বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
https://blu-ray.world/ download movies
সর্বশেষ সংবাদ
ধর্মীয় উগ্রবাদ ঠেকাতে না পারলে ফের গণতন্ত্রের কবর হবে: তারেক রহমান  » «   জাতীয় পার্টির ইফতারে হামলা: দেশ ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে, এই সরকার দ্রুত বিদায় নিলেই মঙ্গল: জি এম কাদের  » «   আবার ‘জিয়া উদ্যান’ হলো ‘চন্দ্রিমা উদ্যান’  » «   বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে বাবার নাম ‘চান না’ সিলেটের আতাউর  » «   মহাসড়কে প্রবাসী গাড়ি টার্গেট করে ডাকাতি : নজরদারি বাড়ানের দাবি, অতিরিক্ত ৭০০ পুলিশ মোতায়েন  » «   রাজধানীতেই আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়! অনুমোদন পেল ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’  » «   আরসা প্রধান জুনুনিকে গ্রেপ্তারের দাবি র‌্যাবের  » «   হিন্দুদের ওপর আক্রমণ ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক: মার্কিন সিনেটরকে প্রধান উপদেষ্টা  » «   দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন  » «   বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন: তুলসী গ্যাবার্ড  » «   রেমিটেন্সের নামে এক ব্যক্তি এনেছেন ৭৩০ কোটি টাকা!  » «   সিলেটে ভালোবাসায় সিক্ত হামজা চৌধুরী, বললেন, ‘ইনশাল্লাহ আমরা উইন খরমু’  » «   এমসি কলেজে ধর্ষণের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেই  » «   জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরে এক ঢিলে তিন পাখি  » «   অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের আরেকটি দল আসছে, নেতৃত্বে শিবিরের সাবেকরা  » «  
সাবস্ক্রাইব করুন
পেইজে লাইক দিন

কলমাকান্দার চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের যুবদের বহুমূখী উদ্যোগ



সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন


নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের চন্দ্রডিঙ্গা একটি সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম। উত্তরে মেঘালয়ের বিশাল পাহাড়। সেই পাহাড় বেয়ে উজান থেকে ভাটিতে অবিরত বয়ে চলেছে পাহাড়ি ছড়া। গ্রামটির মাধ্যমে ছড়াটি চলে গেছে হাওরের ডাকে। এ গ্রামেই গারো, হাজং, বাঙালি ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে বসবাস করছেন অনেক আগে থেকেই। এখানে জাতিগত ভিন্নতা বা ধর্মীয় ভিন্নতা থাকলেও মানুষে মানুষে সম্পর্ক খুবই অটুট। একে অপরের বিপদে আপদে সবাই একসাথে এগিয়ে আসেন। এটি এই গ্রামের ঐতিহ্যও বটে। একতাবদ্ধ হয়ে বসবাস করায় কোন সমস্যা তাদের কাছে সমস্যা মনে হয় না। এই গ্রামেই তরুণদের একটি সংগঠন রয়েছে যার নাম ‘চন্দ্রডিঙ্গা যুব সংগঠন’। গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই সংগঠন ইতিমধ্যেই অনেক ছোট ছোট উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা প্রশংসিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই যুব সংগঠনটি এ বছর আরো বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

 দুটি বাঁশের ব্রীজ তৈরি

চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে দু‘টি পাহাড়ি ছড়া, যার ফলে গ্রামটি প্রায় তিনভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্যম পাড়া হিসেবে। পূর্বপাড়ার সাথে মধ্যম পাড়ার যোগাযোগের জন্য একটি ছোট ব্রীজ আছে। কিন্তু পশ্চিমপাড়ার সাথে মধ্যম পাড়ার যোগাযোগের জন্য কোন ব্রীজ নেই। ব্রীজ না থাকায় অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয় মধ্যম পাড়ার বাসিন্দাদের। আবার এবছর পাহাড়ি ঢলে পূর্ব পাড়ার সাথে সংযোগ রাস্তাটি ভেঙে গেছে। ফলে ব্রীজ থাকলেও পূর্বপাড়ার সাথে মধ্যম পাড়ার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামের এমন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে এই যু্ব সংগঠনটি। প্রথমে পশ্চিম পাড়ার সাথে মধ্যম পাড়ার যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয় একটি বাঁশের ব্রীজ। গ্রামের সবার বাড়ি থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে সংগঠনের সদস্যরা শুরু করেন বাঁশের ব্রীজ তৈরি করা। সাথে যুক্ত হলেন গ্রামের ছোট বড় সবাই। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বাঁশের ব্রীজ তৈরি করা সম্পন্ন হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো কয়েকদিন পরই ব্রীজটি পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যায়। তবে যুবরাও হাল ছাড়তে রাজি নয়। ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজ আবার সম্মিলতি প্রচেষ্টায় মেরামত করেন তারা। এ কাজ সম্পন্ন করে সংগঠনের সদস্যরা শুরু করে পূর্ব পাড়ার সাথে মধ্যম পাড়ার সংযোগ স্থাপনের আরেকটি বাঁশের ব্রীজ তৈরি করার কাজ। যুবরা আবারও একত্রিত হয়ে কাজে নেমে পড়েন। একদিনেই তারা তৈরি করে ফেলেন আরো একটি বাঁশের ব্রীজ। এই দুটি বাঁশের ব্রীজ তৈরি হওয়ায় চন্দ্রডিঙ্গা গ্রামের মানুষের যোগাযোগ খুই সহজ হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

বিনামূল্যে আমন মৌসুমে ধান রোপণ

করোনা ভাইরাসের ফলে এখন স্কুল কলেজ ছুটি। তাই যুবরা সবাই এখন বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাই গ্রামের মানুষদের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে উদ্যোগ নিলেন বিনামূল্যে আমন মৌসুমে ধানের চারা রোপণের। সবাই মিলে একসাথে নেমে পড়লেন ধানি জমিতে। কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে দিচ্ছেন, কেউ বা আবার জমিতে ধানের চারাগুলো কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন, আবার কেউবা ধানের চারা রোপণ করছেন। এভাবে এই যুবদের কর্মতৎপরতায় গ্রামের ১২ পরিবারের প্রায় ১০২৪ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপণ করা সম্পন্ন হয়েছে। এতে করে ১২ পরিবারের প্রায় ৪০ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে জানান সুবিমল ম্রং।

পাহাড়ি ঢলে ছড়ার বাঁধ সুরক্ষায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

পাহাড়ি ঢলে অনেক সময় ছড়ার পাড় ভেঙ্গে বসতবাড়িতে ও আবাদী জমিতে পানির সাথে বালি, পাথর ঢুকে পড়ে। এমন সমস্যা সমাধানে যুবরা এক সময় বাঁধ তৈরি করেছে। বাঁধের মধ্যে বিভিন্ন গাছগাছালিও রোপণ করা হয়েছিল। তারপরও পাহাড়ি ঢল আসলে বাঁধ ভেঙ্গে অনেক সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই বাঁধটি সুরক্ষার জন্য যুবদের উদ্যোগে ও বারসিকের সহায়তায় বৃক্ষরোপণ করা হয়। একদিকে বসতভিটা ও ফসলী জমি রক্ষায় বৃক্ষরোপণ করা হয়। অন্যদিকে চন্দ্রডিঙ্গা জিবিসি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ছড়ার পাড়ে অবস্থিত হওয়ায় স্কুলের জায়গাটি সুরক্ষার জন্য ছড়ার পাশে বৃক্ষরোপণ করা হয়। এভাবে মোট ১০০টি বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। যার ফলে বসতভিটা, ফসলি জমি ও স্কুলের জায়গা রক্ষা হবে বলে জানান স্থানীয়রা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন