রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশে ভ্রমণে সতর্কর্তা যুক্তরাষ্ট্রের, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা  » «   যুক্তরাজ্যে বিরল চিকিৎসা কীর্তি, ২বার ভূমিষ্ঠ হলো একই শিশু  » «   সিলেট থেকে কার্গো ফ্লাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু ২৭ এপ্রিল  » «   যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি, কমেছে আমিরাত থেকে  » «   পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিবকে কী বললো ঢাকা?  » «   বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত  » «   নির্বাচনের জন্য জামায়াত আমিরের ৩ শর্ত, ফেব্রুয়ারি ২৬-এর সময়সীমা কঠিন নয়  » «   ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ : কঠিন হবে রাজনৈতিক আশ্রয়  » «   লন্ডনে খালেদা-তারেকের সাথে জামায়াত আমিরের বৈঠক, দুই দল কী বলছে?  » «   উজানে ‘মেগা ড্যামের’ ধাক্কা সামলাতে দিল্লি-ঢাকা-থিম্পুকে জোট বাঁধার ডাক  » «   রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত ঠিক ছিলো, বিশ্বাস করেন সাকিব  » «   নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, ‘একেবারেই সন্তুষ্ট নয়’ বিএনপি  » «   গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়ালো ৫১ হাজার  » «   দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা  » «   ট্রাম্প ও শির যুদ্ধ প্রস্তুতি কী বার্তা দিচ্ছে বিশ্বকে  » «  

জাতীয় পার্টির ইফতারে হামলা: দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে, এই সরকার দ্রুত বিদায় নিলেই মঙ্গল: জি এম কাদের



মিরপুরের কাফরুলে ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, “বর্তমান সরকার সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সরকারের দ্রুত বিদায় নেওয়া দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল।”
কচুক্ষেতের একটি রেস্তোরাঁয় বুধবার (১৯ মার্চ ২০২৫) ইফতারের আগে আগে একদল লোক হামলা চালায় বলে জাতীয় পার্টির অভিযোগ।

দলটির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু জানান, বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ইফতার অনুষ্ঠানে কিছু লোকজন হামলা করে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে হামলাকারীদের ‘এলাকা ছাড়া’ করে। পরে তারা ইফতার করেন। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ স্মরণকালে কেউ দেখিনি। পুলিশ প্রশাসনকে ঢালাওভাবে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা ও মামলা মোকদ্দমা দিয়ে নিস্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। পুলিশের মনোবল ফেরাতে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। পুলিশ প্রশাসনকে অকার্যকর করা হয়েছে। যেহেতু সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দেওয়া। এই সরকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। দেশের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এই সরকার দেশকে আগুনের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।”
গত তিন নির্বাচনে অংশগ্রহণ, মন্ত্রী হওয়া ও বিরোধী দলে থেকেও আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন দিয়ে রাজনীতি করায় জাতীয় পার্টিকেও এখন ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর’ বলছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীরা। তাদের রোষানলে পড়ার শঙ্কায় প্রকাশ্যে সেভাবে দলীয় কর্মসূচিও করতে পারছে না জাতীয় পার্টি।
মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারবে কি না, সেই সন্দেহও প্রকাশ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, “এই সরকার নির্বাচনের নামে প্রহসনের আয়োজন করবে। আমাদের সাথে বৈষম্য করে এই সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। শুধু মিছিল মিটিং নয়, এই সরকারের আমলে ইফতার পার্টিও করতে দিচ্ছে না। তারা নিজেদের লোক দিয়ে একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে। সেই দলকে ক্ষমতাসীন করার জন্য সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করছে। সরকারের সকল পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে নতুন দলটি। “এমন পরিস্থিতিতে সঠিক নির্বাচন সম্ভব নয়। এই সরকারের চলে যাওয়া উচিত, তারা দেশ চালাতে পারছে না। এই সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনও দিতে পারবে না। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কিছু লোক জ্ঞানী-গুণী। কিন্তু তাদের দেশ চালানোর কোনো অভিজ্ঞতা নাই। তাদের কোনো প্রস্তাব বাস্তবসম্মত হবে না।”
দেশ ‘ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে জিএম কাদের বলেন, “এই সরকার দেশকে বিভক্ত করে ফেলছে। ইসলামী উগ্রপন্থি এবং রক্ষণশীলদের এক করেছে, আর উদারপন্থিদের ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে অপবাদ দিচ্ছে। বর্তমানে দেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের রাজনীতি করার অধিকার নেই, মনে হচ্ছে তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। দেশের অর্ধেক মানুষকে বাদ দিয়ে তারা একটি রাজনীতি করতে চাচ্ছে, তাতে দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে।”
শতাধিক লোকের হামলাকারী দলটির আক্রমণে জাতীয় পার্টি ৫০ জন নেতাকর্মী, স্থানীয় রোজাদার, সাংবাদিক ও পথচারী আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে।
চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী বলেন, “সাংবাদিকদের মোটর সাইকেলসহ কমপক্ষে ২০টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। এসময় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। ইফতারের আগ মুহূর্তে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে সন্ত্রাসীদের ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে হটিয়ে দেয়। পরে সেনাবাহিনীর দেওয়া নিরাপত্তার চাদরে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর এর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।”

এর আগে ৮ মার্চ রাজধানীর পল্লবীতে বাধার মুখে জাপার ইফতার মাহফিল ভন্ডুল হয়ে যায়। পল্লবী থানাসংলগ্ন ২ নম্বর কমিউনিটি সেন্টারে ওই ইফতার মাহফিল হওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্লোগান দিয়ে একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক ইফতার মাহফিল বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করে জাতীয় পার্টি। ওই ইফতারে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। তখন তিনি রাস্তায় ছিলেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন