‘বনগাঁওর বশর মিয়া’ খ্যাত ব্রিটেনের বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রবীন নেতা, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কর্মী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, জনাব আবুল বশর আনসারী পরলোকগমন করেছেন (ইন্না লিল্লাহ ই ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার পর ২৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে পূর্ব লন্ডনের হ্যাকনী হমারটন হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৯২ বছর। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুর সময় ছেলেমেয়েরা তাঁর পাশেই উপস্থিত ছিলেন।জনাব আনসারীর মরদেহ বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে সিলেটে তাঁর মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে ।
কমিউনিটির অত্যন্ত প্রিয়জন হিসেবে পরিচিত আনসারী শয্যাশায়ী থাকা অবস্থায় তাঁর স্বজন-সজ্জনের পাশশাপাশি ব্রিটিশ এমপি রোশনারা আলী, হাউস অব লর্ডস সদস্য ব্যারনেস পলা মন্জিলা উদ্দিন, টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগসসহ রাজনীতিক-সাংবাদিক-লেখক তথা সর্বস্থরের মানুষ তাঁকে দেখতে বিভিন্ন সময় হাসপাতালে যেতেন। কমিউনিটির জনপ্রিয় বর্ষিয়ান অসুস্থ জনাব বশরকে হাসপাতালে দেখতে এত বেশী দর্শনার্থী যেতেনে যে, কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের সাথে কথা বলার জন্য একপর্যায়ে হাসপাতালের ক্যান্টিন রুম তাঁর জন্য খুলে দিয়েছিলেন।
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ‘বন গাঁওর বশর মিয়া’ নামে পরিচিত আবুল বশর আনসারী ১৯২৭ সালের ১লা জানুয়ারী সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার বনগাঁও-এ জন্ম গ্রহন করেন।
তিনি ছিলেন একজন রাজনীতিক, কবি ও লেখক। কিশোর বয়সে অবিভক্ত ভারতে কংগ্রেসকর্মী হিসেবে রাজনীতির শুরু করেন আবুল বশর আনসারী। ব্রিটেনে বাঙালী কমিউনিটির আজকের সুদৃঢ় অবস্থানের পথ প্রদর্শকদের অন্যতম একজন তিনি।
আবুল বশর আনসারী শেষ বয়সে এসে ৭৪ বছর বয়সে লন্ডন মিডলসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতিতে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন। জনাব আনসারী ছিলেন একজন কবি ও লেখক। শেষ সময় পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন। তাঁর প্রকাশিত কবিতাসহ অন্যান্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘বিস্তৃত অতীত’, ‘গীতি কাব্য গ্রন্থ ‘এ ধরনী নাট্যশালা’ ও ‘আকাংখা’ অন্যতম।
উল্লেখ্য যে, আবুল বশর আনসারীর বড় মেয়ে জেনেথ রহমান টাওয়ার হ্যামলেটস বারায় একজন নির্বাচিত কাউন্সিলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।