ইস্ট লন্ডন মসজিদের চেয়ারম্যান আইয়ূব খান বলেছেন, নতুন প্রজন্মকে মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । বিশেষ করে একটি ইয়ুথ ফোরাম গঠন করে নতুন প্রজন্মকে মসজিদমুখী করার চেষ্টা চলছে । আমরা চাই সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মসজিদকে সময়োপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে । মসজিদটি যাতে যুগ যুগ কমিউনিটির মানুষের সেবা করে যেতে পারে সে জন্য এর পরিচালনায় আমরা যোগ্য নেতৃত্ব প্রস্তুত রাখতে চাই।
আইয়ুব খান লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত কথাগুলো বলেন । ২৬ মে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লন্ডন মুসলিম সেন্টারের বোর্ড রুমে প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সম্মানে এই মতবিনিময় ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মসজিদের ট্রেজারার সৈয়দ তুহেল আহমদ, গভর্ণেন্স কমপ্লায়েন্স এন্ড অডিট কমিটির চেয়ারম্যান হারুন খান ও ইস্ট লন্ডন মসজিদের হেড অব অ্যাসেটস এন্ড অপারেশন্স আসাদ জামান।
প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী, সহ-সভাপতি রহমত আলী, জেনারেল সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ, সহ-কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল কাইয়ূম, ট্রেইনিং এন্ড অর্গানাইজিং সেক্রেটারি এমরান আহমদ, মিডিয়া এন্ড আইটি সেক্রেটারি আব্দুল হান্নান, ইভেন্ট এন্ড ফ্যাসিলিটিজ সেক্রেটারি রেজাউল করিম মৃধা, নির্বাহী সদস্য আহাদ চৌধুরী বাবু, নির্বাহী সদস্য নাজমুল হোসেন, নির্বাহী সদস্য আনোয়ার শাহজাহান ও নির্বাহী সদস্য কবি শাহনাজ সুলতানা।
আইয়ুব খান আরো বলেন, বর্তমানে মসজিদে তিনটি সংস্কার ও উন্নয়নমুলক কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মধ্যে ইস্ট লন্ডন মসজিদের পুরাতন গম্বুজটি নতুন করে তৈরি করা, ইস্ট লন্ডন মসজিদের প্রবেশদ্বারে অত্যাধুনিক গেইট স্থাপন করা এবং মসজিদের মুল হলকে বামদিকে সম্প্রসারণ করা। তিনি বলেন, গম্বুজ পুনঃস্থাপনের জন্য আমাদের ৫০০ হাজার পাউন্ডের প্রয়োজন ছিলো। গত দুই বছরে আমরা ৫শ হাজার পাউন্ডের প্রতিশ্রুতি পেয়েছি। এখন কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই শুরু হবে।
আইয়ুব খান বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন, মসজিদের গম্বুজ কি এখনই পুনঃনির্মাণ করা খুব জরুরী। অনেকেই হয়তো জানেন না যে, আমরা যদি এখনই এটি পুননির্মাণ না করি তাহলে পরবর্তীতে আর করতে পারবো না । কারণ মসজিদের তিন দিকই বিলডিং ঘেরা । শুধু একটি দিক এখনও খালি আছে । এই দিকটিতে বিলডিং নির্মাণ হয়ে গেলে গম্বুজ নির্মাণের জন্য ভেতরে ঢোকার কোনো প্রবেশপথ থাকবে না। তাছাড়া এই গুম্বুজের সক্ষমতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে প্রায় ৭ বছর আগে । তাই এটি এখন পুনঃনির্মাণ করতেই হবে ।
তিনি বলেন, হোয়াইটচ্যাপেল রোড থেকে মসজিদে প্রবেশের জন্য দুটো গেইট আছে। একটি হচ্ছে ইস্ট লন্ডন মসজিদের গেইট অন্যটি লন্ডন মুসলিম সেন্টারের গেইট। লন্ডন মুসলিম সেন্টারের গেইটটি অনেক প্রশস্ত এবং অত্যাধুনিক। কিন্তু ইস্ট লন্ডন মসজিদের প্রবেশগেইটটি অনেক পুরাতন। তাই এটি অত্যাধুনিক কারুকার্যে নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া মসজিদের মূল হলটি বাম দিকে আরো সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।সম্প্রসারণ হয়ে গেলে নিচে এবং উপরতলায় অতিরিক্ত আরো ৭শ মুসল্লির (পুরুষ-মহিলা) জায়গা সংকুলান হবে। তাছাড়া এখন মসজিদের মুল মিম্বরটি ডানদিকে আছে, সম্প্রসারণ কাজ শেষ হয়ে গেলে মেহরাবটি মধ্যবর্তী স্থানে চলে আসবে।
তিনি গত রামাদ্বানে যারা মসজিদে সাহায্য করেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কমিউনিটির মানুষের দানেই আজকের ইস্ট লন্ডন মসজিদ।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালার ঘর রক্ষণাবেক্ষণের যে দায়িত্ব আমাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে তা যথাযথভাবে আঞ্জাম দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমরা মসজিদের একেকজন খাদেম ছাড়া আর কিছুই নয় । মসজিদের সেবাকার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে মসজিদকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য । আর এই জন্য এবারের নির্বাহী কমিটিতে একাধিক উপ-কমিটি গঠন করে যোগ্য ট্রাস্টিদের দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হয়েছে, যাতে আরো বেশি কাজ করা যায় ।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মসজিদের হেড অব অ্যাসেটস এন্ড অপারেশন্স আসাদ জামান বলেন, ইস্ট লন্ডন মসজিদের প্রবেশপথের মূল দরজাটি নতুন করে লাগানো হলে পুরাতন দরজার কিছু অংশ সংরক্ষণ করা হবে। তাছাড়া গম্বুজের একটি অংশও সংরক্ষণ করার চিন্তা ভাবনা আছে। (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)