ফের টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এরই মধ্যে সিলেট জেলার চারটি এলাকায় সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে প্লাবিত হয়েছে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও সদর উপজেলাসহ সিলেটের নিম্নাঞ্চল।
তবে গতরাতে সিলেটে বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও উজানে বৃষ্টির কারণে সবগুলো নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। যে কারণে অন্যান্য এলাকার সাথে সিলেট নগরীর তালতলা, সোবহানিঘাট, মেন্দিভাগ, উপশহর, যতরপুর, সবুজভাগ, ঘাসিটুলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি উঠে গেছে।
আবহাওয়া অফিসের দেয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ৯ সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি প্রায় সবকটি পয়েন্টেই বেড়েছে। এর মধ্যে সকাল ৯ টায় কানাইঘাটে সুরমার পানি ছিল বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার উপরে। দুপুর ১২ টায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭ সেন্টিমিটার। সুরমার সিলেট পয়েন্টে সকাল ৯ টায় পানি ছিল বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপরে। দুপুর ১২ টায় তা এক পয়েন্ট কমে এসেছে ৮ সেন্টিমিটারে। ফেঞ্চুগঞ্জে সকাল ৯ টায় কুশিয়ারার পানি ছিল বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার উপরে। দুপুর ১২ টায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ সেন্টিমিটারে। জৈন্তাপুরের সারিঘাটে ৯ টায় পানি ছিল বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপরে। দুপুর ১২ টায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ সেন্টিমিটারে। এছাড়া সিলেটে ৪টি পয়েন্টেও পানি বেড়েছে।
এদিকে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে ক্ষেতের ফসল, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর। ফলে বন্যাকবলিত এলাকার লাখো মানুষ এখন দিশেহারা। এর মাঝে বৃষ্টি নিয়ে কোনো স্বস্তির খবরও নেই আবহাওয়া অফিসের কাছে।
সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান- সিলেটে টানা বৃষ্টি হবে আরও সপ্তাহ দশদিন পর্যন্ত। তবে পরিমাণ কিছুটা কমবে। মূলত উজানের বৃষ্টিই সিলেটে বেশি প্রভাব ফেলছে বলে তিনি জানান।
আর পূর্বাভাস অনুযায়ী উজানের বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফের ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুজ্জামান সরকার জানান- মাঝে মাঝে দু’একটা পয়েন্টে বন্যার পানি কিছুটা কমলেও বেশিরভাগ পয়েন্টে পানি বাড়ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এভাবে উজানের বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ফের ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।