ঢাকা ১১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে আরও ৩০ দেশের নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা খাঁচা থেকে বের হওয়া সিংহী আড়াই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে লন্ডনে ফ্লাই রবিবার, নির্জন কারাবাস থেকেই খালেদা জিয়ার ‘নানা রোগের সূচনা’ জানালেন ফখরুল মহাকাশ থেকে পবিত্র  কাবা শরিফের উজ্জ্বল ছবি আন্দোলনে থাকা প্রাথমিকের শিক্ষকদের বদলি, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা আবার অনিশ্চিত, কীভাবে ভোটার হবেন? খালেদা জিয়া ছাড়া পরিবারের কেউ ভিভিআইপি সুবিধা পাবেন না কুকুরছানা হত্যা মামলায় মায়ের সঙ্গে কারাগারে ২ বছরের শিশু খালেদা জিয়াকে লন্ডন নিতে ঢাকায় আসছেন জুবাইদা যুক্তরাজ্যের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী!

মনসা পূজোর জন্যে আবার প্রস্তুত সিকদার বাড়ি

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৯
  • / 2381
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। তিনি সর্পদেবী। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তাঁর পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তাঁর পূজা করা হয়। মানুষের মনের পশু দমনে এ দেবীর উদ্দেশ্যে পাঁঠা, কচ্ছপ, ভেড়া ফল ফলাদি বলি করা হয়। অনেক হিন্দু মনসা পূজায় পাঁঠা বলি করেন না। তারা দুধ কলা ও ফলমূল দিয়ে দেবীর পূজা করেন, এই পূজাকে ‘সাদা পূজা’ বলা হয়। যারা পাঁঠা বলি দেন তাদের পূজা লাল পূজা।

  • প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরো শিকদার বাড়িতে ২ দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী মনসাদেবীর পূজা করা হবে আগামিকাল (১৮ আগস্ট ২০১৯) l পূর্বপুরুষের আমল থেকেই অনেক খ্যাত ছিল চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার খৈয়াখালী গ্রামের শিকদার বাড়ির মনসা পূজা l দূর্গাপূজার মতোই জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করা হয় এই পূজার l দুই দিন ব্যাপী চলে নানা ধরণের আয়োজন l পূর্বপুরুষের রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় বলি ও মনসা পুঁথি পাঠ l আর দ্বিতীয় দিন থাকে দেবীর আরতি ও বন্দনা। এসবকিছুর আয়োজনের পিছনে রয়েছে, শিকদার বাড়ির উত্তরসূরিরা l তাছাড়া এভাবে প্রতিমা ও মঞ্চ করে দুই দিন ব্যাপী মনসা পূজা, চট্টগ্রামে কোথাও করা হয় না।

এই বছর সিকদার বাড়ির মনসা দেবীর প্রতিমা তৈরি করেছেন ফরিদপুর থেকে আগত মৃৎশিল্পী প্রহ্লাদ কুমার পাল।

পূর্বপুরুষের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে যারা অক্লান্ত শ্রম ও সহযোগিতা করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলো বাদল সিকদার, বিমল সিকদার, মন্টু সিকদার, পরিমল সিকদার, কৃষ্ণ সিকদার, বিশু সিকদার ও বাসু সিকদার।

পুজোর সকল কাজ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত রয়েছেন সিকদার বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম চন্দন সিকদার, নারায়ণ সিকদার, সুমন সিকদার, নির্জর সিকদার, ছোটন সিকদার, জিতু সিকদার, কাঞ্চন সিকদার, মিঠুন সিকদার ও রাসেল সিকদার।

এ পুজোর বিষয়ে, পরিমল সিকদার জানান, প্রায় একশ বছর ধরে চলে আসছে, সিকদার বাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী মনসা পূজা। সিকদার বাড়ির পুজো তে শুধু সিকদার বাড়ির লোকেরাই নয়, গোটা গ্রাম থেকেই লোক আসেন পূজা দেখতে । সমস্ত বিধি বিধান মেনে, দুই দিন ব্যাপী এই পূজাটি করা হয়, আর পূজা শেষে, মনসা দেবী, লক্ষিন্দর ও বেহুলার মূর্তি বিসর্জন ও দেয়া হয়। এই দুই দিন গোটা সিকদার বাড়ি একটি ছোট মিলনমেলায় পরিণত হয়, আর সাজানো বাড়িতে থাকে, সকল জাতি-ধর্মের লোকদের আশা যাওয়া । সব ধর্মের উর্ধে যে মানব ধর্ম, সেটাকেই বাঁচিয়ে রাখতে, প্রতিবছর এমন করেই পূজার অপেক্ষায় থাকেন গোটা সিকদার বাড়ি ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মনসা পূজোর জন্যে আবার প্রস্তুত সিকদার বাড়ি

আপডেট সময় : ০১:৩৫:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৯

মনসা হলেন একজন লৌকিক হিন্দু দেবী। তিনি সর্পদেবী। প্রধানত বাংলা অঞ্চল এবং উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তাঁর পূজা প্রচলিত আছে। সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্যলাভের উদ্দেশ্যে তাঁর পূজা করা হয়। মানুষের মনের পশু দমনে এ দেবীর উদ্দেশ্যে পাঁঠা, কচ্ছপ, ভেড়া ফল ফলাদি বলি করা হয়। অনেক হিন্দু মনসা পূজায় পাঁঠা বলি করেন না। তারা দুধ কলা ও ফলমূল দিয়ে দেবীর পূজা করেন, এই পূজাকে ‘সাদা পূজা’ বলা হয়। যারা পাঁঠা বলি দেন তাদের পূজা লাল পূজা।

  • প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরো শিকদার বাড়িতে ২ দিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী শ্রী শ্রী মনসাদেবীর পূজা করা হবে আগামিকাল (১৮ আগস্ট ২০১৯) l পূর্বপুরুষের আমল থেকেই অনেক খ্যাত ছিল চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার খৈয়াখালী গ্রামের শিকদার বাড়ির মনসা পূজা l দূর্গাপূজার মতোই জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে আয়োজন করা হয় এই পূজার l দুই দিন ব্যাপী চলে নানা ধরণের আয়োজন l পূর্বপুরুষের রীতি অনুযায়ী প্রতিবছর প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় বলি ও মনসা পুঁথি পাঠ l আর দ্বিতীয় দিন থাকে দেবীর আরতি ও বন্দনা। এসবকিছুর আয়োজনের পিছনে রয়েছে, শিকদার বাড়ির উত্তরসূরিরা l তাছাড়া এভাবে প্রতিমা ও মঞ্চ করে দুই দিন ব্যাপী মনসা পূজা, চট্টগ্রামে কোথাও করা হয় না।

এই বছর সিকদার বাড়ির মনসা দেবীর প্রতিমা তৈরি করেছেন ফরিদপুর থেকে আগত মৃৎশিল্পী প্রহ্লাদ কুমার পাল।

পূর্বপুরুষের এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে যারা অক্লান্ত শ্রম ও সহযোগিতা করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলো বাদল সিকদার, বিমল সিকদার, মন্টু সিকদার, পরিমল সিকদার, কৃষ্ণ সিকদার, বিশু সিকদার ও বাসু সিকদার।

পুজোর সকল কাজ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিয়োজিত রয়েছেন সিকদার বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম চন্দন সিকদার, নারায়ণ সিকদার, সুমন সিকদার, নির্জর সিকদার, ছোটন সিকদার, জিতু সিকদার, কাঞ্চন সিকদার, মিঠুন সিকদার ও রাসেল সিকদার।

এ পুজোর বিষয়ে, পরিমল সিকদার জানান, প্রায় একশ বছর ধরে চলে আসছে, সিকদার বাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী মনসা পূজা। সিকদার বাড়ির পুজো তে শুধু সিকদার বাড়ির লোকেরাই নয়, গোটা গ্রাম থেকেই লোক আসেন পূজা দেখতে । সমস্ত বিধি বিধান মেনে, দুই দিন ব্যাপী এই পূজাটি করা হয়, আর পূজা শেষে, মনসা দেবী, লক্ষিন্দর ও বেহুলার মূর্তি বিসর্জন ও দেয়া হয়। এই দুই দিন গোটা সিকদার বাড়ি একটি ছোট মিলনমেলায় পরিণত হয়, আর সাজানো বাড়িতে থাকে, সকল জাতি-ধর্মের লোকদের আশা যাওয়া । সব ধর্মের উর্ধে যে মানব ধর্ম, সেটাকেই বাঁচিয়ে রাখতে, প্রতিবছর এমন করেই পূজার অপেক্ষায় থাকেন গোটা সিকদার বাড়ি ।