ঢাকা ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গোলাম আজম ও নিজামীকে দেশপ্রেমিক বলায় পাবনায় প্রতিবাদ মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, ঘাতকদের বিচারের দাবি জগন্নাথ হলের সড়কে ছাত্রদের আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন নির্বাচন বয়কট করছে না আওয়ামী লীগ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ঘাঁটিতে হামলা: নিহত ৬ বাংলাদেশি বিএনপি থেকে তিন দফা বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামানকে দলে নিল জামায়াত তিন দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক: ‘ষড়যন্ত্রকারীরা প্রশিক্ষিত শুটার নামিয়েছে মাঠে’ ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে চুরির ঘটনা হাদিকে গুলি: প্রধান সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ, ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার রিকশায় থাকা হাদিকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি

পবিত্র কোরআন পাকে বর্নিত সব চেয়ে প্রসিদ্ধ আয়াত শরীফের নাম আয়াতুল কুরসী

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৪:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • / 1795
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এটি কোরআনের দ্বিতীয় সুরার ২৫৫ নং আয়াত। এ আয়াতে আল্লাহ তার ক্ষমতা কতৃত্ব শ্রেষ্টত্ব ও মহাত্ব বর্ননা করেছেন। বিশ্বাস ভক্তি ও সমর্পিত অন্তরে এ আয়াত পাঠ করলে পাঠকারীর সীমাহীন ফজিলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে। আর তা এ জন্য যে ইহা পাঠের সময় আল্লাহর চরম ক্ষমতা প্রভুত্ব প্রতাপ প্রতিপত্তির পরিচয় পেয়ে পাঠকের মনে চরম নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আশা ও ভরসা অনুভুত হয়। তাই অনুবাদ সহ ইহা পাঠ করা উচিৎ যেন তা বুঝতে পারা যায়।

ফজিলত সম্পর্কে হাদীসঃ

হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমি রসুল ( সঃ) কে বলতে শুনেছি, ” যে ব্যাক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পাঠ করে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যাক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে, আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশির ঘরে, এবং আশে, পাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন।

আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদা (রাঃ) রসুল (সঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, হে আল্লাহর রসুল (সঃ) আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রসুল (সঃ) বলেছিলেন আয়াতুল কুরসী।

রসুল (সঃ) উবাই বিন কাব’কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কাছে কোরান মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন ( আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহ হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম) তারপর রসুল (সঃ) তার নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেনঃ আবুল মুনযির এই ইলমের কারনে তোমাকে ধন্যবাদ।

আবু হোরায়রা ( রাঃ) এক রাতে এক আগুন্তকে ছদকার মাল চুরি করার সময় ধরে ফেলেন এবং তাকে রসুল (সঃ) এর নিকট নিয়ে যেতে চাইলে আগুন্তক জানালেন সে খুবই অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন। দয়া পরবশ হয়ে আবু হোরায়রা ( রাঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রসুল (সঃ) এর নিকট আবু হোরায়রা ( রাঃ) গেলে রসুল (সঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার অপরাধী কি করেছে? আবু হোরায়রা চোরকে ক্ষমা করার কথা বললেন। রসুল ( সঃ) বললেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, আর সে আবার আসবে।

ঠিকই পরের রাতে আগুন্তক আবার চুরি করতে এসে ধৃত হলো। এবং তাকে রসুল (সঃ) এর দরবারে নিতে চাইলে গত রাতের মত কাকুতি মিনতি করে তার অভাবের কথা জানালো এবং শপথ করলো যে সে আর আসবে না। পরদিন রসুল (সঃ) জিজ্ঞাসা করলে চোরের শপথ করার কথা জানালেন। রসুল পাক বললেন সে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে। পরের রাতেও চোর আবার আসে এবং ধৃত হয়। আজ আর কোন ক্ষমা নয় আজ তাকে রসুল পাক (সঃ) এর দরবারে নিয়ে চাইলেন। অবস্হা বেগতিক দেখে আগুন্তক বলল আমাকে মাফ কর আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দিব যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যান দান করবেন। আবু হোরায়রা ( রাঃ) তা কি জানতে চাইলে চোর তাকে রাত্রে শয়নকাল আয়াতুল কুরসী পাঠ করে ঘুমাতে বলল। তাহলে আল্লাহ তোমারর জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করে দিবেন যে সকাল পর্যন্ত তোমার পাহারায় থাকবে যাতে কোন শয়তান তোমার কাছে আসতে না পারে।

এসব শুনে আবু হোরায়রা (রাঃ) চোরকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রসুল (সঃ) এর কাছে গেলে রসুল পাক (সঃ) আবু হোরায়রার নিকট চোরের কথা জানতে চাইলে তাকে রাতের ঘটনা জানিয়ে দিলেন। সব শুনে রসুল (সঃ) বললেন যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্ত সে সত্য বলেছে। রসুল (সঃ) আবু হোররায়রা ( রাঃ) কে জিজ্ঞসা করলেন তুমি কি জান সে কে? আবু হোরায়রা ( রাঃ) বললেন না। রসুল (সঃ) আবু হোরায়রা (রাঃ) কে বললেন, সে হচ্ছে শয়তান। ( সহি বুখারী নং- ২৩১১)

আয়াতুল কুরসীর অংগ রয়েছে!

উবাই বিন কাব থেকে বর্নিত রসুল (সঃ) বলেছেন,আল্লাহর কছম। যার হাতে আমার প্রানন আয়াতুল কুরসীর একটি জিব্বা ও দুটি ঠোট রয়েছে এটি আরশের পায়ার কাছে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী :সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পবিত্র কোরআন পাকে বর্নিত সব চেয়ে প্রসিদ্ধ আয়াত শরীফের নাম আয়াতুল কুরসী

আপডেট সময় : ০৪:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

এটি কোরআনের দ্বিতীয় সুরার ২৫৫ নং আয়াত। এ আয়াতে আল্লাহ তার ক্ষমতা কতৃত্ব শ্রেষ্টত্ব ও মহাত্ব বর্ননা করেছেন। বিশ্বাস ভক্তি ও সমর্পিত অন্তরে এ আয়াত পাঠ করলে পাঠকারীর সীমাহীন ফজিলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে। আর তা এ জন্য যে ইহা পাঠের সময় আল্লাহর চরম ক্ষমতা প্রভুত্ব প্রতাপ প্রতিপত্তির পরিচয় পেয়ে পাঠকের মনে চরম নিরাপত্তার নিশ্চয়তা আশা ও ভরসা অনুভুত হয়। তাই অনুবাদ সহ ইহা পাঠ করা উচিৎ যেন তা বুঝতে পারা যায়।

ফজিলত সম্পর্কে হাদীসঃ

হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমি রসুল ( সঃ) কে বলতে শুনেছি, ” যে ব্যাক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পাঠ করে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় হয়ে আছে। যে ব্যাক্তি এ আয়াতটি বিছানায় শয়নের সময় পড়বে, আল্লাহ তার ঘরে, প্রতিবেশির ঘরে, এবং আশে, পাশের সব ঘরে শান্তি বজায় রাখবেন।

আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদা (রাঃ) রসুল (সঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, হে আল্লাহর রসুল (সঃ) আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদা সম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রসুল (সঃ) বলেছিলেন আয়াতুল কুরসী।

রসুল (সঃ) উবাই বিন কাব’কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কাছে কোরান মজীদের কোন আয়াতটি সর্ব মহান? তিনি বলেছিলেন ( আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহ হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম) তারপর রসুল (সঃ) তার নিজ হাত দ্বারা তার বক্ষে আঘাত করে বলেনঃ আবুল মুনযির এই ইলমের কারনে তোমাকে ধন্যবাদ।

আবু হোরায়রা ( রাঃ) এক রাতে এক আগুন্তকে ছদকার মাল চুরি করার সময় ধরে ফেলেন এবং তাকে রসুল (সঃ) এর নিকট নিয়ে যেতে চাইলে আগুন্তক জানালেন সে খুবই অভাবী আর তার অনেক প্রয়োজন। দয়া পরবশ হয়ে আবু হোরায়রা ( রাঃ) তাকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রসুল (সঃ) এর নিকট আবু হোরায়রা ( রাঃ) গেলে রসুল (সঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার অপরাধী কি করেছে? আবু হোরায়রা চোরকে ক্ষমা করার কথা বললেন। রসুল ( সঃ) বললেন, সে তোমাকে মিথ্যা বলেছে, আর সে আবার আসবে।

ঠিকই পরের রাতে আগুন্তক আবার চুরি করতে এসে ধৃত হলো। এবং তাকে রসুল (সঃ) এর দরবারে নিতে চাইলে গত রাতের মত কাকুতি মিনতি করে তার অভাবের কথা জানালো এবং শপথ করলো যে সে আর আসবে না। পরদিন রসুল (সঃ) জিজ্ঞাসা করলে চোরের শপথ করার কথা জানালেন। রসুল পাক বললেন সে মিথ্যা বলেছে আর সে আবার আসবে। পরের রাতেও চোর আবার আসে এবং ধৃত হয়। আজ আর কোন ক্ষমা নয় আজ তাকে রসুল পাক (সঃ) এর দরবারে নিয়ে চাইলেন। অবস্হা বেগতিক দেখে আগুন্তক বলল আমাকে মাফ কর আমি তোমাকে এমন কিছু বলে দিব যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাকে কল্যান দান করবেন। আবু হোরায়রা ( রাঃ) তা কি জানতে চাইলে চোর তাকে রাত্রে শয়নকাল আয়াতুল কুরসী পাঠ করে ঘুমাতে বলল। তাহলে আল্লাহ তোমারর জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করে দিবেন যে সকাল পর্যন্ত তোমার পাহারায় থাকবে যাতে কোন শয়তান তোমার কাছে আসতে না পারে।

এসব শুনে আবু হোরায়রা (রাঃ) চোরকে ছেড়ে দিলেন। পরদিন রসুল (সঃ) এর কাছে গেলে রসুল পাক (সঃ) আবু হোরায়রার নিকট চোরের কথা জানতে চাইলে তাকে রাতের ঘটনা জানিয়ে দিলেন। সব শুনে রসুল (সঃ) বললেন যদিও সে চরম মিথ্যাবাদী কিন্ত সে সত্য বলেছে। রসুল (সঃ) আবু হোররায়রা ( রাঃ) কে জিজ্ঞসা করলেন তুমি কি জান সে কে? আবু হোরায়রা ( রাঃ) বললেন না। রসুল (সঃ) আবু হোরায়রা (রাঃ) কে বললেন, সে হচ্ছে শয়তান। ( সহি বুখারী নং- ২৩১১)

আয়াতুল কুরসীর অংগ রয়েছে!

উবাই বিন কাব থেকে বর্নিত রসুল (সঃ) বলেছেন,আল্লাহর কছম। যার হাতে আমার প্রানন আয়াতুল কুরসীর একটি জিব্বা ও দুটি ঠোট রয়েছে এটি আরশের পায়ার কাছে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী :সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট