৩১ জুলাই শুক্রবার যুক্তরাজ্যে মুসলমানরা পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করেছে। করোনা মহামারির কারণে এ বছর অনেক জায়গায় খোলা মাঠে ঈদের জামাত হয়নি। করোনা ভাইরাস মহামারির ঝুঁকির কারণে ঈদুল ফিতরেও কুনো মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। ঈদুল আযহায় পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল মসজিদে জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ পড়তে মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে।
ব্রিটেনে এবার লকডাউন শিথিল হওয়ায় ঈদুল আযহার নামাজে মুসলমানরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই মসজিদে ঈদের জামাতে আদায় করতে দেখা যায়। টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইল এন্ড স্টেডিয়ামে খোলা মাঠে এবার ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে টাওয়ার হ্যামলেটসের বাইরে নিউহামসহ ভিবিন্ন এলাকায় খোলা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সরকারের বেধে দেয়া নিয়মের কারনে টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রতিটি মসজিদে ঈদের জামাতের সংখ্যা এবং মুসল্লিদের সংখ্যা নির্ধারন করা হয়েছে সীমিত পরিসরে। টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রতিটি মসজিদেই স্বাস্থ্য বিধির ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরন করা হয়।
মসজিদে আগে আসলে আগে জায়গা পাবেন ভিত্তিতে আসন নির্ধারন করা হয়। কেউ নামাজের সুযোগ না পেলে তাকে রাস্তায় কিংবা দাঁড়িয়ে না থেকে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে প্রবেশের পূর্বে প্রায় প্রত্যক মুসল্লির তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া মুসল্লিদেরকে ঘরে ওজু পড়ে জায়নামাজ, জুতার ব্যাগ এবং মাস্ক সাথে নিয়ে এসেছেন কি না তা পরীক্ষা করে মসজিদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। স্বাস্থ্য বিধির আনুষাঙ্গিক ছাড়া কাউকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। একই সাথে ১২ বছরের কম বয়সি শিশু এবং ৭০ বছর বয়সের বৃদ্ধদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেয়নি মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ইস্ট লন্ডন মসজিদে এবার মোট ৪টি জামাত অনুষ্টিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম জামাত, সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল সাড়ে ৯টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল সাড়ে ১০টায় চতুর্থ ও শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতে প্রায় ৬ শত মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে ইস্ট লন্ডন মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
এছাড়াও ব্রিকলেন মসজিদে মোট ৪টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টায় প্রথম জামাত, সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল ১০টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল ১১টায় চতুর্থ ও শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে ব্রিকলেন মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
স্টেপনি রেডকোট মসজিদ ও কমিউনিটি সেন্টার এন্ড মস্কে ৫টি জামাত অনুষ্টিত হয়। যথাক্রমে সকাল ৭টায় প্রথম জামাত, সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে দ্বিতীয় জামাত, সকাল সাড়ে ৮টায় তৃতীয় ও সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে চর্তুথ ও শেষ জামাত সকল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় বলে রেডকোট মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
ডেগেনহ্যাম মদীনা মসজিদে সকাল ৭টা প্রথম জামাত, সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল ১০টায় চতুর্থ ও সকাল ১১টায় শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতে প্রায় ৬০ জন মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে ডেগেনহ্যাম মদীনা মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান। তবে এক্ষেত্রে মসল্লিরা যারা ঈদের নামাজ আদায় করেছেন তাদেরকে আগে ফোন করে বুকিং করতে হয়েছে।
পপলার হাইন্ডগ্রভ মসজিদে মোট ৩টি জামাত অনুষ্টিত হয়েছে। যথাক্রমে সকাল ৮টায় প্রথম জামাত, সকাল ৯টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল ১০টায় তৃতীয় ও শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে পলার হাইন্ডগ্রভ মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
বেথনালগ্রীনস্থ বায়তুল আমান মসজিদে মোট ৪টি জামাত অনুষ্টিত হয়। সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম জামাত, সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল সাড়ে ৯টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল সাড়ে ১০টায় চতুর্থ ও শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতে প্রায় ৬শত মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে বায়তুল আমান মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
ফোর্ডস্কয়ার জামে মসজিদে ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৬টা প্রথম জামাত, সকাল সাড়ে ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল সাড়ে ৯টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল সাড়ে ১০টায় চতুর্থ ও সকাল সাড়ে ১১টায় শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি জামাতে প্রায় ৪৫০ জন মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে ফোর্ডস্কয়ার মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
হ্যাকনি রোড শাহপরান জামে মসিজদে সকাল ৭টায় প্রথম জামাত, সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত, সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাত ও সকাল ১০টায় চতুর্থ ও সকাল ১১টায় শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয় বলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান। ৫টি জামাতে প্রায় ১ হাজার মুসল্লির নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে শাহপরান জামে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানান।
নর্থ ওয়েষ্ট ইংল্যান্ডের ম্যানচেষ্টার ওল্ডহ্যামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ পড়েছেন শত সহস্র মুসল্লরিা। ম্যানচেষ্টারের শাহাজালাল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার , শাহপরান মসজিদ সহ ওল্ডহ্যামের বিভিন্ন মসজিদেও ঈদের জামাত পড়েছেন বাংলাদেশ-পাকিস্থান এবং মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা।সবকটা মসজিদেই অন্তত ৪টি করে জামাত অনুস্ঠিত হয়েছে।
এদিকে নর্থ ইংল্যান্ডের কিছু কিছু জায়গায় সরকারি বিধি নিষেধের কারনে মসজিদে নামাজ পড়া থেকে বিরত ছিলেন মুসল্লিরা। এসব এলাকায় ঈদের নামাজ পড়তে না পেরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেনে মুসল্লিরা৷ ঈদের নামাজ হীন ঈদ তাদের খুশির ঈদে কষ্টের কারণ ছিল।