৪৩২জন প্রবাসী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বৈরুতের রফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ ফ্লাইট। সোমবার (১৫ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত ১০টা ১৫মিনিটি বিমানটি লেবানন ছেড়ে দেশের উদ্দেশে যাত্রা করে।
২০২০/২১ সালে দূতাবাসের বিশেষ সুযোগে নাম নিবন্ধন করা বৈধ কাজগপত্র বিহীন লেবানন প্রবাসীদের নিয়ে এটাই প্রথম ফ্লাইট। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ফ্লাইটের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৫ থেকে ২৮ডিসেম্বর ৪শত মার্কিন ডলার দিয়ে প্রায় ৪হাজার বৈধ কাগজপত্র বিহীন প্রবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে নাম নিবন্ধন করেন। গত জানুয়ারিতে বিশেষ ফ্লাইট চালু হবার কথা থাকলেও দীর্ঘ লকডাউন থাকায় ফ্লাইট পেছানো হয়। ফেব্রুয়ারি ৭তারিখে লকডাউন শিথিল হলে শুরু হয় ফ্লাইটের কর্মসূচী।
গত প্রায় দেড় বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় চরম অর্থ সংকটে পরে লেবানন। শুরুতে সংকট অনেকটা কম থাকলেও দেশটিতে সঠিক নেতৃত্বের অভাবে সংকট চরম আকার ধারণ করে, দেশিটির মূদ্রার দাম করে যায় ৯গুণ। আর এর বিশাল প্রভাব পরে দেশটিতে থাকা প্রবাসীদের উপর। ডলারে বেতন পরিশোধ না করায় বিপাকে পরে তারা। মালিক পক্ষ বেতন দিচ্ছে লেবানিজ মূদ্রায়। যেখানে দেড় হাজার লিরা দিয়ে এক ডলার ক্রয় করা যেত, সেখানে বর্তমানে ৯হাজার দিয়ে ক্রয় করতে হয় ১ডলার। প্রায় ৯০শতাংশ বাংলাদেশী প্রবাসী সর্বোচ্চ বেতন পেত ৪শ ডলার, যার লেবানিজ মূদ্রায় ৬লাখ ছিল। এখনো আগের হিসেবেই বেতন পায় প্রায় ৭০শতাংশ প্রবাসী। যেখানে ১০০ডলার কিনিতে ৯লাখ লিরা গোনতে হয়, সেখানে ৬ থেকে ৭লাখ বেতন পাওয়া মানুষ গুলো না পারছে নিজে চলতে, না পারছে দেশে পরিবার চালাতে। তাই বাধ্য হয়ে দেশে ফিরে যাচ্ছে হাজার হাজার বাংলাদেশী।
বৈধ কাগজপত্র থাকা প্রবাসীরা সহজে দেশে ফিরতে পারলেও বিপাকে পরেছে বৈধতা হারানো মানুষগুলো। দেশ ফিরতে না পেরে আন্দোলনের ডাক দেয়া তারা, মানববন্ধন করে দূতাবাসের সামনে। আর এসকল প্রবাসীদের দাবির মুখে দূতাবাস চালু করে বিশেষ সুযোগে দেশে ফেরার কার্যক্রম।
জানা যায়, দেশ থেকে ধার দেনা করে অনেকে বিশেষ সুযোগে নাম নিবন্ধন করেছে। আর এখনো হাজার প্রবাসী নাম নিবন্ধন করতে পারেনি ডলার না থাকায়। অনেক দেশ থেকেও টাকা আনার সামর্থ্য নেই। তাই দেশে ফিরতে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছে এসকল প্রবাসীরা।