মৌলভীবাজারের বড়লেখার রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তকে অপহরণ মামলায় সাদিকুর রহমান লিমন (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। লিমন সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মৃত মুহিবুর রহমানের ছেলে। গত সোমবার রাতে বিয়ানীবাজার থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলার আসামি কবির হোসেন ও জুবের আহমদ কে মঙ্গলবার (১৫ জুন) বিকেলে চারদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রতন দেবনাথের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রতন দেবনাথ বুধবার বিকেলে বলেন, ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তের ভাইয়ের করা অপহরণ মামলায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও দুজনকে রিমান্ডে নিতে আদালতে সাতদিনের আবেদন করা হয়। পরে আদালত তাদের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বড়লেখা পৌরসভার বারইগ্রাম এলাকার সতেন্দ্র কুমার দত্তের ছেলে বড়লেখা শহরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্ত গত ৪ জুন সন্ধ্যায় সিলেট টিলাগড়স্থ ভাড়াটিয়া বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বড়লেখা ডাকঘরের সামনে থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠে রওয়ানা দেন। তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় পৌঁছে সেখানে সিএনজি অটোরিকশা পরিবর্তন করে অন্য আরেকটি অটোরিকশায় উঠেন। ওই সিএনজি অটোরিকশা যোগে তিনি বারইগ্রাম থেকে সিলেট যাওয়ার পথে সিলেট বিয়ানীবাজার উপজেলার মোল্লাপুর রাস্তায় অপরহরণকারীরা শশাংক কুমার দত্তকে বহণকারী অটোরিকশার গতিরোধ করে। পরে তাকে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসটিতে তুলে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারী চক্র বিভিন্ন ভিওআইপি নম্বর থেকে তার ছোট ভাই সুবোধ কুমার দত্ত এর মোবাইলে ফোনে কল করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। এরপর সুবোধ কুমার দত্ত বড়লেখা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে থানা পুলিশের বিশেষ টিম, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শশাংককে উদ্ধারে নেমে অভিযান অব্যাহত রাখে।
গত ৬ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাউছার দস্তগীরের নেতৃত্বে পুলিশ, ডিবি ও র্যাবের একটি দল যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির বাহাদুরপুর চা বাগানের নির্জন জঙ্গল থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী শশাংক কুমার দত্তকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী ইসমাইল আহমদ হারুন ও জুলমান আহমদকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার মূল পরিকল্পনকারী সবুজ হোসেনকে পরদিন ০৭ জুন গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত ০৮ জুন অপহরণ কাজে ব্যবহৃত নোহা মাক্রোবাস উদ্ধার এবং আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ গত সোমবার (১৪ জুন) রাতে বিয়ানীবাজার থেকে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।