গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে ১১ নভেম্বর শনিবার স্বরণকালের অন্যতম বিক্ষোভ হয়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে।
দ্যা মিলিয়ন মার্চ ফর প্যালেস্টাইন- মিছিলটিকে ঐতিহাসিক মিছিল বলেও অভিহিত করেছেন আয়োজকরা।তারা জানিয়েছেন কর্মসূচিতে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছেন।
লন্ডনের ঐতিহাসিক হাইড পার্ক থেকে দুপুরে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেখান থেকে নানা শ্লোগানে মুখরিত মিছিলটি প্রায় চার কিলোমিটার দূরে টেমস নদীর দক্ষিণ তীরে মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে বিক্ষোভ শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
বিভিন্ন জাতি, ধর্মের মানুষের মিছিলের শ্লোগানে ছিল- “ফ্রী ফ্রী প্যালেস্টাইন”, সিসফায়ার নাও”, “ ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সী”। স্থান পেয়েছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনের পতাকা ,অসংখ্যজনের গায়ে ছিল ফিলিস্তিনী চাদর, হাতে ফ্ল্যাগ, ফেস্টুন।
আয়োজক সংগঠন স্টপ দ্য ওয়ার কোয়ালিশন জানায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস ভাড়া করে মিছিলে অংশ নিয়েছে মানুষ। বাস কোম্পানিগুলো তাদের জানিয়েছে, বাসের সব টিকিট কাটা শেষ হয়ে গেছে।
শনিবারের মিছিলের দিনটি ছিল ব্রিটেনের ঐতিহাসিক দিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের যুদ্ধবিরতি দিবস ১১ নভেম্বর। এদিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন, এদিন যেন মিছিল-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া না হয়। কিন্তু পুলিশপ্রধান তাঁর আপত্তি উপেক্ষা করে বিক্ষোভের অনুমতি দিয়েছিলেন। তবে লন্ডন আন্ডারগ্রাউন্ডের সেন্টাল লাইন বাদে প্রায় সবকটি লাইনের সার্ভিস সন্ধ্যে পাঁচটা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছিল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ রোডে বাস চলা চলাচল সীমিত সীমার মধ্যে চলেছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশ সার্ভিস বলেছে, শান্তিশৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রায় দুই হাজার অফিসার সেন্টাল লন্ডনে মোতায়েন করা ছিল। যা স্বাভাবিক সংখ্যার দ্বিগুণ। কারণ হিসাবে তারা জানিয়েছে, বিক্ষোভটি আর্মিস্টিস ডের সঙ্গে মিলে গেছে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া ষাট উর্ধ্ব সারা- কেন বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন জানতে চাইলে বলে, ইসরাইল যা করছে এটা জেনোসাইড। এই *হত্যা /*যজ্ঞ কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। বৃটেনের জনগণ যুদ্ধের বিরুদ্ধে সব সময়।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া- আমিনী তার পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে যোগ দিয়েছেন, প্রতিক্রিয়ায় জানালেন- কোন সভ্য সমাজে এরকম *হত্যা /যজ্ঞ চলতে পারে আমাদের বিশ্বাসে কষ্ট হয়। তারচেয়ে বড় কষ্ট হলো- বিশ্বনেতাদের পক্ষপাতদুষ্ট সমর্থন।
বিক্ষোভ শেষে মার্বেলাচ আন্ডারগ্রাউন্ডের সামনে লম্বা সারিতে দাড়ানো-জেরিন ফাতেহি বলেন-বিক্ষোভে যোগ দিতে পেরে শান্তিবোধ করছি। ওয়েষ্টান মিডিয়ায় এর সিকিভাগ ভাগ আসবে না জানি। কিন্তু স্যোশাল মিডিয়ার কল্যাণে গোটা বিশ্ব দেখুক-মানবতার পক্ষে দাড়িয়েছে বৃটেনের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
বাংলাদেশী-ব্রিটিশ জামান বলেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা তাদের অধিকার। ইসরাইলের নির্বিচারে মানুষ হত্যা যুদ্ধাপরাধ। আমরা এর প্রতিবাদ মিলিত হয়েছি।এনিয়ে সকলের ধারাবাহিক সোচ্চার হওয়া জরুরি।
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে এক মাস ধরে প্রতি শনিবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করে আসছেন ব্রিটেনের ফিলিস্তিনপন্থিরা।