­
­
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ কেন?  » «   আওয়ামী লীগ নিয়ে খবর প্রকাশ বা সোশাল মিডিয়ায় লেখাও কি নিষেধ?  » «   জুলাইয়ে বাংলাদেশে গণহত্যা হয়েছে, জেনোসাইড হয়নি: চিফ প্রসিকিউটর  » «   ভুয়া ‘জুলাই যোদ্ধা’র হাতে সরকারি অনুদানের চেক  » «   কে জিতল—ভারত, না পাকিস্তান?  » «   আওয়ামী লীগের ‘কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা’র মানে কী?  » «   বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের আমদানি বাড়বে, কমবে শুল্ক  » «   আওয়ামী লীগ নিষেধাজ্ঞার ফল কী? জামায়াতের বিচার নিয়ে প্রশ্ন  » «   পা দিয়ে লিখেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকায় মানিক  » «   এখন লড়াই ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে: ফরহাদ মজহার  » «   ইতালিতে ‘জিহাদি উসকানি’র অভিযোগে দুই বাংলাদেশি যুবক আটক  » «   ভারত-পাকিস্তান সংঘাত থামলো কীভাবে, টিকবে কতদিন  » «   আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত, ৭১-এর পর দ্বিতীয়বার নিষিদ্ধ হলো  » «   ট্রাম্পের ঘোষণার পর যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করল ভারত ও পাকিস্তান  » «   সিলেট সীমান্তে ভারতের রাত্রিকালীন কারফিউ  » «  

কলমাকান্দায় ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা এক বিধবা নারী : থানায় মামলা



                                                            বিধবা নারীর ভাঙ্গা টিনের ছাপড়া ঘর

”আমার গর্ভের সন্তানের পরিচয় কি হবে ? আমার এখন কি হবে ? আমি দিন আনি দিন খায়। স্বামীকে হারলাম তিন থেকে চার বছর আগে। এখন দুই সন্তান নিয়ে দুবেলা ভাত খেতে খুবই কষ্ট হয়। আবু নামে লোকটি আমাকে গত চৈত্র মাসে আমার জীবনের সর্বনাশ করেছে। তার সন্তান আমার গর্ভে এখন। আমি এখন দিশেহারা। গ্রামে মাতব্বরা সামজিক শালিশ ডেকে আমার চিকিৎসার জন্য শুশুর কাছে ১৫ হাজার তুলে দেন। আমি টাকা পয়সা চাই না। আমি আমার গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই। আমি ন্যায় বিচার চাই।” এ কথাগুলো ৫২ বাংলাটিভির প্রতিবেদককে বলছেন নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা এক বিধবা নারী।

নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ধর্ষণের পর এক বিধবা নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। ওই বিধবা নারী এলজিইডির আর,এম,পি এর কাজ করে থাকেন। সে দুই সন্তানের জননী। উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নে এই ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে।

এ ঘটনায় বুধবার সকালে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের এক বিধবা নারী (৩৫) ধর্ষণের শিকার হয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। ধর্ষণের শিকার এক বিধবা নারীকে  নানা প্রলোভন দেখিয়ে দীন ইসলাম আবু (৪৫) তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে একাধিকবার ধর্ষণ করে।

ধর্ষণে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের মনকান্দিয়া গ্রামের মো. তারা মিয়া’র ছেলে। সে বিবাহিত ও ৪ কন্যা সন্তানের জনক। সে পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী ।

পুলিশ ও স্থানীয়, মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত বাংলা বছরের চৈত্র মাস থেকে  অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু শিশুদের খাবার, অর্থ ও পোশাকের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমের ভাঙ্গা টিনের ছাপড়া ঘরে গিয়ে বিধবা নারী সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে নানা সময়ে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু একাধিকবার বিধবা নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়। বর্তমানে তিনি প্রায় ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

ঘটনা অনুসন্ধানে জানা যায়, ধর্ষিতা বিধবা নারী (৩৫ ) পেশায় দিনমজুর শ্রমিক। তার স্বামী আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে মৃত্যু বরণ করেন। স্বামী ও নিজের কোনো জমিজমা না থাকায় কলমাকান্দার এলজিইডির আর,এম,পি এর সড়কের রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করে দুই সন্তান নিয়ে কোন রকম ভাবে জীবন যাপন করেন।  তারই প্রেক্ষিতে গত বাংলা বছরের চৈত্র মাস তার এই দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু প্রায়ই তার ঘরে যাওয়া আসা করতো। এক পর্যায়ে তার শিশুদের খাবার, অর্থ ও পোশাকের প্রলোভন দেখিয়ে বিধবা নারী সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং কাউকে না বলার জন্য বিধবা নারীকে নিষেধ করে।

ধর্ষণের শিকার হয়ে সে কাউকে কিছু না বলে চুপ থাকে। ঘটনার কয়েক মাস পেরিয়ে গেলে  শারীরিক পরিবর্তন ধরা পরলে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু  কর্তৃক একাধিকবার ধর্ষণের কথা ওই বিধবা নারী স্বীকার করে। খবরটি জানাজানি হলে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবুর পক্ষ নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে তৎপর স্থানীয় প্রভাবশালী একটি পক্ষ নেয় । পরে এ বিষয়ে বুধবার সকালে ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার খবরটি জানাজানি হলে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু গা ঢাকা দিয়েছেন।

এবিষয়ে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবু এর মুঠোফোনে একাধিকবার রিং হলেও রিসিভ করেননি।

বড়খাপন ইউপির চেয়ারম্যান একেএম হাদিছুজ্জামান হাদিছ ৫২ বাংলাটিভিকে  বলেন, এক বিধবা নারী (৩৫) ধর্ষণের শিকার হয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। ওই বিধবা নারী এলজিইডির আর,এম,পি এর কাজ করে থাকেন। সে দুই সন্তানের জননী।

এ বিষয়ে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল করিম সত্যতা নিশ্চিত করে ৫২ বাংলাটিভি কে  জানান, সামজিক সালিশ অযোগ্য অপরাধ। ইতিমধ্যেই  মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। ভিকটিমকে পুলিশ হেফাজতে গত বুধবার বিকালে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসাপাতালে তার শারীরিক পরীক্ষা- নিরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত দীন ইসলাম আবুকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন