গোলাপগঞ্জের লক্ষীপাশা ইউনিয়ন পরিষদ উপ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে পূরো ইউনিয়ন এলাকা। যদিও অল্প কিছুদিনের জন্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান পাবেন তার মেয়াদকাল। তার পরেও চলছে ভোটারদেও দ্বারে দ্বারে ছোঁটে চলা। প্রত্যেক প্রার্থীরা ব্যাস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন নির্বাচনী সভা সমাবেশ, মতবিনিময় সহ নানামুখী প্রচারাভিযান। নির্বাচনী আমেজে সরগরম হয়ে উঠেছে ইউনিয়নের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা।
আগামী উপনির্বাচনে কে হচ্ছেন ইউনিয়নের অভিভাবক – এ নিয়ে এলাকার হোটেল, রেস্তোরায় গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের মধ্যে চলছে নানা হিসেব-নিকেষ। সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার লক্ষীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আহমদ মুশনের (গত ৪জুন) অকাল মৃত্যুতে শূন্য পদে আগামী ২০ অক্টোবর উপনির্বাচন। তবে মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে(২৩ সেপ্টেম্বর) দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে মোট ৫জন প্রার্থী আগামী উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য তাদের মনোনয়ন দাখিল করেছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগের লক্ষীপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ আহমদ (নৌকা) , বিএনপির সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আফজাল হোসেন (ধানের শীষ )। এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে আব্দুল আলীম তুহিন, মাহতাব উদ্দিন, মোঃ আব্দুর রহিম। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগামী ২০ অক্টোবরের উপনির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মাহমুদ আহমদের বিজয়ী হওয়ার পাল্লাই বেশি। এদিকে আওয়ামীলীগ-বিএনপি’র প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় ভোটাররাও ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। সেই সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও ভোটারদের দ্ধারে দ্ধারে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা পাড়ায় পাড়ায় মত-বিনিময় সহ নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে জমিয়ে তুলছেন নির্বাচনী মাঠ।
এদিকে গত শুক্রবার আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নৌকার প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লক্ষীপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাহমুদ আহমদ। অপরদিকে একদিন পর গত শনিবার একইভাবে ধানের শীষের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন।
আওয়ামীলীগ দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার লক্ষীপাশা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ আয়োজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বাছাই নিয়ে এক মতবিনিময় সভা হলে দলীয় কর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রার্থী নির্বাচিত হন মাহমুদ আহমদ। তিনি আগামী ২০ অক্টোবর লক্ষিপাশা ইউনিয়ন পরিষদে শূন্য হওয়া চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন নৌকার বিপক্ষে যারা কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামীলীগ আজ গণমানুষের সংগঠনে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ট নেতৃত্বে দল আজ অনেক বেশি সুসংগঠিত ও শক্তিশালী। তাই কোনোভাবে দলীয় শৃংখলা ভাঙ্গা যাবেনা। আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সব কিছুর ঊর্ধ্বে থেকে দলীয় প্রধানের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন অতীতের সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে থেকে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া দলে থেকে যারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসয়ম উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কবির উদ্দিন আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. ইকবাল আহমদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এড.আজমল আলী, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মজির উদ্দিন, এড. আব্বাস উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহম প্রমুখ।
অপরদিকে একই ভাবে গত শনিবার বিএনপি’র তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ ভোটে ধানের শীষের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন। সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ফখরুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সদস্য মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সাল, আব্দুল আহাদ খান জামাল, লায়েছ আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ডাঃ আব্দুল গফুর, গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন, সদস্য ও পৌরসভা প্যানেল চেয়ারম্যান হেলালুজ্জামান হেলাল, সদস্য আতাউর রহমান উতু, জামাল আহমদ জামাল, মামুনুর রশিদ মামুন, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নবীন প্রমূখ।