মরুর বুকে প্রাণের সঞ্চার হওয়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শৃঙ্খলিত দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। তিলে তিলে বেড়ে উঠা অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রের মিলনমেলা এই আরব দেশটি। শুধু অর্থনৈতিকভাবেই সমৃদ্ধ হয়ে থেমে থাকেনি দেশটি । পর্যটন শিল্পেও দেশটি সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে । এদেশের আইন শৃঙ্খলা ও আইনের যথাযত প্রয়োগ এর ফলে দেশটিতে অপরাধের পরিমান অতি নগন্য (নেই বললেই চলে)। যার ফলে বিশ্বের ভ্রমণ প্রিয় পর্যটকদের সর্বোচ্চ পছন্দের তালিকায় এখন সংযুক্ত আরব আমিরাত | পর্যটক সহ এখানকার সকল নাগরিক ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমিরাত সরকার সর্বদা অপরাধের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করে আসছে।
এর স্বীকৃতি সরূপ আন্তর্জাতিক অপরাধ সূচক অনুযায়ী সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি শহর নিয়ে বিশ্বে শীর্ষ দশটি নিরাপদ শহরের তালিকায় নাম উঠিয়ে বিরল উদাহরণ সৃষ্টি করা একমাত্র দেশ। Crowd-sourced global data ওয়েবসাইট NUMBEO এর বিশ্বজুড়ে করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৪০০ (চারশত ) শহরের মধ্যে আবুধাবি , দুবাই এবং শারজাহ মর্যাদাপূর্ণভাবে যথাক্রমে দ্বিতীয় ,ষষ্ঠ ও সপ্তম অবস্থান অর্জন করে ।
এছাড়াও ২৪ টি সূচকে জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় বিশ্বে সবচেয়ে নিরাপদ দেশগুলির মধ্যে দেশ হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ৩য় স্থানে রয়েছে । অন্যান্য নিরাপদ দেশগুলি হলো থাইওয়ান ,জর্জিয়া, ওমান , হংকং , স্লোভেনিয়া Isle of Man, সুইজারল্যান্ড এবং জাপান | NUMBEO এর নিরাপত্তা সূচক অনুযায়ী আবুধাবির স্কোর হলো ৮৮۔৪৪ ,দুবাই এর স্কোর ৮৩۔ ০১ এবং শারজাহ এর স্কোর ৮২۔৭১।অপরাধ সূচকে আবুধাবি ১১ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর করে। যথাক্রমে দুবাই ১৬ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট এবং শারজাহ ১৭۔২০ পয়েন্ট স্কোর করে। অপরাধ সূচকের এই জরিপটির আওতায় ৩৯৬ টি শহরকে আনা হয়।
শীর্ষ দশ নিরাপদ শহরের তালিকায় আরও রয়েছে তাইপেই, কুইবেক,জুরিখ , মিউনিখ এবং এসকেসেহির (তুরস্ক )।
জরিপ অনুযায়ী ৮৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক শহর হলো কারাকাস (ভেনিজুয়েলা )।
অপরাধ সূচকটি কোনও প্রদত্ত শহর বা একটি দেশের সামগ্রিক স্তরের অপরাধের অনুমান। NUMBEO অনুসারে ,অপরাধের মাত্রা ২০ এর চেয়ে কম হলে অতি নিম্ন ,২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে নিম্ন ,৪০ থেকে ৬০ এর মধ্যে হলে মাঝারি,৬০থেকে ৮০ এর মধ্যে হলে বেশি এবং শেষ পর্যন্ত অপরাধের মাত্রা ৮০ এরও বেশি হলে সর্বোচ্চ হিসাবে ধরা হয়। অন্যদিকে, সুরক্ষা সূচকটি ক্রাইম সূচকের বিপরীত।
বিশেষজ্ঞদের মত অনুসারে, এই অর্জন আরব আমিরাতকে বিশ্বের বুকে অন্যতম নিরাপদ পুঁজি বিনিয়োগ ও ব্যবসার আবাস্থল হিসেবে পরিচিত হলো। যার ফলে আন্তর্জাতিভাবে দেশটির ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।