২৬ জুলাই, ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা সেই স্মৃতি ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে দিনটি ঘিরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিতে পারেনি প্রশাসন।
১৯৭১ সালের ২৬ জুলাই সকালে দূর্গাপুরের বিরিশিরি থেকে কলমাকান্দায় পাকহানাদার ক্যাম্পে রসদ যাবার খবর পান মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী কমান্ডার নাজমুল হক তারার নেতৃত্বে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে নাজিরপুর বাজারের সকল প্রবেশ পথে অ্যাম্বুস করেন।
দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর পাকহানাদার বাহিনী না আসায় তাদের অ্যাম্বুস প্রত্যাহার করে তারা নিজ ক্যাম্পের পথে যাত্রা করেন। পথিমধ্যে নাজিরপুর কাচারির কাছে পাকহানাদার বাহিনী তাদের উপর অতর্কিতে গুলি বর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন ওই সাত মুক্তিযোদ্ধা।
শহীদ যারা হলেন- নেত্রকোনার ডা. আবদুল আজিজ, মো. ফজলুল হক, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মো. ইয়ার মাহমুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন।
সম্মুখ যুদ্ধ শেষে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের লেংগুরার ফুলবাড়ী সীমান্তে গনেশ্বরী নদীর পাড়ে ১১৭২নং পিলার সংলগ্ন স্থানে সমাহিত করা হয়। মহান ওই সাত আত্মত্যাগী শহীদের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা জানান , এ বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে এবার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে নাজিরপুর স্মৃতিসৌধে এবং লেঙ্গুরায় সাত শহীদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।