ঢাকা ১২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

কলমাকান্দা- দুর্গাপুর সংযোগ সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / 1000
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নেত্রকোণার কলমাকান্দা- দুর্গাপুর  ২৪ কিলোমিটার সড়কে থামছেই না জনভোগান্তি। দিন যত যাচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোগান্তি। গেল চার বছরেই এই সড়কটিতে বেড়েছে দুর্ঘটনাও। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও পরপর দুইবার সময় বৃদ্ধির পরও এখনো নেই কাজের অগ্রগতি তাই কাজটি শঙ্কায় স্থানীয়রা । তবে তৃতীয় বার এ বছর ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে চাপা ক্ষোভ নিয়ে আগামীকাল সোমবার (৭ আগস্ট) ওই সড়কের নাজিরপুর ও মধুয়াকোনা নামকস্থানে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন কলমাকান্দা- দুর্গাপুরের আমজনতা ব্যানারে।

ইতিমধ্যেই কাজের নামে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি বিল উঠানোও হয়ে গেছে ঠিকাদারের বিল। অথচ সড়কে খানাখন্দ থেকে গর্তগুলো এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। এর ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ২৪.২০৮ কি.মি.কলমাকান্দা- দুর্গাপুর সড়কের তিনটি প্যাকেজে মোট ২৩ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭৯ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে কাজের টেন্ডার হয়। তার মধ্যে ৫ জুলাই ডলি কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২২ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৮৬৫ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে ওই বছরেই ৫ আগস্ট কাজ শুরু করেন।

হিসেব মতে ২০১৯ সালের মে মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পেরিয়ে গেছে ২০২০ সালের জুলাই মাসে। এদিকে ইতোমধ্যেই প্রথম প্যাকেজের (৯.৮৪০ মিটার) সড়কে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ২৬০ টাকার মধ্যে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় প্যাকেজেও (৭০০০ মিটার) সড়কে ৭ কোটি ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৯৯৯ টাকার মধ্যে ৬ কোটি ৯৭ হাজার ২২ হাজার ৬০৪ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাকী তৃতীয় প্যাকেজেও (৭.৩৬৪ মিটার) সড়কে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ২২ হাজার ৬০৪ টাকার মধ্যে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। অর্থাৎ চুক্তির মোট ২২ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৮৬৫ টাকার মধ্যে ১৪ কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার টাকাই উত্তোলন করা হলেও সড়ক যেনো মরণ ফাঁদই রয়ে গেছে।

সড়কটির কলমাকান্দার নাজিরপুর, দুর্গাপুরের মধুয়াকোনা, সাতাশি, প্রেসক্লাব মোড়, বুরুঙ্গা, ভাঙ্গাব্রিজ, মাকরাইল,অংশে সড়কে যানবাহনের পরিবর্তে ডিঙি চলার মতো অবস্থার তৈরী হয় । প্রতিদিন এই অংশ গুলো বড় বড় খান্দাখন্দে যান বিকল হয়ে আটকে থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এই যেনো কারো কোনা চিন্তাই নেই।

স্থানীয়রা জানান, পুরো সড়কের বেশির ভাগ এলাকাই এখনো মাটি আর সুকড়ী ফেলা। তার মধ্যে খানা খন্দগুলো বড় হতে হতে এখন পুকুরে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। নেত্রকোনা – কলমাকান্দা সড়ক (সওজ) বন্ধ থাকায় মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ -নেত্রকোনায় কলমাকান্দা থেকে এই সড়কটিই ব্যাবহার করছে। এটি বর্তমানে মহাসড়কে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই সড়কে অর্ধেক কাজ করে রেখে মানুষকে আরো ভোগান্তিতে ফেলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ।

ওই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারি ইকবাল, নুরে আলমসহ  ভুক্তভোগিরা জানান, এসব খানাখন্দে গাড়ি পড়ে গিয়ে ছোট-বড় দূর্ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন গাড়ি হঠাৎ আটকে বিকল হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই ইতিমধ্যে মারা গেছেন আবার অনেকইে জীবিত আছেন পঙ্গু হয়েই। তাই দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান তারা। তবে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন নাগাল পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে ডলি কনস্ট্রাকশনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার আবুল  হাসানের নিকট মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি ৫২ বাংলা টিভিকে জানান,  ইতিমধ্যে আমরা ২৪ কিলোমিটার মধ্যে ১৮ কিলোমিটার এ কাজ শেষ করেছি। তবে করোনা ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় বাকি ছয় কিলোমিটার কাজ শেষ করতে কিছুটা সময় লাগছে । তৃতীয় বার এ বছর ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। বাকি অংশের কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে ফেলার প্রতিশ্রুতি দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পক্ষ থেকে তিনি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোণার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান এর মোবাইলে  যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কলমাকান্দা- দুর্গাপুর সংযোগ সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই

আপডেট সময় : ০৩:১৭:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

নেত্রকোণার কলমাকান্দা- দুর্গাপুর  ২৪ কিলোমিটার সড়কে থামছেই না জনভোগান্তি। দিন যত যাচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভোগান্তি। গেল চার বছরেই এই সড়কটিতে বেড়েছে দুর্ঘটনাও। মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও পরপর দুইবার সময় বৃদ্ধির পরও এখনো নেই কাজের অগ্রগতি তাই কাজটি শঙ্কায় স্থানীয়রা । তবে তৃতীয় বার এ বছর ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে চাপা ক্ষোভ নিয়ে আগামীকাল সোমবার (৭ আগস্ট) ওই সড়কের নাজিরপুর ও মধুয়াকোনা নামকস্থানে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন কলমাকান্দা- দুর্গাপুরের আমজনতা ব্যানারে।

ইতিমধ্যেই কাজের নামে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি বিল উঠানোও হয়ে গেছে ঠিকাদারের বিল। অথচ সড়কে খানাখন্দ থেকে গর্তগুলো এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। এর ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ২৪.২০৮ কি.মি.কলমাকান্দা- দুর্গাপুর সড়কের তিনটি প্যাকেজে মোট ২৩ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩৭৯ টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে কাজের টেন্ডার হয়। তার মধ্যে ৫ জুলাই ডলি কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২২ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৮৬৫ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়ে ওই বছরেই ৫ আগস্ট কাজ শুরু করেন।

হিসেব মতে ২০১৯ সালের মে মাসে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পেরিয়ে গেছে ২০২০ সালের জুলাই মাসে। এদিকে ইতোমধ্যেই প্রথম প্যাকেজের (৯.৮৪০ মিটার) সড়কে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ২৩ হাজার ২৬০ টাকার মধ্যে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় প্যাকেজেও (৭০০০ মিটার) সড়কে ৭ কোটি ১৪ লাখ ৬২ হাজার ৯৯৯ টাকার মধ্যে ৬ কোটি ৯৭ হাজার ২২ হাজার ৬০৪ টাকা উত্তোলন করা হয়। বাকী তৃতীয় প্যাকেজেও (৭.৩৬৪ মিটার) সড়কে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ২২ হাজার ৬০৪ টাকার মধ্যে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। অর্থাৎ চুক্তির মোট ২২ কোটি ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৮৬৫ টাকার মধ্যে ১৪ কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার টাকাই উত্তোলন করা হলেও সড়ক যেনো মরণ ফাঁদই রয়ে গেছে।

সড়কটির কলমাকান্দার নাজিরপুর, দুর্গাপুরের মধুয়াকোনা, সাতাশি, প্রেসক্লাব মোড়, বুরুঙ্গা, ভাঙ্গাব্রিজ, মাকরাইল,অংশে সড়কে যানবাহনের পরিবর্তে ডিঙি চলার মতো অবস্থার তৈরী হয় । প্রতিদিন এই অংশ গুলো বড় বড় খান্দাখন্দে যান বিকল হয়ে আটকে থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এই যেনো কারো কোনা চিন্তাই নেই।

স্থানীয়রা জানান, পুরো সড়কের বেশির ভাগ এলাকাই এখনো মাটি আর সুকড়ী ফেলা। তার মধ্যে খানা খন্দগুলো বড় হতে হতে এখন পুকুরে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। নেত্রকোনা – কলমাকান্দা সড়ক (সওজ) বন্ধ থাকায় মানুষ ঢাকা-ময়মনসিংহ -নেত্রকোনায় কলমাকান্দা থেকে এই সড়কটিই ব্যাবহার করছে। এটি বর্তমানে মহাসড়কে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই সড়কে অর্ধেক কাজ করে রেখে মানুষকে আরো ভোগান্তিতে ফেলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ।

ওই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারি ইকবাল, নুরে আলমসহ  ভুক্তভোগিরা জানান, এসব খানাখন্দে গাড়ি পড়ে গিয়ে ছোট-বড় দূর্ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন গাড়ি হঠাৎ আটকে বিকল হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই ইতিমধ্যে মারা গেছেন আবার অনেকইে জীবিত আছেন পঙ্গু হয়েই। তাই দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান তারা। তবে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন নাগাল পাওয়া যায়নি।

এবিষয়ে ডলি কনস্ট্রাকশনের সাইট ইঞ্জিনিয়ার আবুল  হাসানের নিকট মুঠোফোন জানতে চাইলে তিনি ৫২ বাংলা টিভিকে জানান,  ইতিমধ্যে আমরা ২৪ কিলোমিটার মধ্যে ১৮ কিলোমিটার এ কাজ শেষ করেছি। তবে করোনা ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় বাকি ছয় কিলোমিটার কাজ শেষ করতে কিছুটা সময় লাগছে । তৃতীয় বার এ বছর ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। বাকি অংশের কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে ফেলার প্রতিশ্রুতি দেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পক্ষ থেকে তিনি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোণার এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান এর মোবাইলে  যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।