বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কথা সাহিত্যিক আব্দুল মালিক ফারুক ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন। ২৮ মার্চ সোমবার সিলেটের একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মরহুমের জানাজার নামাজ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কথা সাহিত্যিক আব্দুল মালিক ফারুক এর প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- শূন্যতার পোড়া বাঁশী, জোছনায় জীবন স্পন্দন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের অংশগ্রহন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিষয়ক বই- যুদ্ধযাত্রা একাত্তর।
সিলেটের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন সবচেয়ে কম বয়সী মুক্তিযোদ্ধা ,যিনি সম্মুখ সমরেও জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন অকুতভয় সাহসিকতায়।
তার লিখিত যুদ্ধযাত্রা একাত্তর বইয়ে তিনি যুদ্ধে যাবার সময় বর্ণনা করেছে এভাবে—-‘দাদি মায়ের প্রিয় কম্বলটা ভাঁজ করে গোল বোঁচকা মতোন বেধেঁ বগলে চেপে বাড়ি থেকে বেরুই অত্যন্ত সন্তপর্ণে। বেরুই বলতে যাত্রার আগেরদিন সাঝেঁর বেলা ঘরের সবাই যখন মাগরিবের নামাজ আদায় করতে ব্যস্ত, ঠিক তখন কম্বলখানা নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখি পাশের বাড়ির কবরস্থান সংলগ্ন জঙ্গলে মোতরা ঝোপকে আগলে ঠায় দাড়িয়ে থাকা বুড়ো জারুল গাছের গোড়ায়।জারুলের ঝরে পড়া শুকনো পাতা দিয়ে ঢেকে। একপ্রস্থ জামা-প্যান্ট,টিনের একখানা ভাত খাবার থালা,এ্যালোমেলের মাঝারি সাইজের একটি জলের মগওনিয়ে লুকিয়ে রাখি কম্বলের সাথে করে। থালা ও মগ রান্নাঘর থেকে চুরি করি মা ও চাচিররা সন্ধ্যায় হাতমুখ প্রক্ষালন ও রাতের ব্যবহারের এবং খাবারের জন্য জল তুলে আনতে ঘট- কলসি নিয়ে পুকুর ঘাটে চলে গেলে সেই ফাঁকে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঐ দিন বাজার থেকে বাড়ি চলে আসি গোধুলী বেলার বেশ আগে আগেই…..। যুদ্ধযাত্রা একাত্তর,পৃষ্ঠা ১৮।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাষি, সৎ ও পরোপকারী হিসাবে সকল স্তরের মানুষের কাছে শ্রদ্ধার্ঘ ছিলেন।
মরহুম আব্দুল মালিক ফারুক সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বড়দেশ গ্রামে ১৯৫৩ সালে জন্মগ্রহন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী রাবিয়া বেগম,তিন কন্যা মহুয়া তাবাসসুম মৌরি, অমৃতা তাবাসসুম চৈতী,নন্দিতা তাবাসসুম দীপ্তিকে তার সংসার।
৫২বাংলার শোক প্রকাশ:
বাঙালির হীরন্ময় ইতিহাস মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরযোদ্ধা,কথা সাহিত্যিক আব্দুল মালিক ফারুক এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে যুক্তরাজ্য থেকে প্রচারিত অনলাইন টিভি ও পোর্টাল ৫২বাংলা(52banglatv.com।
শোক বার্তায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান ও লেখক আব্দুল মালিক ফারুক এর বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করে বলা হয়- ব্যক্তি, সমাজ সর্বপরি দেশের জন্য তার ত্যাগ, সংগ্রাম এবং চরিত জীবনে রেখে যাওয়া মানবিকগুণাবলি তাকে সমাজে অমর করে রাখবে। আজীবন ন্যায়ের পথে উচ্চকণ্ঠ থাকা সাহসী এই কলমযোদ্ধা অগণিত পাঠকের মনেও শ্রদ্ধা ভালোবাসায় বেচেঁ থাকবেন । ৫২বাংলা পরিবার মরহুম আব্দুল মালিক ফারুক এর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে।