শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
Sex Cams
সর্বশেষ সংবাদ
সৈয়দ আফসার উদ্দিন এমবিই‘র ইন্তেকাল  » «   ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিয়ানীবাজারে পথচারী ও রোগীদের মধ্যে ইফতার উপহার  » «   ইস্টহ্যান্ডসের রামাদান ফুড প্যাক ডেলিভারী সম্পন্ন  » «   বিসিএ রেস্টুরেন্ট কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এনএইচএস এর ‘টকিং থেরাপিস’ সার্ভিস ক্যাম্পেইন করবে  » «   গ্রেটার বড়লেখা এসোশিয়েশন ইউকে নতুন প্রজন্মদের নিয়ে কাজ করবে  » «   স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের দোয়া ও ইফতার মাহফিল  » «   কানাডা যাত্রায়  ইমিগ্রেশন বিড়ম্বনা এড়াতে সচেতন হোন  » «   ব্রিটিশ রাজবধূ কেট মিডলটন ক্যানসারে আক্রান্ত  » «   যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজাবাসীদের সাহায্যার্থে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই ইন দ্য ইউকের অনুদান  » «   বড়লেখায় পাহাড়ি রাস্তা সম্প্রসারণে বেরিয়ে এলো শিলাখণ্ড  » «   মাইল এন্ড পার্কে ট্রিস ফর সিটিস এর কমিউনিটি বৃক্ষরোপণ  » «   রয়েল টাইগার্স স্পোর্টস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন  » «   গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সাধারণ সভা ও নির্বাচন সম্পন্ন  » «   যুক্তরাজ্যবাসি  সাংবা‌দিক সাইদুল ইসলামের পিতা আব্দুল ওয়াহিদের ইন্তেকাল  » «   ইউকে বাংলা রিপোটার্স ইউনিটি‘র নতুন কার্যকরী কমিটির অভিষেক  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের প্রতারনায় মোংলার ৭ শতাধিক পরিবার এখন নিঃস্ব



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কাইনমারী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক (৭০)। চার সন্তান আর স্ত্রী সহ পরিবার পরিজন নিয়ে এক সময় বেশ ভালই ছিলেন তিনি। উপজেলা পরিষদের সামনে নিজের প্লট ও দোকান ছিল তার। তার আয়ের উৎস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর পড়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের একটি প্রতারক চক্রের। তাদের প্রলোভনে পড়ে ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন দোকানের প্লট। আর এ জমানো টাকা তুলে দিয়েছেন ওই চক্রটির হাতে। মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে নিঃস্ব হয়ে এখন পথে বসেছেন তিনি। পরিবার পরিজন সহ আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের ভিটায়।

পৌর শহরের কেওড়াতলার বাসিন্দা ছেতারা বেগম (৬৫)। স্বামী-সন্তান নেই এই নারীর। অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ করে পেট চলে তার। দু’এক পয়সা করে ১০ বছরের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে ৫০ হাজার টাকা গুছিয়ে ছিলেন তিনি। তার কষ্টের সমুদয় অর্থ ফুঁসলিয়ে নেয় ওই একই চক্রটি। এখন টাকার অভাবে তার চিকিৎসা হচ্ছে না। চরম দুশ্চিন্তা- হতাশা আর মানবেতর দিন কাঁটছে ওই বৃদ্ধার ।

শহরতলীর কলেজ মোড় এলাকার বিধবা জোহরা বেগম (৬০) বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কাপড় বিক্রি করেন। একটি এনজিও থেকে লোন নিয়ে এবং ব্যবসার টাকা মিলিয়ে দু’লাখ টাকা জমা রেখে ছিলেন নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের ওই প্রতিষ্ঠানে। শুধু এরাই নয়, মোংলার মধ্য ও নি¤œবিত্ত ৭ শতাধিক পরিবার ওই চক্রটির প্রতারণার জালে আটকা পড়েছে। আর বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।

এ প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফারে আকৃষ্ট হয়ে জমি বিক্রি ও ব্যাংক লোন সহ জীবনের উপার্জিত অর্থ কড়ি হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন অনেকে। কবে নাগাদ ফেরৎ পাবেন গচ্ছিত টাকা তাও কারোরই জানা নেই।

ভুক্তভোগীরা জানান, ২০১১ সালের প্রথম দিকে মোংলা উপজেলা ও পৌর এলাকায় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকৃত দালালরা মধ্যবৃত্ত ব্যবসায়ী ও নি¤œ পেশার মানুষকে টার্গেট করে আকর্ষনীয় ও লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহে মাঠে নামে। সুদ নয়, ফরজে হাসনা নামে ব্যাংকের চেয়ে দ্বিগুন লভ্যাংশ দেয়ার অফার দেয়। আর অল্প সময়ের মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতারনার জালে আটকা পড়ে মোংলার ৭শ’পরিবার। আর এ প্রতিষ্ঠানে ৫০ হাজার থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত জমা রাখেন গ্রাহকদের কেউ কেউ।

২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এ প্রতিষ্ঠানটি। একই বছর নভেম্বরে হঠাৎ আত্মগোপনে যেতে শুরু করে স্থানীয় পর্যায়ে দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক সংগ্রহকারী দালালরা। আর যারা আছেন তারাও গ্রাহকদের গচ্ছিত টাকা ফেরত দিতে নানা অজুহাতে তালবাহানা করে চলছে। এ অবস্থায় গত বছর ১৫ জুলাই দুদকের মানি লন্ডারিং মামলায় আটক হয়ে কারাগারে রয়েছেন নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের এ প্রতিষ্ঠানের মালিক আঃ মান্নান তালুকদার। প্রতিষ্ঠান প্রধান কারাগারে আর তার সহযোগী দালালরা আত্মগোপনে থাকায় এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা।

এদিকে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আব্দুল মান্নান তালুকদারের ৩০টি ব্যাংক একাউন্ট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত সপ্তাহে আদালত একই সাথে তার ১০৮টি জমির দলিলের সম্পত্তি এবং চারটি গাড়ী ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন। বাগেরহাটের জেষ্ঠ্য বিশেষ জজ আদালতের বিচারক গাজী রহমান দীর্ঘ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

আদালতের এ আদেশের পর শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন মোংলার আমনতকারীরা। উপার্জিত অর্থকড়ি হারানোর আশংকা সহ মানবেতর দিন কাটছে বিনিয়োগকারীদের। কবে নাগাদ ফেরত পাবেন গচ্ছিত টাকা তাও কারোর জানা নেই।

গ্রাহক মোঃ লুৎফূল আলম বাবুল জানান, একটু স্বচ্ছল জীবন যাপনের আশায় জীবনের উপার্জিত সম্পদ ভিটা বিক্রি,অবসর ভাতা আর ব্যাংক লোন নিয়ে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট নামের এ প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত রেখেছিলেন গ্রাহকরা। তিনি বলেন, নিউ বসুন্ধরার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশের পর তাদের সঞ্চিত টাকার কি হবে তা নিয়ে উদ্বেগ আর হতাশা কাটছে না।


সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন