শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মো. আব্দুল হাছিব যিনি সবার কাছে ‘হাছিব স্যার’ নামেই পরিচিত। আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে এবং সার্বিক সমাজ ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের পূর্ব শর্তরূপে শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করেই এই স্বনামধন্য শিক্ষক ব্রতী হয়েছিলেন জ্ঞান বিতরণের মহৎ দায়িত্ব পালনে।
বিয়ানীবাজার উপজেলার মুল্লাপুর ইউনিয়নের আবদুল্লাপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী বাগিছা বাড়ীতে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ অক্টোবর জন্ম গ্রহণ করেন তিনি । তার পিতার নাম মরহুম মো. আরজদ আলী ও মাতার নাম ফাতিরা বিবি । দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট ।
জীবনের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার হাতেখড়ি হয় আবদুল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া সম্পন্ন করে বিয়ানীবাজারের পিএইচজি হাই স্কুল থেকে ১৯৬৫ সালে এসএসসি পাশ করেন।তারপর ১৯৬৭ সালে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭০ সালে সিলেটের এমসি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি ।
শিক্ষা জীবন শেষ করে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষকতা পেশায় । ১৯৭১ সালে পাতন আবদুল্লাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি । এই সময় দেশের রাজনৈতিক অবস্থার অবনতি হলে বয়সে তরুণ এই শিক্ষক তার আপন চাচাতো ভাই সেই সময়ের লাউতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন মরহুম আমির উদ্দিন আহমদের সাথে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন গুণী এই শিক্ষক । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে ভারতের করিমগঞ্জে মাস দুয়েক প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশে এসে সরাসরি সন্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন তিনি।
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে ঐতিহ্যবাহী জলঢুপ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন । এরপর ১৯৮৪ সালে কুমিল্লা টিচার্স টেনিং কলেজ থেকে বিএড পাশ করেন ।
শিক্ষক মো. আব্দুল হাসিব জলঢুপ উচ্চ বিদ্যলয়ে টানা ৩৬ বৎসর শিক্ষকতা করেন। এরই মধ্যে ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৯ সহকারী প্রধান শিক্ষক ও ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে চাকরি জীবন শেষে অবসরে যান গুণী এই শিক্ষক ।
মানুষ গড়ার কারিগর এ মহান ব্যক্তিত্ব পারিবারিক জীবনে এক কন্যা সন্তানের জনক। বর্তমানে তিনি নিউজিল্যান্ড এর অকল্যন্ড শহরে তার মেয়ের সাথে অবসর জীবন যাপন করছেন।
লেখক : ফয়সল আহমদ ( রুহেল ), সাউথ ইস্ট লন্ডন নিউজ করেসপনডেন্ট;চ্যানেল এস টেলিভিশন ,লন্ডন ।