রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ২৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে কিছু উন্নতি : ফিলিস্তিন-লিবিয়ার অবস্থানে বাংলাদেশ  » «   সমাজসেবী হাজী আব্দুর রহমানের ইন্তেকাল  » «   বাংলা একাডেমির ‘আদব-কায়দা’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সলিমুল্লাহ খান  » «   সুরভি-র ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন  » «   বরের পিতা আওয়ামী লীগ নেতা, চট্টগ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে ‘মব’ তাণ্ডব  » «   বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ৬৩ যুগলের যৌতুকবিহীন গণবিয়ে  » «   মার্কিন অর্থায়ন বন্ধের প্রভাব : আইসিডিডিআর,বি’র সহস্রাধিক কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে  » «   ‘মধুচন্দ্রিমা শেষ’, প্রত্যাশার চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর: আইসিজি  » «   সবচেয়ে দরিদ্র জেলা মাদারীপুর, ধনী নোয়াখালী  » «   হেলিকপ্টারের সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষ : ৬৪ জন যাত্রী ও ক্রুর ভাগ্যে কী ঘটেছে  » «   ভারতীয় বিতর্কিত সিনেমা ‘ইমার্জেন্সি’: শেখ মুজিবের মুখে এ কী সংলাপ? : ব্রিটেনে বিক্ষোভ  » «   প্রধান উপদেষ্টাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানালেন নরেন্দ্র মোদি  » «   চরমোনাই পীরের অফিসে গিয়ে মির্জা ফখরুলের বৈঠক: ফ্যাসিবাদী শক্তি ঠেকাতে ঐক্যমত  » «   স্থগিত হওয়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, প্রত্যাখান সেলিম মোরশেদের  » «   দেশে সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষাপট নেই দাবি মাহফুজ আলমের  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

অসমে গো-হত্যা নিষিদ্ধ হচ্ছে : বিধানসভায় বিল এনেছে বিজেপি সরকার



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
পবিত্র কোরবানির ইদ অর্থাৎ ইদ-উল-আজহার প্রাক্কালে এবার রাজ্যের বৃহৎসংখ্যক হিন্দুর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। গো-হত্যা নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে অসম বিধানসভায় বিল এনেছে শাসক দল বিজেপি। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্বে থাকা মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা স্বয়ং বহু প্রতিক্ষিত তথা বিতর্কিত বিলটি রাজ্য বিধানসভায় উত্থাপন করেন। বিধানসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিলটি আইনে পরিণত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। বিরোধী দলীয় বিধায়করা যদিও বিলটির বাক্যে-বাক্যে সংশোধনী আনবেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। বিলটি জনজীবনে যে ব্যাপক আতঙ্ক ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এআইইউডিএফ-এর বিধায়ক আমিনুল ইসলাম তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, সরকার গবাদি পশু রক্ষার্থে আইন প্রণয়নের কথা বলছে, অথচ গোয়া, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম ইত্যাদি রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও সেখানে অবাধে গো-হত্যা হচ্ছে! সে-সকল রাজ্যে বিজেপি সরকার আইন প্রণয়ন করছে না। অসমে মুসলিমদের কোরবানি বন্ধসহ মুসলিমরা যাতে গো-মাংস ভক্ষণ করতে না-পারেন, তার-ই লক্ষ্যে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ছয়জন গো-মাংস রফতানি কারক-ই হচ্ছেন হিন্দু! গো-বলয়ে গো-হত্যা নিষিদ্ধ হওয়ার পর সে-সকল রাজ্যে কেউ গরু পালন করে না। কারণ, গরু ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। ফলে, ওই সকল হিন্দু ব্যবসায়ী রাস্তা থেকে গরু ধরে নিয়ে গরুর মাংস বিদেশে রফতানি করলেও তাতে গরুর প্রতি অপমান মেনে নেয়া হচ্ছে! যত দোষ, শুধু মুসলমানের!কংগ্রেসি বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও বিলটিতে সংশোধনী আনার কথা বলেন।

গো-সুরক্ষা বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর রাজ্যের মাটি ব্যবহার করে অন্য রাজ্যে গরু পরিবহন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ হবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য রাজ্য থেকেও অসমে গরু পরিবহন করা যাবে না। গো-হত্যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে, সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কসাইখানায় শর্তসাপেক্ষে গো-মাংস বিক্রয় করা যাবে। কিন্তু হিন্দু, জৈন বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর মন্দির বা সত্রের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে কোনও অবস্থায় গো-মাংস বিক্রি করা যাবে না। চোদ্দো বছরের নীচের বা কর্মক্ষম কোনও গরু, গাভী হত্যা করা যাবে না। বিশেষ কোনও কারণে  হত্যার জন্য পশু চিকিৎসকের নিকট থেকে শংসাপত্র নিতে হবে। আইন অমান্যকারীকে তিন থেকে পাঁচ বছরের জেল ও পাঁচ থেকে আট লক্ষ টাকা জরিমানা করা হবে।  দিন কয়েক আগে রাজ্যের সব ক’জন ওসি-কে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা নির্দেশ দিয়েছেন, মাদক ও গরু পরিবহনে কঠোর স্থিতি গ্রহণ করতে। এ দুটি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে কোনও ধরনের ঢিলেমি বরদাস্ত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী ওসিদের আরও কিছু সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও দিয়েছেন! গো-পরিবহন, গো-হত্যা, গো-পাচারের বিষয়টি যেন অকুস্থলেই মীমাংসা করা হয়, এমন সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও তিনি দিয়েছেন। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী গো-পরিবহনকারীকে ইঙ্গিতে নিকেশ করার নির্দেশ-ই দিয়েছেন! বিলটি নিয়ে রাজ্যের প্রায় সোয়া কোটি মুসলিম আতঙ্কের মধ্যে আছেন। অনেকে কোরবানির পশু ক্রয় করা সত্ত্বেও কোরবানি দিতে পারবেন কি না এমন দুটানায় পড়েছেন! উল্লেখ্য, অসমসহ দেশের বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যে গরুর আধার কার্ডও নথিবদ্ধ করা হয়েছে। গরুর একটি কানে ফুটো করে গরুর মালিক, গরুর রং ইত্যাদি বর্ণনাও লিপিবদ্ধ করার কাজ দ্রূত গতিতে চলছে, যাতে কোনও একটি গরুও সরকারি হিসেব থেকে হারিয়ে না-যায়।

এদিকে, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত মেঘালয়ের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা অসমের বিধানসভায় গো-হত্যা বন্ধ ও পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কিত বিলের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, খ্রিস্টানরা গো-মাংস ভক্ষণ করেন। সুতরাং গো-পরিবহনে অসম সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করতে আইন প্রণয়ন করলে মেঘালয় সরকারও হাত-পা গুঁটিয়ে বসে থাকবে না। তাঁরা কেন্দ্র সরকাটের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবে। অনেকের অভিমত, ইদ অর্থ খুশি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা পবিত্র ইদ-উল-আজহা উপলক্ষ্যে সেই খুশি মুসলিমদের থেকে কেড়ে নিয়ে হিন্দুদের উপহার দিয়েছেন!

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন