বাগেরহাট জেলার, শরণখোলায় অহিদুল ইসলাম সবুজ (৩২) নামে চায়না ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক শ্রমিকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে চালরায়েন্দা এলাকায় চায়না প্রজেক্ট অফিসের ব্লক ইয়ার্ড থেকে ওই শ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ব্লক তোলা ফর্কলিফটের নিচে চাপা পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন প্রজেক্টের ফর্কলিফট চালক চালরায়েন্দা গ্রামের আ. রশিদ হাওলাদারের ছেলে শহিদুল ইসলামকে (৪০) আটক করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত অহিদুল উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বকুলতরা গ্রামের নওয়াব মৃধার ছেলে। তিনি প্রজেক্টের ব্লকবাহী লরির চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার মাথা থেতলানো, ডান হাত, বাম পা ভাঙা এবং শরীরে আরো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
নিহতের মামা এইচ এম আব্দুল হালিম অভিযোগ করে বলেন, চায়না প্রজেক্টের গাফিলতি আর ফর্কলিফট চালকের অসর্তকতায় আমার ভগ্নে মারা গেছে। প্রজেক্টের পক্ষ থেকে ওখানে ফোরম্যান নিয়োজিত থাকলে এই দুর্ঘটনা ঘটতো না। তবে, আটক শহিদুল জানান, ফর্কলিফটে ব্লক ভরে লরির কাছে এসে অহিদুলকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এসময় তার চিৎকারে লোকজন ছুঁটে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চালক অহিদুল ইসলাম সবুজ ও শহিদুল ইসলাম সকাল থেকে ব্লক ইয়ার্ডের পূর্ব পাশে কাজ করছিলেন। অহিদুল বসা ছিলেন চালকের সিটে আর শহিদুল ফর্কলিফটে করে ব্লক এনে লরিতে তুলছিলেন। সেখানে ওই দুইজন ছাড়া কাছাকাছি অন্য কোনো শ্রমিক ছিলেন না। সকাল ৯টার দিকে অহিদুল মারা গেছে বলে শহিদুল চিৎকার করতে থাকেন। তবে, চালকের সিট থেকে কিভাবে অহিদুল লরির পেছনের চাকার নিচে এলো, এনিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে।
শরণখোলায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে নিয়োজিত চায়নার সিএইচডব্লিউই নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র মি. গওসিং বলেন, ইয়ার্ডের ব্যাপক এরিয়ায় আমরা যে যার মতো কাজে ছিলাম। সকালে ওই দুই শ্রমিক ইয়ার্ডের পূর্ব সাইডে ব্লক পরিবহনের কাজ করছিলেন। পরে মৃত্যুর খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান জানান, চায়নার প্রজেক্ট অফিসের ব্লক ইয়ার্ড থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের অবস্থা দেখে রহস্যজনক মনে হচ্ছে। সন্দেহভাজন শ্রমিক শহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।