বিবৃতিদাতারা এ–ও বলেন, ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ওপরেই অনেকাংশে বর্তায়। তাঁরা এসব ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
শুক্রবার [৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫] এ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
আজ ২৬ নাগরিকের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) যেভাবে ৩২ নম্বর ধানমন্ডিতে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িটি ক্রেন, বুলডোজার ব্যবহার করে নির্মমভাবে ধূলিসাৎ করা হয়েছে এবং তার সঙ্গে অন্য যেসব স্থাপনা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পূর্ণ জ্ঞাতসারে নির্মমতার সাথে ধ্বংস করা হয়েছে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তা দেখে একটি সভ্য দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা গভীরভাবে মর্মাহত, স্তম্ভিত ও লজ্জিত। এ ঘটনার আমরা বিচার চাই।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোনো ধরনের গণ–উত্তেজক সহিংসতা বা মব ভায়োলেন্স কেবলমাত্র ফ্যাসিবাদের কর্মী-সমর্থক এবং তাদের আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকদের নাশকতা সৃষ্টির প্রচেষ্টাকেই উৎসাহিত করবে। বিগত পতিত সরকার ও তার সহযোগীরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে নানা নাশকতার পরিকল্পনা যেমন করেছে, তেমনি দেশে এখন আইনের শাসন নেই বলেও দেশ-বিদেশে যে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, তার হাতও এতে শক্তিশালী হবে। তাই পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কোনো অসত্য ভাষণ বা উসকানিমূলক উক্তিকে অসিলা করে এমন কোনো কাজ করা বা তাকে সমর্থন করা চলবে না, যাতে আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ইতিমধ্যে যা ঘটানো হয়েছে, সেই সব ঘটনাকে আইনের আওতায় এনে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার করতে হবে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পৃথিবীর সব দেশেই এভাবে ঐতিহাসিক স্থান ও কীর্তিগুলো যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে সুরক্ষা করা হয়। অনেক নির্মম নির্দয় শাসকের বাসভবনও দর্শকেরা তা–ই দেখতে পান, তাদের কীর্তি-অপকীর্তি সম্পর্কেও বহু শত বছর পরও মানুষ জানতে পারেন। আমরা তাই ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সবিস্তার ব্যাখ্যা দাবি করছি এবং এর সুষ্ঠু বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলাসহ যারা দায়ী, তাদের জবাবদিহি ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, আনু মুহাম্মদ, খুশী কবির, পারভীন হাসান, ইফতেখারুজ্জামান, শামসুল হুদা, সারা হোসেন, সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সুব্রত চৌধুরী, নুর খান, শাহনাজ হুদা, নোভা আহমেদ, জোবাইদা নাসরীন, মোহম্মদ সেলিম হোসেন, শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ, জাকির হোসেন, রেজাউল করিম চৌধুরী, মনীন্দ্র কুমার নাথ, সাঈদ আহমেদ, মিনহাজুল হক চৌধুরী, আশরাফ আলী, শাহাদত আলম, রেজাউল হক, হানা শামস আহমেদ এবং মুক্তাশ্রী চাকমা।