মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র বলে দাবি করে নিজেকে প্রকাশ করতে চায় সুযোগ পেলে-ই। নানা কারণে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলোতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সংবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে চায়। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর বদৌলতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল ট্রাম্প নেটিজেনদের কাছে আলোচিত। সমালোচিত এবং বলতে গেলে অধিকাংশ সময়ে ডোনাল ট্রাম্প একটি ‘কৌতুলী’ নাম।
সম্প্রতি ডোনাল ট্রাম্প আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন। এবারের আলোচনায় তার চুল। খবরে প্রকাশ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাষায়, ‘তার ‘পারফেক্ট’ চুল চুল সুন্দর রাখতে আইনে পরিবর্তন এনেছেন।’
হোয়াইট হাউসের বাথরুমের ঝরনা দিয়ে ঠিকমতো পানি পড়ে না। আর সে কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চুল ভালো করে ধোয়া হয় না। সময়ও বেশি লাগে।
প্রেসিডেন্ট তাঁর পছন্দের ‘পারফেক্ট’ চুল পান না, যা তাঁর জন্য অতি আবশ্যিক! ট্রাম্প এ নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন বেশ কয়েক মাস থেকে। প্রেসিডেন্টের আপত্তির মুখে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঝরনার পানিতে গতি বাড়ানো হবে। আর এ জন্য পরিবর্তন আনতে হবে আইনে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি দপ্তর –(ডিওই) ১৩ আগষ্ট বুধবার জানায়, ঝরনায় পানির গতিধারাসংক্রান্ত আইনে সংশোধন আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ১৯৯২ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডাব্লিউ বুশের আমলে প্রণীত আইনে বলা হয়েছে, প্রতি মিনিটে ঝরনা দিয়ে সর্বোচ্চ আড়াই গ্যালন পানি পড়বে। সংশোধনের প্রস্তাবে এই চাপ বজায় রেখে একই নলে, কয়েকটি ঝরনা লাগানোর কথা বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পানি ঝরার পরিমাণ বেশ ভালোই বাড়বে।
জুলাই মাসে এ ব্যাপারে ট্রাম্পের অভিযোগের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় হোয়াইট হাউস। এতে ঝরনায় পানি কম পাওয়ার অভিযোগ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ঝরনা দিয়ে আপনি গোসল করবেন। কিন্তু এটা দিয়ে পানি-ই তো পড়ে না। হাত ধুতে যান, কল দিয়ে পানি পড়বে না। আপনি কী করবেন?
দাঁড়িয়ে থাকবেন—হয় ঝরনার নিচে, নয়তো কলের তলে হাত পেতে। আপনার গোসল করতে সময় বেশি লাগবে। আমি আপনাদের কথা জানি না। আমার ক্ষেত্রে বিষয়টি হচ্ছে, চুল অবশ্যই পারফেক্ট হতে হবে। একদম পারফেক্ট।’
বাথরুমের ফিটিংস এবং পানির চাপ নিয়ে ট্রাম্পের অবশ্য আরো অভিযোগ আছে। গত ডিসেম্বরেও এ নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘বাথরুমের বেসিন, ঝরনা বা অন্য জিনিসগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখুন। তাদের ঝরনা দিয়ে পানি পড়ে ফোঁটায় ফোঁটায়। কলের অবস্থাও একই। ফ্ল্যাশ করতে হয় ১০-১৫ বার। তার পরও বাড়তি পানি ঢালতে হয়।’
ট্রাম্পের এই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য এরই মধ্যে সোচ্চার হয়ে উঠেছে পরিবেশবাদী গ্রুপগুলো। জ্বালানি সংরক্ষণকারী গ্রুপ অ্যাপ্লায়েন্স স্ট্যান্ডার্ড অ্যাওয়ারনেস প্রজেক্টের অ্যান্ড্রু ডেলাসকি বলেন, ‘টয়লেট প্রসঙ্গে ট্রাম্প যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয়। এমন অভিযোগ আর কারো কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। তাঁর অভিযোগ মেটাতে গেলে পানির অপচয় ছাড়া আর কিছুই হবে না। জ্বালানিও পুড়বে বেশি। গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন বাড়বে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মতে, আইন সংশোধনের এই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত মামলা মোকদ্দমায় গিয়ে ঠেকতে পারে।