প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ গড়ে ৫৫০ লিটার বা ১৯ কিউবিক ফুট বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহণ করে।যার জন্য কাউকে কোনো দিন কোনো অর্থ গুনতে হয় না। ধনী-গরিব সবাই একইভাবে, সৃষ্টিকর্তার দান- এই অক্সিজেন গ্রহন করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে, ভারতে করোনার অতিমারিতে অক্সিজেন সিন্ডিকেটদের দৌরাত্বে, চড়া মূল্যের কারণে আক্রান্তদের স্বজনরা অক্সিজেন কিনতে পারেনি। চোখের সামনে, ভাষাহীন করুণ পরিণতিতে মৃত্যুবরণ করতে দেখতে হয়েছে স্বজনদের। ইন্টারন্টে এর কল্যাণে এইসব করুণ দৃশ্য দেখে নির্বাক ছিল বিশ্ববাসীও ।
ভারতের গণমাধ্যমে, বহুল প্রচারিত অক্সিজেন বিষয়ক সংবাদের তথ্য বলছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে বা অন্য কোনো কারণে যদি কাউকে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়, তাহলে বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী তাকে ১.৪ কিউবিক মিটারের একটি সিলিন্ডার কিনতে গুনতে হচ্ছে ৪৭ হাজার টাকা পর্যন্ত।
যার মধ্য থেকে খালি সিলিন্ডারের দাম বাবদ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বাদ দিলেও শুধু ১.৪ কিউবিক অক্সিজেনের দাম দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৭ হাজার টাকা।
অর্থাৎ সে হিসাবে, প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দুই লাখ ৭১ হাজার থেকে তিন লাখ ৩৯ হাজার টাকার অক্সিজেন বিনা মূল্যে গ্রহণ করে।
করোনাসময় খোদা প্রদত্ত অক্সিজেন প্রতিমুহুর্তে গ্রহনের বিয়য়টি বিশ্বব্যাপী মানুষের মনে দাগ কেটেছে। এশিয়ার পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিনের জীবন ধারণের জন্য ঘরে ঘরে অক্সিজেনের জোগান রাখতে তুলসী , অ্যালোভেরা-বাঁশ খুব কার্যকর।
যদিও এই অক্সিজেন গ্রহন করে করোনা আক্রান্তরা সুস্থ হবার নয়। কিন্তু মানুষের প্রতি মুহুর্তে বেঁচে থাকার জন্য বিনে পয়সায়, প্রকৃতি থেকে আমরা যে অমূল্য অক্সিজেন গ্রহন করছি, তা ঘরের চার দেয়ালে নিজেদের বাড়তি উপকারে আসবে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘরের ভিতরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ কাটাতে পারে তুলসী, স্নেক প্ল্যান্ট , অ্যালোভেরা ও বাঁশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভেজষ ঔষধ হিসাবে কাজ করা তুলসী গাছ ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত করতে সাহায্য করে। একটি তুলসী গাছ ২০ ঘন্টা পর্যন্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও কার্বন মনোঅক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং সালফার ডাই অক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস শোষণ করে ঘরের ভিতরে বাতাস পরিশুদ্ধ করে থাকে তুলসী।
গবেষণা বলছে , অ্যালোভেরা গাছ ঘরের বাতাসের স্বাস্থ্য বহুগুণ উন্নত করে । একটি অ্যালোভেরা গাছ ৯টি এয়ার পিউরিফায়ারের কাজ করে থাকে। এছাড়া অ্যালোভেরা দ্রুত বাতাসে ক্ষতিকারক টক্সিনকে শোষণ করে নিতে পারে।
গবেষকরা বাঁশজাতীয় গাছও ঘরে লাগাতে পরামর্শ দিচ্ছেন।তারা বলছেন,বাতাসের দূষিতকণা টোলুইন, ক্ষতিকারক টক্সিন বেঞ্জিন ও ফর্ম্যাল-ডিহাইডকে শোষণ করে ঘরে অক্সিজেন লেভেল বাড়াতে সক্ষম বাঁশ গাছও।
এসব গাছ সহজে ঘরে ছোট টবে বেড়ে উঠতে পারে। এদের যত্ন পরিচর্যার বিশেষ প্রয়োজন হয় না। গবেষকরা তাই বৃক্ষরোপণের সঙ্গে এখন থেকে ইন্ডোর প্ল্যান্টেশনে করার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলছেন, ঘরে এয়ারপিউরিফায়ার লাগানোর বদলে জানালাতে একটি গাছ লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, ইন্ডোর প্ল্যান্টেশন এ বেশি জায়গার প্রয়োজন পড়ে না। জানালা, বারান্দা, ছাদ— যে কোনও জায়গায় ,টবে পানির বোতলে গাছ লাগানো যায়।