মুসলিম বিশ্বের প্রধান সংগঠন ওআইসি’র সাংগঠনিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে এবং তা কাটিয়ে উঠে সংস্কারের মাধ্যমে উত্তরণের বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতামূলক মনোভাবের বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্র সমূহ একমত প্রকাশ করে।মুসলিম বিশ্বের চাহিদা পূরণে সঠিক নেতৃত্বদানের মধ্য দিয়ে এসব সংকট উত্তরণ সম্ভব বলে সবাই ঐক্যমতে পৌছেন।
এলক্ষে সৌদি আরবের জেদ্দায় ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর ওআইসি’র সংস্কার বিষয়ক প্রথম কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিনিধ এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। উক্ত কর্মশালায় সদস্য রাষ্ট্র, ওআইসি’র অঙ্গভুক্ত সংগঠন ও সংস্থাসমুহের প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মহাপরিচালক রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসল আজম সরকারের সভাপতিত্বে তুরুস্ক ও সৌদি আরবের স্থায়ী প্রতিনিধি সহযোগী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে ওআইসি’র মহাসচিব তার বক্তব্যে বৃহত্তম এই মুসলিম সংস্থাটির সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করেন।
কর্মশালায় মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের দমন ও এর বিস্তার রোধে বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। মুসলিম দেশ সমূহের নিজেদের মধ্যে সংঘাত নিরসনে আলোচনার পথ উম্মুক্ত করা, মুসলিম রাষ্ট্রসমুহের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বিবাদমান রাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতা চালুকরণ, এবং মুসলিম রাষ্ট্র সমূহের মধ্যে বিবাদ নিরসনে সংস্থাটির জোরালো অংশগ্রহণের উপর কর্মশালায় গুরুত্বারোপ করা হয়।
ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান এবং রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন মুসলিম বিশ্বে বিরাজমান মানবিক বিপর্যয়ে সুষ্ঠু সমাধানে সংস্থাটি জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। এ কর্মশালায় বিরাজমান আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান ও নাগরিকদের সুরক্ষা এবং রোহিঙ্গা সমস্যাসহ সংস্থাটির সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। ইতিপূর্বে গত মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সন্মেলনে ওআইসি’র সংস্কার বিষয়ে সদস্য রাষ্ট্র সমূহ একমত পোষণ করলে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বাংলাদেশ তার প্রস্তাবনায় ওআইসি এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং এবিষয়ে একটি কার্যকর দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা প্রবর্তন, সদস্য রাষ্ট্রসমুহের মধ্যে বানিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি বিষয়ক নীতিমালা প্রনয়ন, সদস্য রাষ্ট্র সমূহের মানবিক বিপর্যয়ের আশু সমাধান কল্পে পদ্ধতি অবলম্বন সহ বিভিন্ন বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত প্রদান করে। ও আই সির সংস্কার বিষয়ে দ্বিতীয় কর্মশালা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমীর অধ্যক্ষ কর্মশালার একটি সেশন সঞ্চালনা করেন এবং রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মশালায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।