কলেজে ক্লাস করতে এসে বাড়ি ফেরা হল না কাছাড়ের কালাইন-গুমড়া এলাকার পাঁচ কলেজ ছাত্রের। রেলশহর বদরপুরের নবীনচন্দ্র কলেজের বিএসসি প্রথম সেমিস্টারের পাঁচজন পড়ুয়া আজ মর্নিং শিফটের ক্লাস করতে এসেছিল সাতসকালে। দুপুর একটার দিকে ক্লাস শেষ হলে পাঁচজন সহপাঠি যথাক্রমে মনজুর, জাফর, আরিফ, সলমান ও গোবিন্দ একটি অল্টো কে টেন কারযোগে বাড়ি ফিরছিল। সকলের বাড়ি কালাইন-গুমড়া এলাকায়। কিন্তু বিধি বাম! তাদের আর বাড়ি যাওয়া হল না! রাজপথে তাঁদের প্রাণ কেড়ে নিল পাথরবোঝাই একটি ঘাতক লরি!
লরিটি খুব-ই দ্রূত গতিতে এসে পড়ুয়াদের অল্টো কারে সামনাসামনি সজোরে ধাক্কা মেরে প্রায় ২৫/৩০ মিটার ঠেলে নিয়ে যায়। এতে দু’জন ছাত্র কার থেকে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়! অপর তিন জনকে গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করে দু’জনকে স্থানীয় কালাইন হাসপাতালে ভর্তি করলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান। অপরজন গোবিন্দ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করে। উক্ত তিনজনসহ তাদের অল্টো কারটি সদর রাস্তা থেকে অনতি দূরে পার্শ্ববর্তী ডোবায় ছিটকে পড়ে। ছাত্রবাহী গাড়িটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজনসহ অন্যান্য ছাত্ররা উদ্ধার কার্যে নেমে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, পুলিশ উদ্ধার কাজে সহযোগিতা না-করে দর্শকের ভূমিকায় ছিল। এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। নিত্যদিন অত্র এলাকায় দুর্ঘটনা সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তথা প্রশাসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোনও ভূমিকা রাখছে না বলে স্থানীয় জনগণ ও ছাত্ররা রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পরে, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যস্থতায় অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। নিহত ছাত্রদের পরিবারবর্গকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য উপস্থিত জনগণ দাবি জানান।
দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচ জন ছাত্র-ই মেধাবী ছিল বলে জানা গেছে। এক সঙ্গে পাঁচজন মেধাবী ছাত্রের মৃত্যুতে কলেজ কর্তৃপক্ষসহ সমগ্র বরাক উপত্যকাজুড়ে জনগণ শোকে মুহ্যমান। স্বপ্নিল বহুমুখী বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ উপত্যকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঁচজন মেধাবী ছাত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ও ঘাতক ট্রাক ড্রাইভারসহ মালিককে অবিলম্বে গ্রেফতার পূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছে। ঘটনাটি আজ বুধবার দুপুর দু’টার দিকে সংঘটিত হয় বলে জানা গেছে।