বিদেশের শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার পেছনে বাংলাদেশের শ্রমিকদের আচরণগত সমস্যা দেখছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, বাহরাইনে এক নিয়োগকর্তাকে গলা কেটে হত্যা করার পর সেখানে বাজার নষ্ট হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেটের লোকজন ঘোষণা দিয়ে মারামারি করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘জাপানের শ্রম বাজার: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ নিয়ে এক সেমিনারে আসিফ নজরুল এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, সেদিন তিনি একটা পত্রিকায় দেখেন বিদেশে বাংলাদেশের শ্রম বাজার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দোষ করা হয় সরকারের, এর দোষ এর দোষ, রিক্রুটিং এজেন্সিরও দোষ হয়।
“ওইখানে যারা আছেন, তাদের কারও কারও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানেন? বাহরাইনে লোক পাঠানো বন্ধ হয়েছে কারণ মালিকের গলা কেটে ফেলা হয়েছে।
“বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের যে বদনাম, আমি মধ্যপ্রাচ্যের দেশে আমি কয়েকবার মিটিং করেছি। আমি শুনেছি ওখানে রেগুলার ঘোষণা দিয়ে সিলেট-ব্রাহ্মণবাড়িয়া মারামারি করে।”
আসিফ নজরুল বলেন, সৌদি আরবের একটা জায়গা আছে যেখানে বাঙালি ‘টেরররা মাস্তানরা’ বাঙালিদের থেকে টাকা ছিনতাই করার জন্য, লুট করার জন্য বাসার ভেতরে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে।
“এগুলি কি মিথ্যা কথা ভাই?”, প্রশ্ন রাখেন প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা।
প্রবাসীদের সঙ্গে তার কথোপকথন তুলে ধরে আসিফ নজরুল বলেন, “আমি বললাম পুলিশকে খবর দেন না কেন? বলে, ‘পুলিশকে খবর দিলে যে দোষী আছে আর যে নির্দোষ আছে সবাইকে বাইর করে দেবে, এ জন্য কাটা হাত নিয়েও অপেক্ষা করি’।”
এই বাজে কাজগুলো ‘১০ জন’ করে কিন্তু ১০ হাজার, ১০ লাখ লোক ভোগে বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “সৌদি আরবে যদি ১০ হাজার লোক অত্যন্ত সুন্দরভাবে, নিয়ম মেনে কাজ করে, আর যদি ১০ টা লোক রাস্তাঘাটে মারামারি করে, একটা লোক যদি মার্ডার করে, ১০ হাজার লোকের ভালো কাজ কেউ দেখবে না।
“আমাদের যারা প্রবাসী ভাইয়েরা আছেন তাদেরও সচেতন হতে হবে। আপনাদের ১ লক্ষ ১০ লক্ষ লোকের জীবনকে বিপন্ন করে দিচ্ছে, দেশের ইমেজকে নষ্ট করে দিচ্ছে মাত্র ১০ টা ২০ লোক।”
প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়-সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিক এবং তিনি অনেক চেষ্টা করেছেন জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “আমি সৌদি আরবে দুইবার গিয়েছি। একটা স্টেজে যখন আমাদের বলে তোমাদের শ্রমিকরা ‘এটা’ করে, আমাদের তখন কোনো উত্তর থাকে না।
“আমরা চেষ্টা করছি—আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি আছে, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আছে। আমরা নানা ধরনের উদ্বুদ্ধকরণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”