ছুরি হামলার শিকার হয়ে এক শিক্ষকের মৃত্যুর পর উত্তাল হয়ে উঠেছে ফ্রান্স। দেশজুড়ে শিক্ষকদের সমর্থনে, রক্তপাতের প্রতিবাদে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষায় সমাবেশ করেছে হাজার হাজার মানুষ। রোববার প্যারিস, লিয়ঁ, মার্সেই সহ বহু শহরেই প্রতিবাদকারীদের ঢল দেখল ফ্রান্স।
প্য়ারিসের রাস্তায় গত শুক্রবার ইতিহাসের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে হত্যা করেছিল এক তরুণ। ওই শিক্ষক ক্লাসে মহানবীর কার্টুন দেখিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। তারপরই ফ্রান্সজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে সমবেত হয়েছিলেন কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী। তার মধ্যে রাজনৈতিক নেতা, সংগঠন ও শিক্ষক ইউনিয়নের সদস্য থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীও টুইটে বলেছেন, ”এভাবে আপনারা আমাদের ভয় দেখাতে পারবেন না। আমরা ভীত নই। এভাবে আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা যাবে না ।” শুক্রবার শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছিল। শনিবার শত শত লোক সেই স্কুলে গিয়ে সাদা গোলাপ রেখে আসেন। রোববার বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল ব্যাঙ্গচিত্রের জন্য প্রসিদ্ধ পত্রিকা শার্লি এব্দো, এসওএস রেসিসিম নামে একটি সংস্থা ও শিক্ষকদের ইউনিয়ন। ।পুলিশ এখনো পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তার মধ্যে অভিযুক্তের পরিবারের চার জন সদস্যও আছেন। গত মার্চেই তাঁদের শরণার্থী হিসাবে ১০ বছরের জন্য ফ্রান্সে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিযুক্তের মোবাইলে শিক্ষকের ছবি পাওয়া গেছে। ফরাসী শিক্ষামন্ত্রী জিন-মিশেল ব্লাঙ্কার বলেছেন, “গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ – মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সাথে সম্পর্কযুক্ত এমন একটি শ্রেণীর পাঠদানের জন্য পট্টিকে হত্যা করা হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার ঐ শিক্ষক তাঁর ক্লাসে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এই কারণে শিরচ্ছেদ করে তাঁর হত্যা করা হয়। এই ঘটনা ঘটার পর তৎক্ষণাৎ স্কুলে পৌঁছেছিলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি এমম্যানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি এই নৃশংস ঘটনাটিকে “ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছেন। এই উগ্রবাদের বিরুদ্ধে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।