সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ঐতিহ্যবাহি জলঢুপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ জন প্রাথমিক বৃত্তি পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীকে অনুপ্রেরণামূলক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার,১৪ নভেম্বর বিকেলে জলঢুপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি রুমে এ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক অন্ধকারে আলো শ্লোগানে শিক্ষক ও শিক্ষাবান্ধব মানবিক, অনুপ্রেরণাদায়ী কাজ করা চ্যারিটি সংগঠন সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মন্তজিম আলীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যাপক মো. কবির হোসেন।
‘মানুষ তার স্বপ্নে চেয়ে বড়‘- শিরোনামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, কৃতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেবার পাশাপাশি তাদের মনোজগতকে বিকশিত করতে সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করার বিকল্প নেই। এই সৃজনশীল আয়োজন শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আরও উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন দেখে অনুপ্রাণীত হবে।
প্রধান অতিথি সমছুল -করিমা ফাউন্ডেশনের মৌলিক ও সৃজনশীল কাজের প্রসংশা করে বলেন,এ ধরনের উদ্যোগ আলোর পথ দেখায়, সমাজকে আলোকিত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জয়নুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সাধন কৃষ্ণ নাথ, লাউতা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শিখা রাণী চন্দ এবং সুতপা চক্রবর্ত্তী, পরিচালনা কমিটির সদস্য আক্তারুল ইসলাম,শিক্ষানুরাগী আইনুল ইসলাম ও রূপক চক্রবর্তী।
অতিথিবৃন্দ সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,‘মানুষ তার স্বপ্নে চেয়ে বড়‘- শিরোনামের সৃজনশীল অনুষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের আগামী জীবনে নি:সন্দেহে প্রেরণা যোগাবে। এধরণের চর্চা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যতো বেশী হবে শিক্ষার্থীদের মানষিক বিকাশ ততো বৃদ্ধি পাবে।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন এবং আগামীর শুভকামনা জানিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে প্রয়োজন এধরণের সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে তাদের অনুপ্রেরণা দেয়া। সমছুল -করিমা ফাউন্ডেশন আগামীতেও এ ধরণে কাজে বিদ্যালয়ের পাশে থাকবে বলে আমি আশাবাদী।
তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক,পরিচালনা কমিটির সদস্য ও অভিবাবকবৃন্দের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন-সকলের সমন্বিত সহযোগিতায় আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধির প্রত্যয় রাখছি।
অনুষ্ঠানে জলঢুপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিসহ শিক্ষকদের সার্বিক অবদানের জন্য সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শিক্ষকবৃন্দকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
২০২২ সালের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় জলঢুপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি লাভ করে।
ট্যালেন্টপুল বৃত্তি প্রাপ্তরা হলেন- ইবতেশাম কবির সিয়াম,ব্রজগোপাল চন্দ, রপজিৎ চক্রবর্তী, মোহাম্মদ আহসান আদিব ,তাহমিনা ইসলাম তানহা এবং সাধারণ বৃত্তি প্রাপ্ত মেহেদি হাসান
‘এটা আমাদের শিক্ষা জীবনে প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক অনুপ্রেরণা’ উল্লেখ করে সংবর্ধিত শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত আনন্দ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে- এই অনুপ্রেরণা তাদেরকে ভবিষ্যতে আরও ভালো ফলাফল করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। শিক্ষার্থীরা সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশনের মৌলিক ও সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত হবার আগ্রহ প্রকাশ বলেছে- মানবিক ও অনুপ্রেরণাদায়ী চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার সুযোগ পেলে আমরা ভালো কাজে আরও অনুপ্রাণীত হবো।
প্রসঙ্গত অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে ২০০৪ সাল থেকে চ্যারিটেবল প্রতিষ্ঠান সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন বিভিন্ন মানবিক , শিক্ষা- শিক্ষক সম্পর্কিত এবং সমাজসেবামূলক ধারাবাহিক নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে। ফাউন্ডেশনের প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের বই প্রকাশ, ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’- প্রকল্পের মাধ্যমে অস্বচ্ছল পরিবার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণ, ‘শান্তির হাসি’-প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবীন ও অসহায়দের সামাজিকভাবে মর্যাদা ও আনন্দ সময় দানে উদ্ধুদ্ধ করণ,‘মানবিক স্বজন’ এর আওতায় নিভৃতে বঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের ঘরে খাবার সামগ্রী বিতরণ, পবিত্র রমজান মাসে সুবিধা বঞ্চিত ও নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্য ‘হাসি মুখে ইফতার’ এবং কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তায় ‘আমার স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলে কাজ করছে। মূলত সবগুলো কাজে সাধ্যমতো ফাউন্ডেশন এর একটা সমাজবান্ধব আদর্শিক চিন্তা- চেতনা ও অনুপ্রেরণার স্ফুরণের প্রত্যয় থাকে।