হিসাব শুরুর পর থেকে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দায় পড়েছে যুক্তরাজ্য। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর তুলনায় অনেক বেশি।
বুধবার যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (ওএনএস) জানিয়েছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমে গেছে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ। ১৯৫৫ সালে হিসাব শুরুর পর থেকে যুক্তরাজ্যে তিন মাসের ব্যবধানে জিডিপির এত বড় পতন আর কখনোই দেখা যায়নি।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে জিডিপি হ্রাসের পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ। এরপরেই করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় দেশব্যাপী লকডাউন জারি করে ব্রিটিশ সরকার। পরপর দু’টি প্রান্তিকে জিডিপি সংকুচিত হলে কোনও দেশে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে বলে ধরা হয়।
ওএনএস জানিয়েছে, এবার জি৭-ভুক্ত যেকোনও দেশের তুলনায় বড় অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে যুক্তরাজ্য। দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ, অর্থাৎ তাদের চেয়ে যুক্তরাজ্যের সংকোচন প্রায় দ্বিগুণ বেশি। অর্থনৈতিক সংকোচনের দিক থেকে ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালির চেয়েও এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাজ্য। জি৭-এর বাকি দুই সদস্য কানাডা ও জাপান এখনও দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্য প্রকাশ করেনি।
এবছর দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কমেছে রেকর্ড ১৯ দশমিক ৯ শতাংশ, নির্মাণ খাতে কমেছে ৩৫ শতাংশ, উৎপাদন খাতে কমেছে অন্তত ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ। লকডাউনের কারণে মানুষজন ঘরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় গৃহস্থালী ও ব্যবসায়িক খাতে ব্যয় কমেছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী রিশি সুনাক বলেছেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, কঠিন সময় সামনে। আজকের তথ্য নিশ্চিত করেছে, সেই কঠিন সময় এসে গেছে। ইতোমধ্যেই লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছেন এবং দুঃখজনকভাবে আগামী মাসগুলোতে আরও অনেকেই হারাবেন। তবে সামনে আরও কঠিন অবস্থা আসলেও আমরা এটি পার হয়ে যাবো। আমি জনগণকে আশ্বস্ত করতে পারি যে, কেউই আশা বা সুযোগহারা হবেন না।’
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান