ঢাকা ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

বাংলাদেশে মোদীকে প্রত্যাখ্যান এবং ভারতীয় শিল্পী কবির সুমনের আবেদন

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১
  • / 1133
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে কিংবা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে ভারতের নাগরিকরা। আর সে হিসেবে বাংলাদেশেরও একটা বিশাল জনগুষ্ঠি মোদীর বিরুদ্ধে যদি প্রচারণা করে, তাতে কি আশ্চর্য হতে হবে ? কিংবা এদেরকে দেশ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে ? কিংবা এদেরকে ছাত্র দিয়ে পিটাতে হবে ? একটা ব্যাপার এখানে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা মোদির আগমনে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন, তারাতো অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রত্যাখ্যান করছেন না , বরং স্বাগত জানাচ্ছে । কারন স্বাধীনতার এই বছরটি ঘঠা করেই পালন করছে বাঙ্গালি জাতি ।

প্রখ্যাত শিল্পী কবির সুমন একটা আবেদন রেখেছেন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি । এই আবেদনটা রেখেছেন মাত্র দু’একদিন আগে। একজন ভারতীয় বাংলা ভাষাভাষি মানুষ তিনি । তিনি তাঁর আবেদনে তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে প্রত্যাখ্যান করতে বাংলাদেশের মানুষদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন,নরেন্দ্র মোদী কিংবা তার সরকার ভারতের অন্যান্য বেশ কিছু ভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানালেও কলকাতার লাখো-কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে তিনি ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিটুকুই দেন নি । কবির সুমনই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে নরেন্দ্র মোদি কিংবা তার পার্টি বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন ।

এতো গেলো একজন কবির সুমনের কথা । নরেন্দ্র মোদীতো একজন রাজনীতিবিদ । রাজনীতি করেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন । কিন্তু তাঁর রাজনীতির মূলেই ধর্ম । পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের অন্যান্য সকল দল নরেন্দ্র মোদীকে আখ্যায়িত করেন ধর্মীয় বিভাজনকারী হিসেবে । অর্থাৎ ধর্মের নাম নিয়ে ভারতের মানুষকে তিনি কিংবা তার দল বিভাজন করছেন । এই বিভাজনের কারনেই সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে ধর্ম পাথরের মত চেপে আছে ভারতে । ধর্মের রাজনীতি যেখানে প্রকট হয়, সেখানে সাম্প্রদায়িকতা ফুঁসে উঠে।যার প্রমান আমরা দেখেছি এই বাংলাদেশেও, মাত্র ক’দিন আগে সুনামগন্জে ।

আর সেকারনেই দেখা গেছে ধর্মীয় বয়ানকে কেন্দ্র করে যারা সুযোগ নিয়েছে, তারা সবাই ঐ ধর্মীয় রাজনীতির মানুষ নন। যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের লোক। অর্থাৎ ধর্মীয় জোসকে ব্যবহার করেই লুটপাট সন্ত্রাস চালিয়েছে এই সুযোগ সন্ধানী দুবৃত্তরা। সোজা কথায় ধর্মকে যারা হাতিয়ার বানায় তারা, অর্থনীতির ধার ধারে না। ধর্মীয় অনুভূতিটাকে এরা ব্যবহার করে শুধু । ধর্মীয় জোস যেখানে জনগণকে চাঙ্গা করে, সেখানে অর্থনীতির শ্লোগান মুখ থুবড়ে পড়ে।

কবির সুমনের ভাষায় নরেন্দ্র মোদী এই জাতেরই রাজনীতিবিদ। কংগ্রেস বলি বাম দলগুলো বলি, সবাই একবাক্যে মোদির বিভিন্ন কার্যকলাপকে প্রত্যাখ্যান করছে। একজন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কিন্তু ভারতের রাজনীতির মাঠে তিনি ধোয়া তুলসি পাতা নন । গুজরাটের দাঙ্গার রক্ত তাঁর রাজনীতি থেকে উধাও হয়ে যায় নি। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীকেই চ্যালেন্জ করে পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যনার্জিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মোদী কিংবা তার দলের সকলের তুমুল সমালোচনা করছেন ।

ভারতের একটা বিশাল জনগুষ্ঠির পক্ষ থেকে সমালোচিত হওয়া কিংবা তাকে কালো পতাকা দেখানো তারই প্রাপ্য । কারণ তিনি ভারতকে এই জায়গায় দাঁড় করিয়েছেন। অন্তত একজন অসাম্প্রদায়িক দৃষ্ঠিভঙ্গির মানুষ হিসেবে আমিও এটা বিশ্বাস করি। তারপরও স্বীকার করতেই হয়, জনগণই তাঁকে নির্বাচিত করেছে, সেজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে কিংবা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে ভারতের নাগরিকরা। আর সে হিসেবে বাংলাদেশেরও একটা বিশাল জনগুষ্ঠি মোদীর বিরুদ্ধে যদি প্রচারণা করে, তাতে কি আশ্চর্য হতে হবে ? কিংবা এদেরকে দেশ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে ? কিংবা এদেরকে ছাত্র দিয়ে পিটাতে হবে ? একটা ব্যাপার এখানে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা মোদির আগমনে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন, তারাতো অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রত্যাখ্যান করছেন না , বরং স্বাগত জানাচ্ছে । কারন স্বাধীনতার এই বছরটি ঘঠা করেই পালন করছে বাঙ্গালি জাতি ।

আমরা পাকিস্থানীদের এখনও আমাদের বন্ধু ভাবতে পারি না। কারন এরা আমাদের শোষন করেছে। বাঙ্গালিরা এদের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রথমে তোলে নাই । তারাই আমাদের মানুষদের হত্যা করেছে, তারাই যুদ্ধের প্লট তৈরী করেছিলো। ঐ তারাই যুদ্ধলীন সময়ে একদিকে ধর্ষন-হত্যা-সন্ত্রাস চালিয়েছে আবার অন্যদিকে ‘মুছলমান ভাই’ বলে ধর্মীয় জোস তোলেছে। আজও পাকিস্তানীরা সেই মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নি । এরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প এখনও জিইয়ে রেখেছে, সেজন্য আজও বাংলাদেশ পাকিস্থানের বন্ধু হয়ে উঠে নি ।

সেই একাত্তরে ভারত আমাদের পাশে দাড়িয়েছে । একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের সহায়তা দিয়েছে, বাংলাদেশের লাখ লাখ শরনার্থীকে তারা আশ্রয় দিয়েছে। এ কৃতজ্ঞতা বাংলাদেশের আছে । আর সেজন্যই লন্ডন থেকে ফিরতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুও প্রথম ভারতেই গিয়েছিলেন এবং তারপর পা রেখেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে ।

সেই রাষ্ট্র বাংলাদেশ , যার অর্ধশতবার্ষিকী পালন হচ্ছে পৃথিবীর দেশে দেশে, যে দেশটার স্বাধীনতার অন্যতম স্তম্ভ ধর্ম নিরপেক্ষতা । অন্যদিকে এ বছরেই পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, যিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, যার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে সাম্প্রদায়িকতা ছায়াও মাড়াতে পারে নি, তার জন্মবার্ষিকীতে একজন সাম্প্রদায়িক নেতার অতিথি হয়ে আসা গ্রহণযোগ্য না হবারই কথা, অন্তত অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে যারা বিশ্বাস কিংবা আস্থা রাখে তারা প্রতিবাদ দেখাতেই পারে ।

এই আস্থা-বিশ্বাসকে ক্ষমতার লাঠিয়াল দিয়ে পেটানো যেতেই পারে, কিন্তু স্থব্ধ করা কি যাবে ? বাঙ্গালিদের সংগ্রাম-সাফল্যের ইতিহাসতো আর মুছে দেয়া যাবে না ।

ফারুক যোশী : কলাম লেখক, প্রধান সম্পাদক; ৫২বাংলাটিভি ডটকম

লেখকের পূর্ববর্তী কলাম

https://52banglatv.com/2021/02/26451/

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ফারুক যোশী

ফারুক যোশী; কলামিস্ট, প্রধান সম্পাদক; ৫২বাংলাটিভিডটকম
ট্যাগস :

বাংলাদেশে মোদীকে প্রত্যাখ্যান এবং ভারতীয় শিল্পী কবির সুমনের আবেদন

আপডেট সময় : ০৫:১০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে কিংবা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে ভারতের নাগরিকরা। আর সে হিসেবে বাংলাদেশেরও একটা বিশাল জনগুষ্ঠি মোদীর বিরুদ্ধে যদি প্রচারণা করে, তাতে কি আশ্চর্য হতে হবে ? কিংবা এদেরকে দেশ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে ? কিংবা এদেরকে ছাত্র দিয়ে পিটাতে হবে ? একটা ব্যাপার এখানে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা মোদির আগমনে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন, তারাতো অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রত্যাখ্যান করছেন না , বরং স্বাগত জানাচ্ছে । কারন স্বাধীনতার এই বছরটি ঘঠা করেই পালন করছে বাঙ্গালি জাতি ।

প্রখ্যাত শিল্পী কবির সুমন একটা আবেদন রেখেছেন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি । এই আবেদনটা রেখেছেন মাত্র দু’একদিন আগে। একজন ভারতীয় বাংলা ভাষাভাষি মানুষ তিনি । তিনি তাঁর আবেদনে তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকে প্রত্যাখ্যান করতে বাংলাদেশের মানুষদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন,নরেন্দ্র মোদী কিংবা তার সরকার ভারতের অন্যান্য বেশ কিছু ভাষাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানালেও কলকাতার লাখো-কোটি মানুষের ভাষা বাংলাকে তিনি ধ্রুপদি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতিটুকুই দেন নি । কবির সুমনই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে নরেন্দ্র মোদি কিংবা তার পার্টি বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে উল্লেখ করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেন ।

এতো গেলো একজন কবির সুমনের কথা । নরেন্দ্র মোদীতো একজন রাজনীতিবিদ । রাজনীতি করেই তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন । কিন্তু তাঁর রাজনীতির মূলেই ধর্ম । পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের অন্যান্য সকল দল নরেন্দ্র মোদীকে আখ্যায়িত করেন ধর্মীয় বিভাজনকারী হিসেবে । অর্থাৎ ধর্মের নাম নিয়ে ভারতের মানুষকে তিনি কিংবা তার দল বিভাজন করছেন । এই বিভাজনের কারনেই সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে ধর্ম পাথরের মত চেপে আছে ভারতে । ধর্মের রাজনীতি যেখানে প্রকট হয়, সেখানে সাম্প্রদায়িকতা ফুঁসে উঠে।যার প্রমান আমরা দেখেছি এই বাংলাদেশেও, মাত্র ক’দিন আগে সুনামগন্জে ।

আর সেকারনেই দেখা গেছে ধর্মীয় বয়ানকে কেন্দ্র করে যারা সুযোগ নিয়েছে, তারা সবাই ঐ ধর্মীয় রাজনীতির মানুষ নন। যাদেরকে আটক করা হয়েছে, তাদের অধিকাংশই ক্ষমতাসীন দলের লোক। অর্থাৎ ধর্মীয় জোসকে ব্যবহার করেই লুটপাট সন্ত্রাস চালিয়েছে এই সুযোগ সন্ধানী দুবৃত্তরা। সোজা কথায় ধর্মকে যারা হাতিয়ার বানায় তারা, অর্থনীতির ধার ধারে না। ধর্মীয় অনুভূতিটাকে এরা ব্যবহার করে শুধু । ধর্মীয় জোস যেখানে জনগণকে চাঙ্গা করে, সেখানে অর্থনীতির শ্লোগান মুখ থুবড়ে পড়ে।

কবির সুমনের ভাষায় নরেন্দ্র মোদী এই জাতেরই রাজনীতিবিদ। কংগ্রেস বলি বাম দলগুলো বলি, সবাই একবাক্যে মোদির বিভিন্ন কার্যকলাপকে প্রত্যাখ্যান করছে। একজন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কিন্তু ভারতের রাজনীতির মাঠে তিনি ধোয়া তুলসি পাতা নন । গুজরাটের দাঙ্গার রক্ত তাঁর রাজনীতি থেকে উধাও হয়ে যায় নি। সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীকেই চ্যালেন্জ করে পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যনার্জিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা মোদী কিংবা তার দলের সকলের তুমুল সমালোচনা করছেন ।

ভারতের একটা বিশাল জনগুষ্ঠির পক্ষ থেকে সমালোচিত হওয়া কিংবা তাকে কালো পতাকা দেখানো তারই প্রাপ্য । কারণ তিনি ভারতকে এই জায়গায় দাঁড় করিয়েছেন। অন্তত একজন অসাম্প্রদায়িক দৃষ্ঠিভঙ্গির মানুষ হিসেবে আমিও এটা বিশ্বাস করি। তারপরও স্বীকার করতেই হয়, জনগণই তাঁকে নির্বাচিত করেছে, সেজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতিকে কিংবা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করার অধিকার রাখে ভারতের নাগরিকরা। আর সে হিসেবে বাংলাদেশেরও একটা বিশাল জনগুষ্ঠি মোদীর বিরুদ্ধে যদি প্রচারণা করে, তাতে কি আশ্চর্য হতে হবে ? কিংবা এদেরকে দেশ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে ? কিংবা এদেরকে ছাত্র দিয়ে পিটাতে হবে ? একটা ব্যাপার এখানে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যারা মোদির আগমনে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন, তারাতো অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রত্যাখ্যান করছেন না , বরং স্বাগত জানাচ্ছে । কারন স্বাধীনতার এই বছরটি ঘঠা করেই পালন করছে বাঙ্গালি জাতি ।

আমরা পাকিস্থানীদের এখনও আমাদের বন্ধু ভাবতে পারি না। কারন এরা আমাদের শোষন করেছে। বাঙ্গালিরা এদের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রথমে তোলে নাই । তারাই আমাদের মানুষদের হত্যা করেছে, তারাই যুদ্ধের প্লট তৈরী করেছিলো। ঐ তারাই যুদ্ধলীন সময়ে একদিকে ধর্ষন-হত্যা-সন্ত্রাস চালিয়েছে আবার অন্যদিকে ‘মুছলমান ভাই’ বলে ধর্মীয় জোস তোলেছে। আজও পাকিস্তানীরা সেই মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নি । এরা সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প এখনও জিইয়ে রেখেছে, সেজন্য আজও বাংলাদেশ পাকিস্থানের বন্ধু হয়ে উঠে নি ।

সেই একাত্তরে ভারত আমাদের পাশে দাড়িয়েছে । একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে, প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের সহায়তা দিয়েছে, বাংলাদেশের লাখ লাখ শরনার্থীকে তারা আশ্রয় দিয়েছে। এ কৃতজ্ঞতা বাংলাদেশের আছে । আর সেজন্যই লন্ডন থেকে ফিরতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুও প্রথম ভারতেই গিয়েছিলেন এবং তারপর পা রেখেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশে ।

সেই রাষ্ট্র বাংলাদেশ , যার অর্ধশতবার্ষিকী পালন হচ্ছে পৃথিবীর দেশে দেশে, যে দেশটার স্বাধীনতার অন্যতম স্তম্ভ ধর্ম নিরপেক্ষতা । অন্যদিকে এ বছরেই পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, যিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, যার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে সাম্প্রদায়িকতা ছায়াও মাড়াতে পারে নি, তার জন্মবার্ষিকীতে একজন সাম্প্রদায়িক নেতার অতিথি হয়ে আসা গ্রহণযোগ্য না হবারই কথা, অন্তত অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে যারা বিশ্বাস কিংবা আস্থা রাখে তারা প্রতিবাদ দেখাতেই পারে ।

এই আস্থা-বিশ্বাসকে ক্ষমতার লাঠিয়াল দিয়ে পেটানো যেতেই পারে, কিন্তু স্থব্ধ করা কি যাবে ? বাঙ্গালিদের সংগ্রাম-সাফল্যের ইতিহাসতো আর মুছে দেয়া যাবে না ।

ফারুক যোশী : কলাম লেখক, প্রধান সম্পাদক; ৫২বাংলাটিভি ডটকম

লেখকের পূর্ববর্তী কলাম

https://52banglatv.com/2021/02/26451/