এক্ষেত্রে ২০৫ জন হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে ২০১০ সালের ১১ জুলাই রায় দেন।

২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি ২৭তম বিসিএসের প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৬৭ জন উত্তীর্ণ হন। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ওই বছরের ৩০ মে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ওই বছরের ১ জুলাই প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিল করে। ওই বছরের ২৯ জুলাই দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষায় ৩ হাজার ২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। পরে তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।