শিক্ষা , লেখক ও সামাজিক অনুপ্রেরণাবান্ধব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও সৃজনশীলকাজে উদ্ধুদ্ধকরণ এবং একটি দিন তাদের জন্য আনন্দময় করে রাখতে সিলেট বিয়ানীবাজারের বারইগ্রাম জামিয়া ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এক ব্যতিক্রমি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা সংগঠন অন্ধকারে আলো শ্লোগাণ নিয়ে কাজ করা সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন।
১জানুয়ারি শনিবার সকাল ১১টায় ফাউন্ডেশন এর মৌলিক ও সৃজনশীল প্রকল্প ‘সৃষ্টি ঘর’-এর উদ্যোগে ‘করি পণ- আজিবন সৎ পথে চলবো’-শিরোনামে বিশিষ্টজন ও শিক্ষকবৃন্দ শিক্ষার্থীদের কীভাবে সততা ও মানবিকতা চর্চার মাধ্যমে সমাজে কল্যাণকর কাজ করা যায় এবং নিজের সাফল্যময় জীবন গড়া জরুরী -এসব বিষয়ে মোটিভেশনাল শিক্ষাবান্ধব বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও মাদ্রাসার তিনশত শিক্ষার্থীদের হাতে মৌলিক ও সৃজনশীল চর্চার জন্য প্রত্যেকের হাতে একটি করে বিশেষ ডায়েরি প্রদান করা হয়।যেখানে তারা প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল চর্চার কাজটি করতে পারেন।
মোটিভেশনাল শিক্ষাবান্ধব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সম্পাদক, গবেষক,কবি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের সন্তান কবি ওয়ালি মাহমুদ । বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি সংগঠক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের সন্তান লুৎফুর রহমান ।
মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা মো: ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মাওলানা আমজাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জলঢুপ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাবেদ আহমদ, সমছুল-করিমা-ফাউন্ডেশন এর কো- অর্ডিনেটর ও সাংবাদিক ইবাদুর রহমান জাকির,শিক্ষানুরাগি ও অভিবাবক দেলওয়ার হোসেন এবং আবুল কালাম।
প্রধান অতিথি বলেন, একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে- প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে নিজের আত্নবিশ্বাস তৈরী করা। অর্থাৎ যেখানে যে অবস্থায় থাকি না কেন নিজেকে সততা ও মানবিকতা চর্চার মাধ্যমে নিজের সর্ব্বোচ্চ মনোবল ও প্রত্যয় নিয়ে লেগে থাকা।
পৃথিবীর কোন কাজ যেমন ছোট নয়, তেমনি সকল মহান,মহীয়সী, বিশিষ্ট বা জনপ্রিয় মানুষ ছোট থেকে তাদের শ্রম-সাধনা করে বড় হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের এই আত্নবিশ্বাস রেখে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সৃজনশীলকাজে মনোনিবেশ করতে হবে।
প্রধান অতিথি সম্পাদক, গবেষক ও কবি ওয়ালি মাহমুদ আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগুরুদের আদেশ- নিষেধ ও উপদেশ যেমন মেনে চলতে হবে তেমনি, সমাজের ভালোকাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করার মন-মানষিকতা লালন ও চর্চা করতে হবে। এসময় তিনি একজন শিক্ষার্থী কীভাবে মৌলিক ও সৃজনশীলকাজে সম্পৃক্ত হতে পারেন এবং মানবিককাজ সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে- সে সম্পর্কে নানা উদাহরণ তুলে মোটিভেশনাল বক্তব্য রাখেন।
বিশেষ অতিথি যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি সংগঠক ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের সন্তান লুৎফুর রহমান মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল চর্চার প্রসংশা করে বলেন, সমাজকে আলোকিত করতে হলে শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি তাদের মানবিক ও সেবামূলক কাজে অনুপ্রাণিত করা জরুরি।
তিনি সমছুল- করিমা ফাউন্ডেশনের মৌলিক ও সৃজনশীল প্রকল্পের প্রসংশা করে বলেন, আমার বিশ্বাস ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবান্ধব অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বিত প্রচেষ্টায় শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে। এবং তা ব্যক্তিজীবনে সফল হতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে সন্দেহ নেই।
শুরুতে অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম মাহদি ও তামিম আহমদ । পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ কামরুল ইসলাম হোমায়দি।
অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতাসহ শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থি ত ছিলেন মাওলানা মিজানুর রহমান,মাওলানা মাহবুব আহমদ, মাষ্টার হাবিবুর রহমান, মাষ্টার ইসলাম উদ্দিন,মাষ্টার আব্দুল আজিজ ও হাফিজ মাওলানা সামছুদ্দিন।
প্রসঙ্গত সমছুল-করিমা-ফাউন্ডেশন শিক্ষা , লেখক , মানবিক ও সামাজিক অনুপ্রেরণাবান্ধব একটি চ্যারিটি প্রতিষ্ঠান। অন্ধকারে আলো- শ্লোগাণ নিয়ে সমছুল-করিমা ফাউন্ডেশন ২০০৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে
নিজস্ব প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করছে।ফাউন্ডেশনের আদর্শিক চিন্তা ও চেতনা মনস্ক প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের বই প্রকাশ, ‘সবুজে হাসি সবুজে বাঁচি’– প্রকল্পের মাধ্যমে অস্বচ্ছল পরিবার ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপন, সৃজনশীল প্রকল্প- ‘সৃষ্টি ঘর’ এর আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, প্রবীন অসহায়দের জন্য –‘একচিলতে হাসি,’ ‘মানবিক স্বজন’ এর আওতায় নিভৃতে বঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের ঘরে খাবার সামগ্রী বিতরণ এবং পবিত্র রমজান মাসে সুবিধা বঞ্চিত ও নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্য ‘হাসি মুখে ইফতার’ এবং কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ‘আমার স্বপ্ন’ প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলে কাজ করছে।
মূলত: সবগুলো কাজে সাধ্যমতো ফাউন্ডেশন এর একটা সমাজবান্ধব আদর্শিক চিন্তা- চেতনা ও অনুপ্রেরণার স্ফুরণের প্রত্যয় থাকে।