তজম্মুল আলী। একজন মানুষ গড়ার কারিগর। ভালোবেসে তার অগণিত ছাত্র-ছাত্রীরা নাম রেখেছেন ‘টি আলী স্যার’। ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭৮ সাল দীর্ঘ ৩১ বছর সিলেটের ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষককতা করেছেন। পাশাপাশি হোস্টেল সুপারেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘টি আলী স্যার’ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার জলঢুপ গ্রামে জন্মগ্রহন করলেও মানুষ গড়ার কারিগর আদর্শে ব্রতি হয়ে জীবনের পুরো সোনালী সময় কাটিয়েছেন হবিগঞ্জের ছাত্র-শিক্ষকদের মাঝে।
২০০০ সালে গুনী এই শিক্ষক মৃত্যুবরণ করেন। ২০০৯ সালে হবিগঞ্জে তার শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন’।
প্রধানত, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সন্মাননা ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষকদের সহযোগিতা করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ফাউন্ডেশনটি। এরই ধারাবাহিকতায় একশত হাজার পাউন্ডের তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে গঠন করা হয় ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে’।
২৪ আগস্ট মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয় বার্মিংহাম রিজনের প্রথম সভা। কভেনট্রি রোড়ের এম.টি বেনক্যুটিং হলে ফাউনেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফয়সল আহমদ রুহেল এর সভাপতিত্বে প্রাণবন্ত সঞ্চালনায় ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার আহমদ।
অনুষ্ঠানে টি আলী স্যার এর ছাত্র , ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ও শুভাকাঙ্খিরা শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বক্তারা মানুষ গড়ার কারিগরদের জীবিত অবস্থায় সহযোগিতা এবং তাদের কাজের স্বীকৃতিকে সমাজে অনুকরণীয়ভাবে উপস্থাপন করার মহতি কাজে সকলের সহযোগিতার আহবান জানান।
তারা বলেন, মানুষকে জ্ঞানের আলোয় সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষা অপরিহার্য। এবং এই প্রধান কাজটি মূলত শিক্ষকরাই আমাদের সকলের জন্য করেছেন। তাদের ঋণ শোধ করা না গেলেও তাদের যথাযত সম্মান জানানো এবং সাধ্যমতো তাদের মুখে হাসি ফুটাতে আমরা কাজ করতে পারি। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই কাজ সহজে আলোর মুখ দেখতে পারবে এবং এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে হয় ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে ‘ কাজ করার প্রত্যয় রাখছে।
ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রিয় কমিটির উপস্থিতিতে বার্মিংহ্যাম রিজওনের প্রথম সভায় উপস্থিত ১০জন ট্রাস্টিশীপ গ্রহন করেন। এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিত ট্রাস্টি ও শুভাকাঙ্খিরা নগদ ৩শত ৯৬ পাউন্ড তুলে শিক্ষকদের কল্যাণে গঠিত ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে‘র তহবিলে প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও পরলোকগত শিক্ষকবৃন্দের পরকালীন শান্তি ও জীবিত সকল শিক্ষকদের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মৌলানা সাহেদ আহমদ।
বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ডনার কবির আহমদ ও ট্রাস্ট্রি মো.কামরুজ্জামান, রেজাউল ইসলাম ( বিল্লাহ ),ইফতেখার আহমদ,ফারুক উদ্দিন, তারেকুল ইসলাম,সামছ উদ্দিন সামছুল , আব্দুল নূর, বশির মিয়া কাদির,কয়েছ আহমদ,মুজিবুর রহমান, সুলতান আহমেদ,আব্দুল মতিন, সাহাব উদ্দিন ও আব্দুল হক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে‘র ট্রাস্টি ফি একশত পাউন্ড। এবং ডনার ফি রাখা হয়েছে পাঁচশত পাউন্ড। এখন পর্যন্ত ট্রাস্টি ও ডনারের সংখ্য হচ্ছে ১৩৭ । শিক্ষকবান্ধব এই চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানে যে কেউ ট্রাস্টি ও ডনার হতে পারার সুযোগ রাখা হয়েছে জানিয়ে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার আহমদ জানিয়েছেন- প্রতিষ্ঠানটি কোন বিশেষ অঞ্চলের জন্য সুনিদৃষ্টভাবে কাজ করবে না। এটি সামগ্রীকভাবে শিক্ষকদের সম্মান জানিয়ে শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করবে।
তিনি যুক্তরাজ্য সহ সকল দেশের প্রবাসী শিক্ষানুরাগীদের ‘টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে‘র সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার অনুরোধ করেছেন।