বাংলাদেশী অভিবাসীদের বৃহৎ সংগঠন বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউ. এস. এ ইনক এর নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্ব সন্দেহ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে আমেরীকার বিয়ানীবাজারবাসীদের সচেতন মহল ।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টম্বর) সন্ধ্যায় ওজন পার্কের স্থানীয় একটা রেষ্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক ছাত্র নেতা সালেহ আহমদ মনিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে তারা উল্লেখ করেন, উত্তর আমেরিকায় প্রাচীনতম বাঙালি কমিউনিটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বৃহৎ সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতি ইউ. এস. এ ইনক। এই সংগঠনের বহু প্রতিক্ষিত নির্বাচন আগামী ১০ই অক্টোবর ২০২১ রোববার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন এ সমিতির কার্যক্রমে স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের ফলে অচলবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। বিগত দিনে সংগঠনটির দৃশ্যমান কার্যক্রম শূন্যের কোঠায় পৌছেছিল। উপরন্ত স্বেচ্ছাচারি নেতৃত্বের কারনে সাধারণ সদস্য গণ নির্বাচন বর্জন করেন। ফলে সমিতির কার্য্যক্রমে অচলবস্থা সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক কর্মকর্তা সদস্যগণ এবং হাজার হাজার নতুন উৎসুক বিয়ানীবাজার বাসীর আবেগ ও আকাঙ্খাকে সম্মান জানাতে এ বৎসর নির্বাচনে অংশ গ্রহনের প্রস্তুতি নেন এবং সংগঠনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটারের নাম দুইটি প্যানেলের মাধ্যমে জমা পড়ে । নতুন ভোটারদের উৎসাহ ও পুরাতনদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিয়ানীবাজার সমিতির নির্বাচনে উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
তারা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, নির্বাচনে যাতে যোগ্য নেতৃত্ব না আসতে পারে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন বিভিন্নভাবে কুটচাল করছে। এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার শুরু থেকে বিভিন্ন প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে একক আধিপত্য বজায় রেখে নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার চেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছেন।এরই ধারাবাহিকতায় বিয়ানীবাজারের সমস্ত জনগনের ও সমিতির আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের মতামতের কোন রকমের গুরুত্ব না দিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় নির্বাচনের স্থান নির্ধারণ করেন। ফলে সচেতন মহল ও ভোটারগণ উদ্বিগ্ন।
এদিকে বর্তমান কমিটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তিবর্গের সমন্বয়ে সুষ্ঠ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করেন। নির্বাচন কমিশনের সদস্য বৃন্দের প্রতি মানুষের অগাধ শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার শুরু থেকে বিভিন্ন প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে একক আধিপত্য বজায় রেখে নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার চেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছেন।এরই ধারাবাহিকতায় বিয়ানীবাজারের সমস্ত জনগনের ও সমিতির আজীবন ও সাধারণ সদস্যদের মতামতের কোন রকমের গুরুত্ব না দিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় নির্বাচনের স্থান নির্ধারণ করেন। সাধারত যেখানে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়, সেখান থেকে ভোটকেন্দ্রটি তারা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করেছেন। অথচ সেখানে এমনকি গাড়ি রাখার জায়গাও অপ্রতুল।
তাছাড়া যে জায়গাটিতে ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে, তা-ও নির্বাচনে অংশ নেয়া একটা প্যানেলের সাধারন সম্পাদকের মালিকানাধীন । এ হলটিতে যাতায়াতের জন্য কোন ট্রেন সার্ভিস নাই, বাস যোগাযোগ ও অপ্রতুল। সংগঠনের প্রায় ৫৫০০ জন ভোটারের মধ্যে প্রায় ৩০০০ ভোটার শুধু ওজন পার্কেই বসবাস করছেন। এখানে উল্লেখ করা যায়, সংগঠনটির নিজস্ব ভবনও ওজনপার্কেই মাথা উঁচু করে দাাঁড়িয়ে আছে। এছাড়া বর্তমান প্যান্ডামিকের সময় ভ্যাকসিন ছাড়া যে সমস্ত ভোটার আছেন তাদের জন্য এ হলে ভোট প্রদান করা খুবই ঝুকিপূর্ন। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সচেতন মহল ও ভোটারগরা এতে উদ্বিগ্ন।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, বিয়ানীবাজার সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে বা কেন্দ্র করে উৎসব মুখর পরিবেশে মুখরিত হয়। ঐতিহ্য বাহী বিয়ানীবাজার সমিতিটি অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে একই ছাতার নীচে অবস্থান করছে। নির্বাচনের দিন ওজনপার্কের আত্মীয় স্বজন এবং অন্যান্যদের সাথে মিলিত হয়ে উৎসব উপভোগ করে থাকেন বিয়ানীবাজারবাসী। যা বিগত বিশ বছর যাবৎ প্রথাগত নিয়মে চলে আসছে। সামাজিক প্রথা ভঙ্গ করে ভোটার বিহীন স্থানে নির্বাচনি সেন্টার স্থাপন গ্রহণ যোগ্য নয় ।
সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা ভোটাধিক্যের মাধ্যমে প্রয়োজনে দুটি সেন্টার করে ১ টি ওজন পার্কে এবং অপরটি ২য় ভোটারবহুল স্থানে স্থাপন করে মানুষের মনের ভাব গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রকাশের সুযোগ দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে তারা বলেন, যেভাবেই হোক তারাও একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে একটা নতুন নেতৃত্ব পেতে আগ্রহী। স্থবির সংগঠনটি যাতে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে আবারও প্রানচঞ্চল হয়ে উঠে তা-ই তারা আশা করছেন ।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহি উদ্দিন, মইনুল ইসলাম, ছাত্র নেতা আব্দুন নুর ও শামিম আহমদ ।