ঢাকা ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ কেন বন্ধ করলো অন্তর্বর্তী সরকার? সাংবাদিক আনিস আলমগীর ও অভিনেত্রী শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে সরকার সমালোচক সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আটক ‘পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা করেনি’  চবি উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঢাবিতে ‘রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভ’, জুতা নিক্ষেপ লন্ডনে তারেক রহমানের শেষ কর্মসূচি ১৬ ডিসেম্বর গোলাম আজম ও নিজামীকে দেশপ্রেমিক বলায় পাবনায় প্রতিবাদ মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, ঘাতকদের বিচারের দাবি জগন্নাথ হলের সড়কে ছাত্রদের আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন

বিদ্যাব্যবসা প্রসঙ্গে

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০২:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 1111
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
শিক্ষাকে একসময় মৌলিক অধিকার ও সেবা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও বর্তমান সময়ে তা এন্টারপ্রাইজে পরিণত হয়েছে। এটি একটি করুণ বাস্তবতা।
শিক্ষাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার কোটির টাকার ব্যবসা। এর আছে নানা ধরন। এর সাথে জড়িয়ে আছে নানা চক্র।
বেসরকারি শিক্ষাখাতের মূ্ল বিবেচনা যত না শিক্ষা তারচেয়ে বেশি ব্যবসা। গ্রামে ঝলমলে বিদ্যার দোকান থেকে শহরে গড়ে ওঠা ফাইভ স্টার হোটেল মানের বিদ্যার হোটেল, বিদ্যার দোকান-পাঠ গড়ে উঠেছে। এ গুলোর মূল চালিকাশক্তি সেবা নয়, বিদ্যাব্যবসা, মুনাফা।
এর চালকরা সেক্সপিয়ারের সে সুদি ব্যবসায়ীর চেয়ে কম নন, যারা টাকা না দিতে পারলে আপনার বুকের মাংস কেটে দিতে বলতে পারেন!
করোনার কারণে অন্যান্য ব্যবসার মত বিদ্যাব্যবসাও লাটে উঠেছে। সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে এগুলোকে কেন্দ্র করে নানা প্রকারের ব্যবসাও বন্ধ।
এতদিন এ এন্টারপ্রাইজগুলোর মালিকরা ব্যবসার লাভ তাদের শিক্ষক কর্মচারিদের বেতনের বাইরে না দিলেও ব্যবসা কমে যাওয়ার সাথে সাথে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন বা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে এ খাতের বিরাট সংখ্যক মানুষ আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অনলাইনে ক্লাশ চললেও বাসায় বাসায় প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ফলে এ খাতের বিরাট সংখ্যক মানুষের মূল তাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা। এ দলে টিউশনি করে চলা শিক্ষকরা ছাড়াও ছাত্র ছাত্রীরাও আছেন। তাদের সমস্যাগুলো সত্যিই গুরুতর, বাঁচা মরার। মানবিক।
ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নানা যুক্তি উপায় তারা বের করার চেষ্ঠা করছেন। কিন্তু হু বলছে, আমাদের অভিজ্ঞতাও বলছে, এটি কোনো পক্ষের বাঁচার উপায় হলেও অপরপক্ষকে মৃত্যু ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়ার খেলা।
এতে শুধু শিশুরা আক্রান্ত হবে না, সাথে তাদের পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যরাও ঝুঁকিতে পড়বেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা ছাড়ানোর হাবে পরিণত হতে পারে। ইতোমধ্যে ইউরোপ আমেরিকার অভিজ্ঞতাও ভাল নয়।
এরই মধ্যে এইচএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার পরামর্শও কাউকে কাউকে দিতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে!
এ পরীক্ষাগুলোতে শুধু শিক্ষার্থী নন, সাথে যুক্ত থাকেন হাজার হাজার সাপোর্টিং স্টাফ। শিক্ষক, পুলিশ, অভিভাবক….
শুধু ভর্তি পরীক্ষার কথা ভাবুন। এ সময় ট্রেনে, বাসে, আবাসিক হোটেলে কী পরিমান মারাত্মক ভীড় হয়। পরীক্ষার দিনের কথা নাইবা বললাম। ভেতরে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী বাইরে অপেক্ষারত হাজার হাজার অভিভাবক! করোনার মচ্ছব হয়ে যাবে।
করোনা আক্রান্তের হার কমপক্ষে ৫% নেমে না আসা বা টীকা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা না করার উপায় নেই। আপতত অনলাইনই ভরসা। সমস্যা মোকাবিলা আপাতত অনলাইনকে মাথায় রেখেই করতে হবে, অন্তত ডিসেম্বর পর্যন্ত।
জীবনের চেয়ে স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা কোন অবস্থাতেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর শিক্ষার জন্য স্কুলই একমাত্র স্থান নয়।
ড. শোয়াইব জিবরান: কবি, লেখক। জাতিসংঘ শিশু তহবিলের সাবেক শিক্ষা পরামর্শক। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। 
আরও পড়ুন:

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিদ্যাব্যবসা প্রসঙ্গে

আপডেট সময় : ০২:৪৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
শিক্ষাকে একসময় মৌলিক অধিকার ও সেবা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও বর্তমান সময়ে তা এন্টারপ্রাইজে পরিণত হয়েছে। এটি একটি করুণ বাস্তবতা।
শিক্ষাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার কোটির টাকার ব্যবসা। এর আছে নানা ধরন। এর সাথে জড়িয়ে আছে নানা চক্র।
বেসরকারি শিক্ষাখাতের মূ্ল বিবেচনা যত না শিক্ষা তারচেয়ে বেশি ব্যবসা। গ্রামে ঝলমলে বিদ্যার দোকান থেকে শহরে গড়ে ওঠা ফাইভ স্টার হোটেল মানের বিদ্যার হোটেল, বিদ্যার দোকান-পাঠ গড়ে উঠেছে। এ গুলোর মূল চালিকাশক্তি সেবা নয়, বিদ্যাব্যবসা, মুনাফা।
এর চালকরা সেক্সপিয়ারের সে সুদি ব্যবসায়ীর চেয়ে কম নন, যারা টাকা না দিতে পারলে আপনার বুকের মাংস কেটে দিতে বলতে পারেন!
করোনার কারণে অন্যান্য ব্যবসার মত বিদ্যাব্যবসাও লাটে উঠেছে। সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ফলে এগুলোকে কেন্দ্র করে নানা প্রকারের ব্যবসাও বন্ধ।
এতদিন এ এন্টারপ্রাইজগুলোর মালিকরা ব্যবসার লাভ তাদের শিক্ষক কর্মচারিদের বেতনের বাইরে না দিলেও ব্যবসা কমে যাওয়ার সাথে সাথে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন বা কমিয়ে দিয়েছেন। ফলে এ খাতের বিরাট সংখ্যক মানুষ আর্থিক সংকটে পড়েছেন। অনলাইনে ক্লাশ চললেও বাসায় বাসায় প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ফলে এ খাতের বিরাট সংখ্যক মানুষের মূল তাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা। এ দলে টিউশনি করে চলা শিক্ষকরা ছাড়াও ছাত্র ছাত্রীরাও আছেন। তাদের সমস্যাগুলো সত্যিই গুরুতর, বাঁচা মরার। মানবিক।
ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নানা যুক্তি উপায় তারা বের করার চেষ্ঠা করছেন। কিন্তু হু বলছে, আমাদের অভিজ্ঞতাও বলছে, এটি কোনো পক্ষের বাঁচার উপায় হলেও অপরপক্ষকে মৃত্যু ঝুঁকিতে ঠেলে দেয়ার খেলা।
এতে শুধু শিশুরা আক্রান্ত হবে না, সাথে তাদের পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যরাও ঝুঁকিতে পড়বেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো করোনা ছাড়ানোর হাবে পরিণত হতে পারে। ইতোমধ্যে ইউরোপ আমেরিকার অভিজ্ঞতাও ভাল নয়।
এরই মধ্যে এইচএসসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার পরামর্শও কাউকে কাউকে দিতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে!
এ পরীক্ষাগুলোতে শুধু শিক্ষার্থী নন, সাথে যুক্ত থাকেন হাজার হাজার সাপোর্টিং স্টাফ। শিক্ষক, পুলিশ, অভিভাবক….
শুধু ভর্তি পরীক্ষার কথা ভাবুন। এ সময় ট্রেনে, বাসে, আবাসিক হোটেলে কী পরিমান মারাত্মক ভীড় হয়। পরীক্ষার দিনের কথা নাইবা বললাম। ভেতরে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী বাইরে অপেক্ষারত হাজার হাজার অভিভাবক! করোনার মচ্ছব হয়ে যাবে।
করোনা আক্রান্তের হার কমপক্ষে ৫% নেমে না আসা বা টীকা না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা না করার উপায় নেই। আপতত অনলাইনই ভরসা। সমস্যা মোকাবিলা আপাতত অনলাইনকে মাথায় রেখেই করতে হবে, অন্তত ডিসেম্বর পর্যন্ত।
জীবনের চেয়ে স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা কোন অবস্থাতেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। আর শিক্ষার জন্য স্কুলই একমাত্র স্থান নয়।
ড. শোয়াইব জিবরান: কবি, লেখক। জাতিসংঘ শিশু তহবিলের সাবেক শিক্ষা পরামর্শক। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। 
আরও পড়ুন: