ঢাকা ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সরকার সমালোচক সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আটক ‘পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যা করেনি’  চবি উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঢাবিতে ‘রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভ’, জুতা নিক্ষেপ লন্ডনে তারেক রহমানের শেষ কর্মসূচি ১৬ ডিসেম্বর গোলাম আজম ও নিজামীকে দেশপ্রেমিক বলায় পাবনায় প্রতিবাদ মিরপুরের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল, ঘাতকদের বিচারের দাবি জগন্নাথ হলের সড়কে ছাত্রদের আঁকা গোলাম আজমদের ছবি মুছে দিল প্রশাসন নির্বাচন বয়কট করছে না আওয়ামী লীগ সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী ঘাঁটিতে হামলা: নিহত ৬ বাংলাদেশি বিএনপি থেকে তিন দফা বহিষ্কৃত আখতারুজ্জামানকে দলে নিল জামায়াত

সিলেটে বন্যার পানি বাড়ছেই

৫২ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৩:২৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯
  • / 1463
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সিলেটে বন্যার পানি বাড়ছেই। জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি না থামায় শুক্রবারও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকাগুলো।

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও ধলাই এবং গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব পাথর কোয়ারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় দুই লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। জেলা ও উপজেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন নিচু এলাকার। এমনকি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেটের শতাধিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদের পানি বাড়ছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ১০০টির বেশি গ্রামের মানুষ। উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া ৬০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্পট সাদা পাথর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও প্রবল স্রোতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে গত বুধবার থেকে কয়েক হাজার পর্যটক ওই পর্যটন স্পট না দেখেই ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলায় সকল ধরনের পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া ধলাই, পিয়াইন ও জাহাজ খালি অববাহিকায় পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার সবকটি হাওর তলিয়ে গেছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ গ্রামের মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে। এসব গ্রামে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় উপজেলার ৬০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সেখানে অনেক পানিবন্দি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী জানিয়েছেন, উপজেলার সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় উপজেলার সকল দফতর সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে এবং একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হচ্ছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম জানান, এখানে উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন নিচু এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দুটি পাথর কোয়ারি বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উপজেলার প্রত্যকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে মোকাবেলা করে দ্রুত রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ত্রাণসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সুত্র: জাগো নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সিলেটে বন্যার পানি বাড়ছেই

আপডেট সময় : ০৩:২৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সিলেটে বন্যার পানি বাড়ছেই। জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি না থামায় শুক্রবারও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন উপজেলার নিচু এলাকাগুলো।

নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও ধলাই এবং গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি ও জাফলং পাথর কোয়ারির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে এসব পাথর কোয়ারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় দুই লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

পানিতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। জেলা ও উপজেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন নিচু এলাকার। এমনকি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সিলেটের শতাধিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন জানান, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদের পানি বাড়ছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ১০০টির বেশি গ্রামের মানুষ। উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া ৬০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

এদিকে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্পট সাদা পাথর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও প্রবল স্রোতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে গত বুধবার থেকে কয়েক হাজার পর্যটক ওই পর্যটন স্পট না দেখেই ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলায় সকল ধরনের পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া ধলাই, পিয়াইন ও জাহাজ খালি অববাহিকায় পানি বৃদ্ধির কারণে উপজেলার সবকটি হাওর তলিয়ে গেছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ গ্রামের মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যাচ্ছে। এসব গ্রামে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ায় উপজেলার ৬০টি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। সেখানে অনেক পানিবন্দি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিজেন ব্যানার্জী জানিয়েছেন, উপজেলার সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। বন্যা মোকাবেলায় উপজেলার সকল দফতর সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে এবং একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হচ্ছে। আর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম জানান, এখানে উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন নিচু এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দুটি পাথর কোয়ারি বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিশ্বজিত কুমার পাল জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধির খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উপজেলার প্রত্যকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে মোকাবেলা করে দ্রুত রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ত্রাণসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা প্রদানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সুত্র: জাগো নিউজ