বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি ২০২৫) এক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, “শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উল্লাস শুরুতে ইউনূস প্রশাসনের জন্য অভাবনীয় জনসমর্থনে রূপ নেয়। কিন্তু সেই মধুচন্দ্রিমার সময় শেষ হয়ে গেছে।
“অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জনপ্রত্যাশার চাপ বাড়তে শুরু করেছে। আর সেটা কেবল প্রতিশ্রুত সংস্কারের জন্য নয়, দৈনন্দিন সুশাসনের উন্নতির দাবিও আছে।”
প্রতিবছর ‘ইইউ ওয়াচলিস্ট’ প্রকাশ করে বেলজিয়ামভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিজি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোন দেশের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখতে পারে, তা প্রতিবেদনে তুল ধরা হয়।
এবারের প্রতিবেদনে মলদোভা, কলম্বিয়া, উত্তর কোরিয়া, সুদান, গ্রেট লেকস, ইউক্রেইন, সিরিয়া, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন ও ইরানের পাশপাশি নাম আছে বাংলাদেশেরও।
বাংলাদেশ অংশের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ: গণতান্ত্রিক উত্তরণে উভয় সংকট’।
এতে আইসিজির মিয়ানমার ও বাংলাদেশবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরামর্শক টমাস কিয়েন বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ সংস্কার নিয়ে দর কষাকষি করছে। এছাড়া নির্বাচনি সুবিধার জন্য বিভিন্ন পক্ষ মরিয়া হয়ে ওঠায় এই বছর রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ বাড়তে পারে।
“জিনিসপত্রের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির কারণেও অন্তর্বর্তী সরকার চাপের মধ্যে রয়েছে; যা তারা পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যবস্থাপনার উত্তরাধিকার হিসেবে।”
আইসিজি মনে করে, “অর্থনীতি আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চলমান প্রচেষ্টার সুফল পেতে বাংলাদেশের জনগণের আরও অপেক্ষা করতে হবে।”
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে টমাস কিয়েন লেখেন, “ভারতের সঙ্গে এখনো টানাপোড়েন রয়েছে আর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অদূর ভবিষ্যতে যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
“এরপরও আগামী বছর বাংলাদেশের সামনে দেশটির জাতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠন এবং এটি আরও অন্তর্ভুক্তি ও জবাবদিহিমূলক করার ‘বিরল’ সুযোগ রয়েছে”, বলেন কিয়েন।
আইসিজির পর্যবেক্ষণ বলছে, “নির্বাচনী রাজনীতিতে বাংলাদেশের জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। সংস্কার প্রক্রিয়ার সমর্থনে এবং অন্তর্বর্তী সরকার যেন বাংলাদেশকে একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে নিতে পারে, সেজন্য বিদেশি অংশীদারদের আলোচনা, কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
“গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহায়তা করার জন্য এবং ভূরাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন ইইউয়ের জন্য বিশেষ সুযোগ তৈরি করেছে।