ঢাকা ০৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

ছাত্রদলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির
ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 306
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ রূপ নিয়েছে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ আছে। কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি যাতে আবার শুরু হতে পারে, সে জন্য ছাত্রদলের কর্মীরা গতকাল সোমবার ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে।

পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেট থেকে বহিরাগতরা একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত চারটি অ্যাম্বুলেন্সে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে রাখে। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। বিকালে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে দু্ই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কিছু গোষ্ঠী তা চালু করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা হয়। তাদের মাইকও কেড়ে নেওয়া হয়। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে অধ্যাদেশে যুক্ত করতে হবে। যারা রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, সেই শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।

এ বিষয়ে কুয়েট ছাত্রদলের কয়েকজন দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রশিবিরের অংশ এবং পতিত সরকারের ছাত্রসংগঠনের পক্ষের দু-একজন মিলে ক্যাম্পাস থেকে এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে ছাত্রদলের রাজনীতি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ফেইসবুকে পোস্টে লিখেছেন, “কুয়েটে ছাত্রদল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ স্টাইলে যে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদল নিজেদের রাজনৈতিক কবর রচনার পথেই অগ্রসর হলো।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যার পর এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যে ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, তার পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।’

কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল করে। আর  রাত ৯টার দিকে মিছিলের পর টিএসসির ‘ডাস চত্বরে’ সমাবেশ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ছাত্রদলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রশিবির
ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সংঘর্ষে উত্তাল কুয়েট

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রশিবির ও বহিরাগতদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ রূপ নিয়েছে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ আছে। কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি যাতে আবার শুরু হতে পারে, সে জন্য ছাত্রদলের কর্মীরা গতকাল সোমবার ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটায়, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’, ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’-সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করে।

পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া কুয়েটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পকেট গেট থেকে বহিরাগতরা একটি গ্রুপের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহতদের কুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে একের পর এক হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এ পর্যন্ত চারটি অ্যাম্বুলেন্সে আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে কুয়েট পকেট গেটের বাইরে বিএনপি সমর্থিত বহিরাগতরা একজন ছাত্রকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ক্যাম্পাসের ভেতর ফেলে রাখে। এরপর থেকে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

বহিরাগতরা কুয়েটের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে। কুয়েট প্রধান ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। বিকালে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে দু্ই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে

বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কিছু গোষ্ঠী তা চালু করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা হয়। তাদের মাইকও কেড়ে নেওয়া হয়। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে অধ্যাদেশে যুক্ত করতে হবে। যারা রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, সেই শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে।

এ বিষয়ে কুয়েট ছাত্রদলের কয়েকজন দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রশিবিরের অংশ এবং পতিত সরকারের ছাত্রসংগঠনের পক্ষের দু-একজন মিলে ক্যাম্পাস থেকে এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে ছাত্রদলের রাজনীতি বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ ফেইসবুকে পোস্টে লিখেছেন, “কুয়েটে ছাত্রদল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ স্টাইলে যে নৃশংস হামলা চালাচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রদল নিজেদের রাজনৈতিক কবর রচনার পথেই অগ্রসর হলো।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সন্ধ্যার পর এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘যে ছাত্রলীগ হয়ে উঠতে চাইবে, তার পরিণতি ছাত্রলীগের মতোই হবে।’

কুয়েটে হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল করে। আর  রাত ৯টার দিকে মিছিলের পর টিএসসির ‘ডাস চত্বরে’ সমাবেশ করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।