সিলেটের গোলাপগঞ্জে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। সোমবার রাতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার এসআই মহরম আলী বাদী হয়ে এ মামলা (মামলা নং-০৬) দায়ের করেন। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৩০০/৪০০ জনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে তাৎক্ষণিক কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ফুলবাড়ি ইউনিয়নের রফিপুর দক্ষিণ মাইজভাগ গ্রামের মৃত তোয়ারিছ আলীর পুত্র মো. ফলিক আহমদ (৩০), পৌর এলাকার দীঘিরপার গ্রামের মৃত সাদেক আলীর পুত্র মিরন আহমদ (২৮), ফুলবাড়ি টিকরপাড়া গ্রামের মৃত শফিক আহমদের পুত্র কামরান আহমদ (২৫), একই গ্রামের মৃত মস্তর আলীর পুত্র আব্দুর রহিম (৩৮)। এরআগে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় ইউপি নির্বাচনের ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যারাত ৮টার দিকে ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের কেন্দ্রের ফলাফলকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী এমরান হোসেনের সমর্থকরা বৈটিকর বাজার এলাকায় সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিতে চাইলে অবরোধকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় পুলিশ অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ২৬৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে। সংঘর্ষকালে লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের রাম্পা গ্রামের আব্দুস সালাম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। নিহত সালামের বুক ও পেটসহ সারা শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তিনি বৈটিকর বাজারে অনেক দিন ধরে সাইকেল ও রিকশার মেকানিকের কাজ করতেন।
এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী বলেন, ফুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমরান হোসেন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর পরই তার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলে আব্দুস সালাম নামেও একজন গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে এবং অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ২৬৭ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে গ্রেফতার আতঙ্কে স্থানীয় বৈটিকর বাজারের সকল দোকান পাট বন্ধ দেখা যায়। স্থানীয়দের না পেলেও সাধারন পথচারীরা বলেন, গ্রেপ্তারের ভয়ে দোকনদার সহ আশপাশ এলাকার লোকজন বাজারে আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।